স্বাস্থ্য বিজ্ঞান

ঘামাচী (ঘর্মচচী)

আয়ুর্বেদাচার্য

চামড়াকে ঘর্মচচী থেকে বিমুক্ত করার জন্যে সমপরিমাণ তাজা দুধের সর ও ময়দা মিশিয়ে অল্পক্ষণ আঙ্গুলে ফেনিয়ে বা ফেটিয়ে নিয়ে, তারপর সারা শরীরে ওই সর–ময়দা মেখে ১৫/২০ মিনিট আলো–হাওয়া যুক্ত শুকনো জায়গায় (রোদে নয়) বসে থাকতে হয়৷ তারপর ওই লেপটে যাওয়া সর–ময়দাকে ঘষে ঘষে তুলে দিতে হয় ও সাবান না মেখে স্নান করতে হয়৷ সর–ময়দা ব্যবহারে সামান্যতম ক্ষতি হয় না৷ বরং ১৬ আনা লাভ হয়৷ শীতের দিনে চামড়া ফেটে গেলে অথবা অন্য যে কোন কারণে চামড়া খসখসে হয়ে গেলে, মেয়ে–পুরুষ যে কেউই সর–ময়দা ব্যবহার করতে পারেন৷

হলুদ–গাত্র–হরিদ্রা

আয়ুর্বেদাচার্য

কাঁচা হলুদের রোগৰীজ নাশনের সামর্থ্য থাকায় প্রাচীনকালে লোকেরা বিবাহ ও উৎসবাদির প্রাক্কালে গাত্রে কাঁচা হলুদ–বাটা লেপন করে স্নান করত যাতে বহু মানুষ সমাগমে রোগের প্রাদুর্ভাব না ঘটতে পারে৷ এই উৎসবটি এখনও কম–বেশী আছে যা গাত্র–হরিদ্রা নামে পরিচিত৷

হলুদের অন্যান্য ব্যবহার ঃ কাঁচা হলুদ–বাটা মাথায় মেখে স্নান করে মাথা মুছে নিয়ে, তারপর শুকনো গামছা মাথায় পনর–বিশ মিনিট চেপে বেঁধে রাখলে চুল মজবুত হয়৷ চুল পড়া বন্ধ হয়৷ চুল একটু ঢ়েউ–খেলানো বা কোঁকড়ানো হয়৷ তবে যাদের মাথায় ড্যাঙ্গর–উকুন আছে তারা যেন এসব না করে৷

 

হলুদ ও নবপত্রিকা

আয়ুর্বেদাচার্য

প্রাগৈতিহাসিক যুগের মানুষ রসায়ন বিদ্যা ড্রড়ন্দ্বপ্পন্ব্দব্ধব্ সম্বন্ধে বিশেষ কিছুই জানত না–ৰুঝত না৷ রোগের ওষুধ তারা গাছ–গাছড়া থেকেই পেত৷ মানুষ যে সমস্ত গাছের মধ্যে ঔষধীয় গুণ বেশী পেত সেগুলোকে তারা দেবতা বলে মনে করত৷ সে সময়কার মানুষ, বিশেষ করে ভারতবর্ষে, এমন ন’রকমের গাছের সংস্পর্শে এসেছিল যার মধ্যে নানান ধরনের গুণ ছিল–ঔষধীয় গুণ, খাদ্যগত গুণ ইত্যাদি৷ এই ন’রকমের গাছেরও তারা সেকালে পূজা করে এসেছিল–ঠিক দেবী–দেবতা জ্ঞানে নয়, একটা উপকারী জিনিস হিসেবে৷ গাছের মধ্যে দেবত্ব বা দেবীত্ব ভাব আরোপিত হয়েছিল পরবর্ত্তীকালে (পৌরাণিক যুগে)৷ এই ন’রকমের গাছ হচ্ছে–কদলী, কচু, হরিদ্রা, জয়ন্তী, অশোক, বিল্ব, দাড়িম্ব,

মধু

আয়ুর্বেদাচার্য নেবুর রস ও মধু

ঠাণ্ডা লাগলে বা সর্দিতে গরম জলের সাথে নেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলে অসুস্থতা দূর হয়ে যায়৷ গল্ ব্লাডারে ও লিভারের ব্যাধি দূর করতেও মধু যথেষ্ট সাহায্য করে৷ নেবুর রস, মধু আর অলিব ওয়েল মিশিয়ে পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করলে লিভার ও গল্ ব্লাডারের ব্যাধি দূর হয়ে যায়৷

কলার বিচি ও মধু

পাকস্থলীর ক্ষত ও আন্ত্রিক ক্ষত (ডেওডেন্যাল আলসার ও গ্যাসট্রিক আলসার)

লক্ষণ ঃ অজীর্ণ ও কোষ্ঠবদ্ধতা, অরুচি, আহারের পরে বমনেচ্ছা, আহারের পরক্ষণে বা ২৷১ ঘণ্টা পরে পেটে যন্ত্রণা ৰোধ হওয়া–এইগুলি রোগের লক্ষণ৷

ব্যষ্টিগত ও সামূহিক জীবনে নেশার সুদূরপ্রসারী কুফল

নেশার ত্রিদোষ ঃ নেশার জিনিস আমরা তাকেই বলি যার তিনটি লক্ষণ–(১) নিয়মিত সময়ে নেশার জিনিস না পেলে মন উশ্খুশ্ করে, কোন কাজে মন বসে না৷ (২) নেশার জোর যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ সে ৰুদ্ধিভ্রষ্ট অবস্থায় থাকে ও স্থায়ীভাবে নেশা করতে থাকলে, ৰুদ্ধিভ্রষ্টতাও স্থায়ী হয়ে যায়৷ (৩) নেশার তৃতীয় দোষ হচ্ছে যকৃত, কন্ঠ, কিডনী অবশ্যই তাতে আক্রান্ত হয়৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোষ্ঠৰদ্ধতা রোগও দেখা দেয়৷

গরমে রোগ–ব্যাধি ও নানা সমস্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি

বসন্ত ঋতু বিদায় নিয়ে এই বাঙলায় গ্রীষ্ম আসছে৷ গ্রীষ্মকাল মানেই গরমকাল৷ গরমে শারীরিক অস্বস্তি ও নানান রোগ–ব্যাধি দেখা দেয়৷ বলতে গেলে ছয় ঋতুর প্রভাব এই পশ্চিমবঙ্গে দেখা যায়৷ আর প্রতিটি ঋতুর আগমনই আমাদের কাছে আনন্দদায়ক৷ তবে প্রতিটি ঋতুর মত গ্রীষ্মেরও ভাল ও মন্দ দু’দিক রয়েছে৷ একটু সচেতন থাকলে গ্রীষ্মের এই মন্দ অর্থাৎ রোগ–ব্যাধি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলে চিকিৎসকদের অভিমত৷ এই গরমে চলতে ফিরতে সকলের অসুবিধা হয় ও আমরা সবাই কম বেশী শারীরিক ও মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ি৷ সময়মত সচেতন না হলে অনেক সময় তা মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে৷ সাধারণত অতিরিক্ত গরমে যে সব সমস্যা দেখা দিতে পারে, সেগুলির কারণ ও প্রতি

অশোক– Saraca indica Linn. ঃ

অশোক একটি ভারতীয় প্রজাতির (Indica) গাছ৷ অত্যুষ্ণ বা অতি শীতল অঞ্চল বাদে ভারতের সর্বত্রই অশোক গাছ জন্মায়৷ কেউ কেউ দেবদারু (ঢ়েউ খেলানো পাতা) গাছকে ভুল করে অশোক বলে থাকেন৷ না, দেবদারু ও অশোক এক গাছ নয়৷ দেবদারু (Indian Pine) পাইন বর্গীয় গাছ, অশোক তা নয়৷ অশোক ফুল অধিকাংশ ক্ষেত্রে লালচে রঙের৷ কিন্তু শাদা, সোণালী ও হলদে রঙের অশোক ফুলও হয় যদিও তারা দুষ্প্রাপ্য৷

অশোক, ফুল, ছাল ও মূল নানান ধরনের ঔষধ প্রস্তুতিতে লাগে৷ বিশেষ করে বিভিন্ন স্ত্রী–ব্যাধিতে অশোকের ঔষধীয় গুণ সর্বজনস্বীকৃত৷ অশোকাসব, অশোকারিষ্ট, অশোকক্ষীর প্রভৃতি ঔষধগুলি এই অশোক থেকেই প্রস্তুত হয়৷

অপামার্গ– Achyranthes aspera Linn.. অপরাজিতা– Clitoria ternatea Linn. ঃ

অপামার্গের পর্যায়বাচক শব্দগুলি হ’ল ‘কোষাতকী’ ও ‘খরমঞ্জরী’৷ ভারতীয় অপামার্গ মুখ্যতঃ দুই প্রজাতির–শ্বেত অপামার্গ ও রক্ত অপামার্গ৷ কলকাতা অঞ্চলে আমরা অপামার্গকে কথ্য ভাষায় বলে থাকি অপাঙ বা আপাঙ৷ রাঢ়ে বলি চচ্চড়ে, অঙ্গিকা ভাষায় বলা হয় চিড়চিড়া৷ অপামার্গের শীষ কারো গায়ে ছুঁড়ে দিলে তা তার বস্ত্রে আটকে যায়৷