সংবাদ দর্পণ

দহনজ্বালা থেকে স্বস্তি দিতে বর্ষা ঢুকছে রাজ্যে

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

আগামী শনিবারের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের কিছু অংশে বর্ষা ঢুকবে বলে আশা করছেন আবহাওয়াবিদরা৷ তবে তখনও বর্ষা দুর্বল থাকবে৷ আপাতত কিছুদিন দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে ভারী বৃষ্টির কোনও আশা নেই৷ তবে বৃষ্টির মাত্রা আজ মঙ্গলবার থেকে কিছুটা বাড়তে পারে৷ কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর সোমবার যে পূর্বাভাস জারি করেছে সেখানে চারদিনের মধ্যে উত্তরবঙ্গের বাকি অংশে ও দক্ষিণবঙ্গের কিছু অংশে মৌসুমি বায়ু ঢোকার কথা বলা হয়েছে৷ উত্তরবঙ্গের হিমালয় সংলগ্ণ পাঁচ জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি শুক্রবার পর্যন্ত চলবে বলে আপাতত জানানো হয়েছে৷

বর্ষা না এলেও আগামী কয়েকদিন দক্ষিণবঙ্গে বজ্রগর্ভ মেঘ সঞ্চার হয়ে বৃষ্টির মাত্রা বাড়বে বলে আবহাওয়াবিদরা আশা করছেন৷ এতে গরম সামান্য কমে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে৷ দক্ষিণবঙ্গ বা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জন্য আজ মঙ্গলবার থেকে আগামী রবিবার পর্যন্ত ‘ফেয়ারলি ওয়াইড স্প্রেড’ বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর৷ অনেক জায়গায় (৫১ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত) বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলে এটা বলা হয়৷ উত্তরবঙ্গের জন্য ‘ওই সময়ে ‘ওয়াইড স্প্রেড’ বৃষ্টির পূর্বাভাসই থাকছে৷ অধিকাংশ জায়গায় (৭৬ থেকে ১০০ শতাংশ) বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলে এই পূর্বাভাস জারি করে আবহাওয়া দপ্তর৷

আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাস জানিয়েছেন, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর বা দক্ষিণবঙ্গ সংলগ্ণ কোনও জায়গায় নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার কোনও সম্ভাবনা আপাতত নেই৷ সেরকম কিছু হলে সক্রিয় বর্ষা প্রবেশ করত দক্ষিণবঙ্গে৷ কিন্তু যে বর্ষা শুক্র-শনিবারের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে সম্ভবত প্রবেশ করতে চলেছে তা দুর্বলই হবে৷ তাই দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে ভারী বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা আপাতত নেই৷

আষাঢ় মাস পড়ে গেলেও দক্ষিণবঙ্গে এখনও বর্ষা না আসায় সাধারণ মানুষও কিছুটা উদ্বিগ্ণ হয়ে পড়েছেন৷ বর্ষা কবে এসে প্রচণ্ড গরম থেকে স্বস্তি দেবে তা সবাই জানতে চাইছেন৷ আবহাওয়াবিদরা অবশ্য দেরিতে বর্ষা আসার মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখতে পাচ্ছেন না৷

আবহাওয়া অধিকর্তা জানিয়েছেন, অতীতে ২৫ জুন বা তার পরেও দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আসার নজির আছে৷ গতবছরও ২০ জুনের পর বর্ষা এসেছিল৷ উত্তর ভারতের দিক থেকে প্রবাহিত পশ্চিমী উষ্ণ ও শুষ্ক গরম হাওয়া বিহার, ঝাড়খণ্ড হয়ে দক্ষিণবঙ্গে ঢুকছে৷ মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করলে এই পশ্চিমী হাওয়া আসতে বাধা পাবে৷ তাতে দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা কমবে৷ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলির জন্য তাপপ্রবাহের কোনও সতর্কতা আর দেওয়া হয়নি৷ তবে পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া প্রভৃতি জেলায় অস্বস্তিকর গরম আজও থাকবে৷ আগামী কয়েকদিন এই ধরনের গরমের কোনও পূর্বাভাস দক্ষিণবঙ্গের কোনও জায়গার জন্য দেওয়া হয়নি৷ তবে বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকার জন্য ভ্যাপসা গরম চলবে দক্ষিণবঙ্গে৷

দেশে কর্মসংস্থানের বেহাল দশা

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রেও নতুন কর্মপ্রার্থীদের নিয়োগও ধাক্কা খেয়েছে৷ তলানিতে নেমেছে ফ্রেশার্স নিয়োগ৷ একটি সংস্থার সমীক্ষায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে৷ এইচআর সংস্থা এক্সফেনোর তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ভারতের সফটওয়্যার সংক্রান্ত সংস্থাগুলি মাত্র ৬০ থেকে ৭০ হাজার ‘ফ্রেশার্স’ নিয়োগ করেছে৷ যা গত দু’দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম৷ বিশ্বজুড়ে আর্থিক বৃদ্ধি শ্লথ হওয়ার প্রভাব ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে পড়েছে বলে জানানো হয়েছে৷ করোনা মহামারীর আগে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে প্রত্যেক বছর ২ লক্ষের কাছাকাছি ফ্রেশার্স নিয়োগ করা হত৷ কিন্তু সেই সংখ্যা এখন নিম্নমুখী৷ গত আর্থিক বছরে দেশের প্রথমসারির পাঁচটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাই কম নিয়োগ করেছে৷ একমাত্র টিসিএস ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে ৪০ হাজার ফ্রেশার্স নিয়োগ করেছিল৷ এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও শান্তনু রুজের বক্তব্য, ‘সকলেই প্রথম পাঁচে থাকা সংস্থাগুলিতে নিজেদের কেরিয়ার শুরু করতে চায়৷ কিন্তু এই সংস্থাগুলি নিয়োগ করছে না৷ প্রত্যেকের কাছেই বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং৷’

তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি নিয়োগ কমিয়ে দেওয়ায় সমস্যায় পড়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিও৷ একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লেসমেন্ট সেলের ডেপুটি ডিরেক্টর অঞ্জনি ভাটনগরের বক্তব্য, ‘প্রত্যেক বছর এই সময় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি জানিয়ে দেয়, পরের বছরের জন্য কতজনকে তারা নিয়োগ করবে৷ আগস্ট মাসের মধ্যে সংস্থাগুলি ক্যাম্পাসে প্লেসমেন্ট শুরু করে দেয়৷ কিন্তু গত বছরের মতো এই বছরও একই পরিস্থিতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি৷’ টিসিএসের পাশাপাশি ইনফোসিস বা উইপ্রোর মতো সেরা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি মার্চ, এপ্রিল থেকে প্লেসমেন্টের প্রস্তুতি শুরু করে দেয়৷ কিন্তু এই বছর এখনও পর্যন্ত তারা কোনও উদ্যোগ নেয়নি৷ ভাটনগর জানান, তাঁদের ৭০ শতাংশ পড়ুয়াই তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে চাকরি খোঁজে৷ কিন্তু এভাবে চললে তাদের সমস্যায় পড়তে হবে৷ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের অধিকার সংক্রান্ত সংগঠন ন্যাসেন্টস ইনফরমেশন টেকনলজি এমপ্লয়িজ সেনেট বা এনআইটিইএসের সভাপতি হরপ্রীত সিং সালুজা জানিয়েছেন, গত দু’বছর ধরে ১০ হাজারের বেশি ফ্রেশার্স মূল চাকরি পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে৷ দু’হাজারকে ফ্রেশার্সকে চাকরি না দেওয়ার জন্য ইনফোসিসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদনও জানিয়েছে এনআইটিইএস৷ তবে তথ্যপ্রযুক্তি মহলের আশা, চলতি আর্থিক বছরে সংস্থাগুলি ফের ফ্রেশার্স নিেেয়াগের সংখ্যা বাড়াবে৷ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সংস্থা ফ্রেশার্স নিয়োগের যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে, তাতে আশার আলো দেখা যাচ্ছে৷ তবে শীর্ষ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি কম নিয়োগ করার ফলে সুবিধা হয়েছে বিভিন্ন স্টার্ট আপ সংস্থার৷ একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসেব, স্টার্ট আপে নিয়োগের পরিমাণ গত আর্থিক বছরে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে৷

একটি গাছ একটি প্রাণ এটিই মানেন কলকাতার সত্যবাবু ওরফে ‘গাছকাকু’

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

তিনি একাই পারলে কলকাতাটাকে সবুজে মুড়ে ফেলতে পারতেন৷ পারেননি কারণ, গত ৩২ বছর ধরে তিনি যত গাছ লাগিয়েছেন অন্যরা তার থেকে কেটেছে অনেক বেশি৷ ফলে কলকাতা যেমন ধূসর ছিল তেমনই রয়ে গিয়েছে৷ তবে সত্যরঞ্জন দোলুই অক্লান্ত৷ পরিশ্রমী৷ স্বপ্ণ দেখা ছাড়েন না৷ ফলে এখনও যেখানে ফাঁকা জমির খোঁজ পান সেখানে গিয়ে গাছ লাগিয়ে আসেন৷ কোথাও গাছ কাটা হচ্ছে খবর পেলে ছুটেও যান৷ সাধ্যমতো প্রতিবাদ করেন৷ দেখতে দেখতে এভাবে কেটে গেল জীবনের ৫৪টা বর্ষা৷ বর্ষণকালে সত্যরঞ্জনের কাজ বাড়ে৷ তখন গাছ বসালে সেগুলি শুকিয়ে যায় না৷

ব্রেজিলের তথ্যচিত্র নির্মাতা সেবাস্টিয়াও সালগাদো ও তাঁর স্ত্রী মেলিয়া ডেলউইজ ওয়ানিক সালগাদো প্রায় কুড়ি বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে ৩২ কোটি একর জমিতে তৈরি করে ফেলেছেন আস্ত একটি অরণ্য৷ তাঁর কথা গোটা বিশ্ব এখন জানে৷ বা এ দেশের অসমের যাদব পায়েং৷ ভালোবেসে গড়ে ফেলেছেন ১৩৬০ একরজোড়া একটি বন৷ তাঁকে ‘ফরেস্ট ম্যান অফ ইন্ডিয়া’ বলা হয়৷ কিংবা উত্তর প্রদেশের রাম যাদব৷ তিনি একা হাতে ৪০ হাজার গাছ লাগিয়ে একটি জঙ্গল তৈরি করেছেন৷ তিনি গাছে দেবেন বলে দূর গ্রাম থেকে কাঁধে করে বয়ে জল আনতেন৷ সত্যরঞ্জন জায়গার অভাবে এঁদের মতো অরণ্য বানাতে পারেননি৷ পেলে বানিয়ে ফেলতেন৷ তবে তাঁকে যাঁরা চেনেন তাঁরা তাঁকে ‘গাছ কাকু’ নামে ডাকেন৷ শ্যামবাজার, বাগবাজার, হাতিবাগান, কুমোরটুলি ইত্যাদি এলাকায় তিনি এই নামেই বিখ্যাত৷

বাগবাজারের কাছে গ্যালিফ স্ট্রিটের হাট৷ সেখান থেকে প্রতি রবিবার নানা ধরনের গাছগাছালি, সার ইত্যাদি কেনেন সত্যরঞ্জনবাবু৷ বাড়িতে টবে বসান৷ একটু শক্তসমর্থ হলে সে গাছ পুরসভার কোনও পার্কে, বা রাস্তার ধারে ফাঁকা জায়গায় বা কোনও স্কুলের মাঠে বসিয়ে দিয়ে আসেন৷নিয়মিত তাতে জল দিতে যান৷ রক্ষণাবেক্ষণ করেন৷ একটি ছোটখাট কাজ করে পেট চালান৷ রোজগারের টাকার অধিকাংশ যায় গাছের পিছনে৷ ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ঘুম থেকে ওঠেন৷ তারপর ঘুরে ঘুরে গাছপালা রক্ষণাবেক্ষণের কাজে লেগে পড়েন৷

রাজা রাজবল্লভ স্ট্রিটের বাসিন্দা বুদ্ধদেব বক্সি জানালেন, ছাত্র-ছাত্রীদের প্রজেক্টের কাজে রকমারি গাছের পাতার প্রয়োজন হয়৷ তখনই খোঁজ পড়ে সত্যবাবুর৷ তিনি সেই পাতা সংগহ করে আমাদের দেন৷ মদনমোহন তলা স্ট্রিটের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা দাস জানান, উনি আমাদের মুশকিল আসান৷ ছেলের স্কুলের প্রকৃতি পাঠে গাছপালার ভূমিকা সংক্রান্ত কোনও বিষয় থাকলে ওঁর দ্বারস্থ হই৷ সহযোগিতাও পাই৷’ কুমোরটুলির কমলা চক্রবর্তী, কাকলি মিশ্ররা বলেন, ‘কোনও গাছের প্রয়োজন হলেই আসি৷ মাটি সমেত গাছ তিনি আমাদের দেন৷ যে কোনও গাছের পাতা দেখলেই উনি বলে দিতে পারেন সেটি কি গাছ৷’

সত্যবাবু দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার লক্ষ্মীপুর গ্রামে থাকতেন৷ মাধ্যমিক পাস করার দু’বছর পর পেটের টানে কলকাতা চলে আসেন৷ উত্তর কলকাতার দর্জিপাড়ার কাছে নয়নচাঁদ দত্ত স্ট্রিটে একটি বাড়িতে আশ্রয় পেয়েছিলেন৷ একদিন ঝড়বৃষ্টিতে গাছ ভেঙে পড়তে দেখেন৷ তারপর অক্টোপাসের মতো তাঁকে গ্রাস করে গাছের প্রতি ভালোবাসা৷ কোনও অনুষ্ঠান, রক্তদান বা স্বাস্থ্য শিবির অথবা বই বিতরণ অনুষ্ঠান কিংবা বিজ্ঞান মেলা থেকে ডাক পেলে পৌঁছে যান৷ চারাগাছ উপহার দেন৷ তিনি বলেন, ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবসেই শুধু গাছ লাগালে হবে না৷ এই উদ্যোগ থাকতে হবে গোটা বছর৷’

রাঙাপানির ট্রেন দুর্ঘটনায় দুর্গত যাত্রীদের পাশে আনন্দমার্গ রিলিফ টীম

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ১৭ই জুন এন.জে.পি থেকে ছেড়ে আসা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস রাঙাপানি স্টেশন ছেড়ে আসার পর একই লাইনে আসা একটি মালগাড়ি কাঞ্চনজঙ্ঘার পেছনে সজোরে ধাক্কা মারে৷ রেলের খবর অনুযায়ী ১১জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়েছে এই দুর্ঘটনায়৷ দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় নির্মলজোত গ্রামের মানুষ ঈদের উৎসব ছেড়ে উদ্ধার কার্যে হাত লাগায়৷

শিলচরে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের প্রয়াণ দিবস পালন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ১৬ই জুন মহান দেশপ্রেমিক ও দেশবরেণ্য নেতা দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের ৯৯তম প্রয়ান দিবস৷ এই দিন শিলচরে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের মর্মর-মূর্ত্তির পাদদেশে একটি স্মরণসভার আয়োজন করে শিলচর দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস স্মৃতি রক্ষা সমিতি৷ সমিতির সদস্য ও কর্মকর্র্তগণ ছাড়াও শিলচর শহরের বিশিষ্ট মানুষ সভায় উপস্থিত হয়ে দেশবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷ আমরা বাঙালীর অসম রাজ্য সচিব শ্রী সাধন পুরকায়স্থ দেশবন্ধুর জীবনের বহুমুখী গুণের কথা তুলে ধরেন৷ তিনি বলেন দেশবন্ধুর সংস্পর্শে এসেই তাঁকে রাজনৈতিক গুরু মেনেই সুভাষচন্দ্র নেতাজী হতে পেরেছেন৷ শ্রীপুরকায়স্থ বলেন দেশবন্ধুর অকাল প্রয়ান না হলে দেশ হয়তো ভাগ হতো না৷ তিনি সব সম্প্রদায় সব জনগোষ্ঠীকে নিয়ে চলতে পারতেন৷

 

মার্গের আদর্শ ও কর্মসূচীর প্রসারে শুরু হচ্ছে আনন্দমার্গের সেমিনার

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

আনন্দনগরে ধর্ম মহাসম্মেলন সমাপ্তির পর মার্গের আদর্শ ও কর্মসূচীর ব্যাপক প্রসারের জন্যে শুরু হচ্ছে সেমিনার৷ বিশ্বের ১৮২ দেশে আনন্দমার্গের প্রতিটি শাখার সদস্যরা নিজ নিজ নির্দিষ্ট স্থানে এই সেমিনারে অংশগ্রহণ করবেন৷ তিনদিনের এই সেমিনারে মার্গের কর্মীদের দর্শন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া ছাড়াও প্রত্যহ দুইবেলা কীর্ত্তন মিলিত ঈশ্বর প্রণিধান, তত্ত্বসভা, কীর্ত্তন পরিক্রমা প্রভৃতি কর্মসূচী থাকবে৷

কলিকাতা রিজিজনে প্রথম ডায়োসিস স্তরের সেমিনারের শুরু হচ্ছে ২১,২২ ও ২৩শে জুন,২৪৷ কলিকাতা সার্কেলে প্রথম ডায়োসিস স্তরের প্রথম দফার সেমিনার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আলিপুর ডায়োসিসের কামাক্ষাগুড়ি আনন্দমার্গ স্কুলে৷ এখানে রায়গঞ্জ, জলপাইগুড়ি ও আলিপুর দুয়ার ডায়োসিসের সমস্ত স্তরের কর্মীরা উপস্থিত থাকবেন৷ ভুবনেশ্বর সার্কেলে সম্বলপুর ডায়োসিসের সেমিনার অনুষ্ঠিত হচ্ছে বারকোটে৷ শিলং সার্কেলের সেমিনার অনুষ্ঠিত হচ্ছে গুয়াহাটি আনন্দমার্গ স্কুলে৷ তিনদিনের এই সেমিনারে আলোচ্য বিষয় থাকছে---ৰৃহতের আকর্ষণ ও সাধনা,আন্তরিক শক্তির উৎস, প্রমা,অর্থনৈতিক গণতন্ত্র৷

বিজ্ঞানের অপরিণামদর্শিতা মানুষের সীমাহীন লোভ শাসকের নির্লিপ্ততায় পাহাড় থেকে সমতল প্রকৃতির ভয়াল রূপ

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

আজ থেকে প্রায় ৩৮ বছর আগে প্রাউট প্রবক্তা পরম শ্রদ্ধেয় শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার মেরুর স্থানান্তরন বিষয়ে বলেছিলেন---মেরুর স্থান পরিবর্তন একটি ভৌগোলিক তথ্য৷ এই পরিবর্তনের ফলে সূর্যের চারপাশে পৃথিবী ঘুরতে যে সময় লাগে তার কিছুটা এদিক-ওদিক হতে পারে৷ দিনরাত বছরের সময়টা পরিবর্তন হয়ে যাবে৷ পৃথিবীর নিজের কক্ষপথে প্রদক্ষিণের সময়েরও হ্রাস বৃদ্ধি হতে পারে৷ ফলে মাসের সঙ্গে ঋতুর সামঞ্জস্য থাকবে না৷ পৃথিবীর পরিবেশগত সামঞ্জস্যও ক্ষুণ্ণ্ হবে৷ এমন কি মানুষ জীবজন্তু উদ্ভিদেরও সংরচনাগত পরিবর্তন হবে৷ শ্রী সরকার সেদিন বলেছিলেন---মেরুর স্থান পরিবর্তন সমূহের জন্য ভবিষ্যতে পরিবেশগত সামঞ্জস্যের অভাবের স্বাভাবিক ফলশ্রুতির জন্য তৈরী থাকতে হবে৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেরুর স্থান পরিবর্তনের প্রভাব ইতিমধ্যেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ মাসের সঙ্গে ঋতুর সামঞ্জস্য থাকছে না৷ চাষ-আবাদের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়ছে৷ প্রকৃতির এই স্বাভাবিক ফলশ্রুতির সঙ্গে মানুষের সীমাহীন চাহিদা পূর্ত্তির অস্বাভাবিক প্রচেষ্টা প্রকৃতিতে বিপর্যয় ডেকে আনছে৷ পাহাড় থেকে সমতল সর্বত্রই প্রকৃতি ভয়াল রূপ ধারণ করছে৷ পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে বর্ষার কারণে পাহাড়ে ধস, সমতলে প্লাবন জনজীবন বিপর্যস্ত করছে দক্ষিণবঙ্গ তখন তাপপ্রবাহে পুড়ছে৷

উত্তরবঙ্গে বর্ষার মরসুম এলেই তিস্তা ভয়াল রূপ ধারণ করে কিন্তু গত বছর থেকে তিস্তার ধবংসাত্মক রূপ প্রবল হচ্ছে৷ এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা প্রাকৃতিক কারণের সঙ্গে মানুষের কার্যকলাপ তিস্তাকে ভয়ঙ্কর করে তুলছে৷ সিকিমে ১৭০ কিমি ও পশ্চিমবঙ্গে ১২৩ কিমি পথে তিস্তা প্রবাহিত হচ্ছে৷ এই দীর্ঘপথে ৪৭টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরী হয়েছে৷ এরফলে নদীর গতিপথ ও স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট হচ্ছে৷ সেবক-রংপো রেলপথে ১৪টি সুড়ঙ্গ তৈরী করতে হয়েছে ডিনামাইট ফাটিয়ে৷ তারও প্রভাব পড়ছে তিস্তায়৷ নদীর উপরিভাগ থেকে বালি পাথর নুড়ি নেমে এসে তিস্তার নদীখাত উঁচু করে দিচ্ছে৷ এর পরিনামে হড়পা বান বা জলস্ফীতিতে নদীর দুপাশের রাস্তা সেতু জঙ্গল পাহাড় ধবসে যাচ্ছে৷ বিশেষজ্ঞদের মতে যে কোন নির্মাণের ক্ষেত্রে ভৌগোলিক অবস্থান ও পরিবেশ পরিবর্তনের বিষয়ে ভাবাই হয় না৷

দক্ষিণবঙ্গে ভয়াল তাপপ্রবাহের জন্যে শুধু প্রকৃতি নয় মানুষও দায়ী৷ বনজঙ্গল কেটে, জলাশয়, খাল, বিল ভরাট করে কৃষি জমির উপর আবাস, শিল্প কারখানা গড়ে উঠছে৷ সবুজায়ন ধবংস করে নগর গড়ে উঠছে৷ এ ব্যাপারে প্রশাসন একেবারে নির্লিপ্ত, প্রাকৃতিক কারণের উপর সব দায় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ অবিলম্বে প্রশাসনের মানসিকতার পরিবর্তন না হলে যে কোন নির্র্মণের ক্ষেত্রে পরিবেশের উপর প্রভাব পড়া নিয়ে সজাগ সচেতন না হলে আগামীদিনে প্রকৃতি আরও ভয়ালরূপ ধারণ করবে৷

কার দোষ?

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

আর একটা রেল দুর্ঘটনা, মোদি জমানায় গত দশ বছরে প্রায় ২৫টি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে৷ ১৭ জুন এন.জে.পি ছেড়ে শিয়ালদহগামী কাঞ্চজঙ্ঘা এক্সপ্রেস রাঙাপানি পেরোতেই পিছন থেকে একটি মালগাড়ী এসে ধাক্কা মারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে৷ ১১ জনের মৃত্যু পঞ্চাশজনের বেশী আহত৷ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকার্য, নেতা মন্ত্রীদের দুঃখ প্রকাশ দুর্ঘটনার পর যা যা বিধিসম্মত সবই হলো৷ তারপর আর একটি দুর্ঘটনার অপেক্ষায়৷ কিন্তু সেই ছোট্ট মেয়েটি যে তার জন্মদিনের উৎসবে বাবার অপেক্ষায় ছিল--- তার বাবা আর কোন দিন আসবে না, কাঞ্চনজঙ্ঘার দুর্ঘটনা চিরদিনের জন্যে তার বাবাকে তার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে৷ আজীবন এক মর্মান্তিক স্মৃতি নিয়ে চলতে হবে মেয়েটিকে৷ যারা ঘরে ফিরলো, তারাও কি আর নিশ্চিন্তে রেল ভ্রমণ করতে পারবে কোনদিন৷ প্রতিটি দুর্ঘটনার বেদনাদায়ক ফলশ্রুতি ভোগ করতেই হয় কিছু মানুষকে কিছু পরিবারকে৷

কিন্তু সব দুর্ঘটনাই নিছক দুর্ঘটনা নয়৷ থাকে গাফিলতি কর্তব্যে অবহেলা, দায়িত্ব পালনে অসতর্কতা৷ রেলের মত বিশাল পরিবহন ব্যবস্থায় নিয়মিত নজরদারিতে ত্রুটি, প্রযুক্তিগত ব্যবস্থায় ত্রুটি---একটি দুর্ঘটনার পিছনে এরকম অনেক কারণ থাকতে পারে৷ যা তদন্ত সাপেক্ষ৷ কিন্তু তদন্তের আগেই তড়িঘড়ি রেলদপ্তরের এক পদস্থ অফিসার দুর্ঘটনায় নিহত মালগাড়ীর চালকের ঘাড়ে দুর্ঘটনার দায় চাপিয়ে দিলেন৷ যত সন্দেহ এখানেই৷ কেন এত দ্রুত মৃত চালককে দায়ী করা হয়৷ তবে কি প্রকৃত দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা! সাধারণ মানুষ প্রযুক্তিগত ব্যাপারও জানে না, ট্রেন চলাচলের নিয়মারীতিও বোঝে না৷ তারা চায় নিশ্চিন্তে নিরাপদে ভ্রমণ করতে৷ তার দায়িত্ব নিতে হবে রেল দপ্তরকেই৷ কাদের কর্তব্যের গাফিলতিতে এই দুঘর্টনা, অথবা কোথাও কোন যান্ত্রিক ত্রুটিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকুক দোষ কার খুঁজে বার করার দায়িত্ব রেল কর্তৃপক্ষের৷ তাঁরা এই কাজটা নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে করুন৷ রেল দপ্তরের অধিকারী দুর্ঘটনায় নিহত মালগাড়ীর চালককে এর ঘাড়ে দায় চাপানোয় সাধারণ মানুষের মনে অনেক সন্দেহ দানা বাঁধে৷ সন্দেহ দুর করার দায় দাযিত্ব রেলকর্ত্তৃপক্ষকেই নিতে হবে৷

যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা বিজ্ঞাপনের বহরে আবদ্ধ না থাকে, ঘোষকের সৌজন্যমূলক আবেদনেই যেন রেলযাত্রীদের নিরাপত্তার দায় সারা না হয়৷ বিশ্বের বৃহত্তম এই পরিবহন ব্যবস্থার ত্রুটি বিচ্যুতি দূর করা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায় রেলকর্ত্তৃপক্ষেরই


 

দীঘায় পর্র্দপন দিবস পালন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

জগদগুরু শ্রী শ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর শুভ পদার্পণ দিবস উপলক্ষে গত ৪ঠা ও ৫ই মে দীঘা আনন্দমার্গ আশ্রমে ২৪ঘণ্টা ব্যাপী অখণ্ড বাবানাম কেবলম নামসংকীর্তন অনুষ্ঠিত হল৷ আচার্য নির্মলশিবানন্দ অবধূত, দেবাত্মানন্দ অবধূত, মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত, সুবোধানন্দ অবধূত, কৃষ্ণনাথানন্দ অবধূত, অবধূতিকা আনন্দ বিভুকনা আচার্যা প্রমুখ দাদা-দিদি ও বিশিষ্ট মার্গীদের উপস্থিতিতে বাবা কোয়ার্টার কয়েকদিনের জন্য চাঁদের হাটে পরিনত হয়েছিল৷ দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, হুগলি, কোলকাতা প্রভৃতি জেলা থেকে বহু মার্গী ভাই-বোন উপস্থিত হয়েছিলেন৷ সমস্ত রকম অসুবিধাকে মানিয়ে নিয়ে মার্গীরা বাবার উপস্থিতি ও কীর্ত্তন রস আস্বাদন করে নিজেদের ধন্য করেছেন৷ প্রাতঃকালীন নগর কীর্ত্তন ও সবশেষে সমুদ্রতীরে বসে মিলিত সাধনার একটা আলাদা অনুভূতির কথা কেউই ভুলতে পারবেন না৷

হাওড়ায় বিপুল উৎসাহে মার্গগুরুদেবের জন্মোৎসব পালন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ২৩শে মে হাওড়া জেলায় বিপুল সমারোহে শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী ১০৩ তম জন্ম বার্ষিকি পালন করা হয়৷

এইদিন রাণীহাটিতে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে মার্গগুরুদেবের জন্মদিবস পালিত হয়৷ পাঁচলা জগৎবল্লভপুর প্রভৃতি গ্রামে গ্রামে ‘ৰাৰা নাম কেবলম্‌’ কীর্ত্তন পরিবেশন ও প্রচারপত্র বিলি করা হয়৷ এখানে সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন জেলার ভুক্তি প্রধান সুব্রত সাহা৷ একইভাবে মার্গগুরুদেবের জন্মবার্ষিকি পালন করা হয় ডোমজুড়, আমতা, সুলতানপুর প্রভৃতি অঞ্চলে৷ ডোমজুড়ে পরিচালনায় ছিলেন সেবা ধর্ম মিশনের ভুক্তিপ্রধান সুশান্ত শীল, আমতা সুচিত্রা রীত প্রমুখ৷