গত ৮ই আগষ্ট আমরা বাঙালীর পক্ষ থেকে কলকাতার যাদবপুর এলাকায় গোর্র্খল্যান্ডের নামে বাংলাভাগের চক্রান্তের প্রতিবাদে এক মিছিল বেরোয়৷ আমরা বাঙালীর প্রায় দুই শতাধিক কর্মী-সমর্থক গোর্র্খল্যান্ড বিরোধী ও গুরুং বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে পুরো যাদবপুর এলাকা পরিক্রমা করে৷ শেষে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেটের সামনে আমরা বাঙালীর পক্ষ থেকে এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়৷ এই পথসভায় বক্তব্য রাখেন আমরা বাঙালীর কেন্দ্রীয় সচিব বকুলচন্দ্র রায়, সহ সচিব তারাপদ বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় আন্দোলন সচিব বিকাশ বিশ্বাস,মুর্শিদাবাদ জেলাসচিব স্বপন মন্ডল, আমরা বাঙালীর কলকাতা জেলাসচিব সুনীল চক্রবর্তী, আমরা বাঙালীর নেতা জয়ন্তদাস ও উজ্বল ঘোষ প্রমুখ৷
বকুলচন্দ্র রায় তাঁর বক্তব্যে বলেন, দার্জিলিং বাঙলার অবিচ্ছেদ্য অংশ৷ দার্জিলিংয়ের মূল অধিবাসী লেপ্চা ভূটিয়ারা কোচ জাতিভুক্ত৷ এই কোচেরা আদি বাঙালী৷ অপর পক্ষে গোর্র্খরা নেপালের অধিবাসী জীবিকার সন্ধানে ওরা দার্জিলিংয়ে এসেছে৷ ওরা স্থানীয় মানুষদের ন্যায্য দাবীকে অস্বীকার করে গায়ের জোরে দার্জিলিংকে বাঙলা থেকে পৃথক করে ‘গোর্র্খল্যান্ড’ রাজ্যের দাবী কোনোমতেই করতে পারে না৷ ওদের দাবীর পেছনে কোনো যুক্তি নেই৷ আমরা বাঙালীর সহসচিব তারাপদ বিশ্বাস বলেন, ১৯৫০ সালে ভারত নেপাল চুক্তি অনুসারে নেপালীরা ভারতে জীবিকা অর্জন করার জন্যে ভারতে আসতে বা থাকতে পারবে, কিন্তু এখানকার নাগরিকত্ব পাবে না৷ নাগরিকত্ব পাবারই যখন অধিকারী নেই, তখন ওরা কী করে বাঙলায় এসে জীবিকা অর্জনের সুযোগ নিয়ে বাঙলার বুকে ছুরি চালাতে চায়? এটা তো ভয়ংকর বিশ্বাসঘাতকতা! কেন্দ্রীয় সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ওদের ভোট হাতানোর লক্ষ্যে ওদের তোষামুদি করে মাথায় তুলেছে ও ওদের অযৌক্তিক দাবীকে বিভিন্নভাবে সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছে৷ এখন সমস্ত বাঙালীদের উচিত বাঙলার অখন্ডতা রক্ষার জন্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘গোর্র্খল্যান্ড’ আন্দোলনের নামে আবার বাঙলা ভাঙ্গার চক্রান্তকে রুখে দেওয়া৷
জয়ন্ত দাস তাঁর বক্তব্যে বলেন, গোর্র্খল্যান্ড আন্দোলনের পেছনে রয়েছে চীন ও নেপালের মাওবাদীরা৷ গোর্র্খল্যাণ্ডের নামে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে এখনই যদি কঠোর হস্তে দমন না করা হয়, তাহলে ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে৷
সমগ্র ভারতের সার্বভৌমত্বের স্বার্থে মদন তামাং হত্যায় অভিযুক্ত ও সরকারী সম্পত্তি ধবংসকারী বিমল গুরুং ও তার সমর্থকদের অবিলম্বে গ্রেফ্তার করার দাবী আমরা বাঙালী রাখছে বলে তিনি জানান৷
প্রসঙ্গত বলতে হয় গত কয়েকদিন আগে গোর্র্খল্যাণ্ডের সমর্থনকারী একদল ছাত্রযুবক যাদবপুর বাসষ্ট্যান্ড থেকে একটি মিছিল বার করে গোর্র্খল্যাণ্ডের দাবী জানায়, এরই প্রতিবাদে এদিন আমরা বাঙালীর কর্মী ও সমর্থকরা ‘দেশদ্রোহী’ গোর্র্খ সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ‘ধিক্.....ধিক্... ধিক্কার’ লেখা ব্যানার মিছিলের সম্মুখে রেখে যাদবপুর বিশ্ব বিদ্যালয়ের সামনে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন৷