সম্পাদকীয়

মনুবাদে আক্রান্ত বঙ্গ রাজনীতি!

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

বঙ্গ রাজনীতিতে মুখোশের আড়ালের মুখগুলো ক্রমশ বেরিয়ে আসছে৷ হতাশা গ্রাস করেছে এক শ্রেণীর নেতাদের৷ কারণে অকারণে মেজাজ হারাচ্ছে৷ হাব-ভাব - বাচন - ভঙ্গীমায় - ভাষায় শালীনতা বজায় থাকছে না৷ আসলে কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধর্মমতকে হাতিয়ার করে উত্তর পশ্চিম ভারতে যে সাফল্য পেয়েছে কেন্দ্রের শাসকদল তার বঙ্গীয় অনুগামীরা সেই পথেই বঙ্গ জয়ের স্বপ্ণ দেখছে৷ কিন্তু বাঙলার সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য ও সর্র্বেপরি এক মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক বিচক্ষনতার কাছে বার বার পরাজিত হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারাচ্ছে৷ তবে শুধু ধর্মীয় কারন নয়, বর্তমান রাজনীতি ব্যষ্টিস্বার্থ ও স্বজন পোষণ রোগে আক্রান্ত৷ তাই ব্যষ্টিস্বার্থ সিদ্ধিই যখন রাজনীতির

গণতন্ত্রই রাষ্ট্র পরিচালনার শেষ কথা নয়

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

বর্তমান পৃথিবীতে যত প্রকার রাষ্ট্রপরিচালনার ব্যবস্থা আছে গণতন্ত্র তার মধ্যে ভালো, কিন্তু গণতন্ত্রকে একেবারে ত্রুটিমুক্ত বলা যায় না৷ তবে গণতন্ত্র মধ্যে মন্দের ভালো৷

বিশ্বের সকল মানুষের ধর্ম এক

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

বর্তমানে ধর্মের নামে নানান ধরণের গোঁড়ামী, জাত–পাতের ভেদ ও সাম্প্রদায়িক বিভেদ ও বিদ্বেষ চলছে৷ অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কারের জালে জড়িয়ে আঁতুড় ঘর থেকে শশ্মানঘাট পর্যন্ত শোষনের জাল বোনা হয়েছে৷ অপ্রয়োজনীয় সামাজিক আচরণের বোঝাকে ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলে বলা হচ্ছে৷ অন্ধবিশ্বাস আর ভাবজড়তায় আচ্ছন্ন মানুষ কতটা বিবেকহীন অমানবিক হতে পারে তথাকথিত মহাকুম্ভে তা দেখালো অন্ধবিশ্বাসে আচ্ছন্ন মানুষ৷

এক দেশ এক নির্বাচন--- যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় সংহতির পরিপন্থী

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

দেশের বর্তমান সরকারের সবকিছুকে এক করে দেওয়ার একটা প্রবণতা আছে৷ এক ভাষা, এক দেশ, এক ধর্মমত এই প্রবণতার শেষ সংযোজন এক দেশ এক নির্বাচন৷ এটা বাস্তবায়িত করতে সরকার অনেক বেশী দৃঢ়৷ যদিও সংসদে একক গরিষ্ঠতা না থাকায় সরকারকে থমকে দাঁড়াতে হয়েছে৷ কারণ সরকার চালাতে শরীক দলের মন রক্ষা করেও চলতে হবে৷ এক দেশ এক নির্বাচন--- জোট সরকারের বৃহত্তম শরীকের এই মনভারের সঙ্গে সব শরীক এক নাও হতে পারে৷

অন্ধ আবেগ ও ফ্যাসিষ্ট শোষক

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

অমৃতলাভের আশায় অন্ধ আবেগে ছুটছে উদ্‌ভ্রান্ত মানুষ মরছে পদপিষ্ট হয়ে৷ মহাকুম্ভে অমৃতলাভের আশায় জনস্রোত নয়াদিল্লি রেলস্টেশন থেকে প্রয়াগরাজ৷ ধর্মের নামে ব্যবসায় মত্ত উত্তরপ্রদেশ সরকার, কেন্দ্র সরকারের সেদিকে দৃষ্টি নেই৷ সরকারের লক্ষ্য সেই সব কোটিপতিদের দিকে৷ তাদের জন্যে লাখো টাকার তাঁবুরের আসা যাওয়ার ভি.আই.পি ব্যবস্থা৷ আর পদপিষ্ট হয়ে যারা অকালে ঝরে গেল তাদের প্রকৃত হিসাব কি সরকারের কাছে আছে৷ তাদের হিসাবকে আর রাখে! যদিও সরকারী হিসেবে মহাকুম্ভের বলি ৫৫ জন৷ কিন্তু সরকারী তথ্য বিশ্বাস করে ক’জন!

ধর্মান্ধ মৌলবাদের হাতে আক্রান্ত ইতিহাস

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

ভাষা শহীদদের রক্তে ভেজা পবিত্র মাটিতে আজ ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের বীভৎস উল্লাস৷ ভুলিয়ে দিতে চাইছে বাঙালীর গর্বের ইতিহাস৷ পেঁচা যেমন সূর্যের আলো সহ্য করতে পারে না, তেমনি মানব সমাজেও আছে কিছু দ্বিপদ জীব শোষক রূপে, ধর্মান্ধের বেশে যাদের কালো হাত আজ সমাজের সর্বস্তরে বিস্তৃত৷ সেই কালো হাতের স্পর্শ বিষে জর্জরিত বাঙলার শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি, ধর্মনীতি৷

ভাবজড়তা, অন্ধবিশ্বাসে আবদ্ধ জীবনের পরিণতি

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

মহাকুম্ভের মর্মান্তিক পরিণতি৷ অমৃত লাভের আশায় তথাকথিত ধর্মীয় উন্মাদনার পরিণতিতে কতকগুলো জীবন অসময়ে ঝরে গেল৷ অন্ধবিশ্বাস ও ভাবজড়তায় আচ্ছন্ন জীবনের শেষ পরিণতি কি এভাবেই হয়! আমরা উচ্চকন্ঠে ডিজিটাল ভারতের কথা বলি৷ আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে মানুষকে একাত্ম করে তুলতে কত আবেদন নিবেদন, কত বিজ্ঞাপনের বহর৷

পাশাপাশি গোবর গোমুত্র পান থেকে শুরু করে নানা বাস্তব বর্জিত শাস্ত্রীয় বিধান শুনিয়ে মানুষকে তথাকথিত ধর্মমতের হুজুগে মাতিয়ে রাখাও কি ডিজিটাল ভারতের প্রগতি? কোন অমৃতের সন্ধানে মানুষকে মাতিয়ে দিশাহীনভাবে দৌড় করিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়!

কংগ্রেসের নিশানায় আঞ্চলিক দলগুলি

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

বাংলায় একটি প্রবাদ আছে---‘নামে তালপুকুর ঘটি ডোবে না৷’ কংগ্রেসের অবস্থাও আজ নামে তালপুকুরের মতো৷ কিন্তু মুস্কিল হলো কংগ্রেসের জাতীয়স্তরের নেতারা সেকথা বুঝতেও চায় না, মানতেও চায় না৷ স্বাধীনতার পর ভারতবর্ষে ছিল একচেটিয়া কংগ্রেসের শাসন, রাজ্যে রাজ্যেও ছিল ডবল ইঞ্জিন সরকার৷ কালের অমোঘ নিয়মে কংগ্রেসের সেই স্বর্ণযুগ আজ অস্তাচলে৷ দু-দফা একক গোরিষ্ঠতায় দেশ শাসন করে বিজেপি তৃতীয়বার একক গোরিষ্ঠতা না পেয়ে শরিকদের নিয়ে জোট সরকার চালাচ্ছে৷ কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট ৯টি রাজ্যে শাসন ক্ষমতায়, বাকী রাজ্যগুলি বিজেপি নেতৃত্বাধীন এন.ডি.এ জোটের শাসন৷ বর্তমানে বিরোধী জোটের শাসনে যে ৯টি রাজ্য, তার মধ্যে কংগ্

শুচিত্ব কি কেবল বিচার সর্বস্ব!

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আর জি কর কাণ্ডের বিচারের একটা পর্ব শেষ৷ এরপর উচ্চ আদালত আছে, শীর্ষ আদালত আছে৷ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জঘন্যতম অপরাধীরও ন্যায়বিচার চাওয়ার পাওয়ার অধিকার আছে৷ আরজিকরের অপরাধীরও সে অধিকার আছে৷ তাই নিম্ন আদালতের একটা রায় ঘোষণায় বিচার শেষ হয় না৷ বিচার চলবে, চলতে থাকুক৷

কিন্তু একটা মানবিক প্রশ্ণ যেটা সবাই এড়িয়ে যাচ্ছেন অথবা প্রশ্ণটার কথা ভাবার প্রয়োজনই মনে করেননি৷ এই নয় যে আরজিকরের জঘন্য ঘটনা সমাজে প্রথম ঘটলো৷ মাননীয় বিচারকও রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বলেছেন---আর জি করের ঘটনা বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়৷

অধরা স্বপ্ণ বিকৃত ভাবনা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িক ও ভৌগোলিক বিভাজনের পর ভারতীয় উপমহাদেশে নতুন উৎপাত---স্বাধীনতার বিভাজন৷ ভাগবতের প্রথম কথাটির মধ্যে কিছু সারবত্তা আছে৷ ১৯৪৭ সালে ভারতবাসী রাজনৈতিক স্বাধীনতাই পেয়েছে৷ কিন্তু সামাজিক অর্থনৈতিক দিকে নতুন করে শোষণ ও অবদমনের শিকার হয়েছে৷ এই শোষণ ও অবদমনের খলনায়করাই ভাগবতদের আর্থিক গুরু৷ তাই ভুলেও কোনদিন ভাগবতরা জনগণের আর্থিক মুক্তির কথা বলেননি৷ তবে ১৯৪৭ সালের রাজনৈতিক স্বাধীনতাকে তিনি অস্বীকার করেননি৷ অত্যন্ত সচেতন ভাবে ভাগবত রাজনৈতিক স্বাধীনতার কথা স্বীকার করেছেন৷ এই রাজনৈতিক স্বাধীনতার জোরেই ভাগবত সাম্প্রদায়িক স্বাধীনতার কথা ঘোষণা করেছেন৷