বিশ্বকাপে মেয়েদের দুরন্ত লড়াই সত্ত্বেও লর্ডসে জেতা হ’ল না বিশ্বকাপ

সংবাদদাতা
ক্রীড়া সংবাদদাতা
সময়

বিশ্বকাপ ২০১৭তে নিজেদের মাটিতে ভাগ্যের সহায়তায় ইংল্যাণ্ড ভারতকে ৯ রানে হারিয়ে দিল৷ ভারতের তালু থেকে ছিটকে গেল বিশ্বকাপ৷ ১৯৮৩-র ওয়েষ্ট ইণ্ডিজ বধের পুনরাবৃত্তি করতে পারল না ভারতের মেয়েরা৷ কিন্তু বিশ্বকাপে ভারতের মহিলা ক্রিকেট দল যে পারফরমেন্স করেছে তা অভিনব৷ ইংলণ্ড, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যাণ্ড, পাকিস্তান সকলকে হারিয়েছে মিতালি-ঝুলনরা৷ সেমিফাইনালে অষ্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে ইংলণ্ডের মুখোমুখী হয় ভারত৷ লর্ডসে ভারতের মেয়েরা অল্পের জন্য ইতিহাসের পাতায় বিশ্বসেরার মুকুটনিয়ে সর্বসমক্ষে আসার ছবি ধরে রাখতে পারেনি৷ 

তবে ভারতের অধিনায়ক মিতালি রাজ দেশে ফিরে সাংবাদিক সম্মেলনে যথার্থই বলেছেন বিশ্বকাপে আমরা রানার্স হয়েছি ঠিকই, আমরা কিন্তু লড়াই জিইয়ে রেখে মাঠ ছেড়েছি৷ পরিস্থিতি এমন ছিল যে আমরাও আর ১০ রান করতে পারতাম৷ তাতে বিশ্বসেরার মুকুট আমাদের মাথায় শোভা পেত৷ আমরা দর্শকদের তথা সারা ক্রিকেটপ্রেমীদের বোঝাতে পেরেছি যে ভারতের এই ইতিবাচক ক্রিকেট, এই পারফরমেন্স আর লড়াই করার মানসিকতা ভবিষ্যতে ভারতকে অনেক সম্মান এনে দেবে৷ সে কারণেই মহিলা ক্রিকেট নিয়ে এখন এত মাতামাতি৷ আমরা কোনও ম্যাচেই হারার আগে হারিনি৷ অনেকবারই জয় ছিনিয়ে নিয়েছি বিপক্ষের হাত থেকে৷

ভারত অধিনায়ক ঠিকই বলেছেন৷ মুম্বাইয়ের ছত্রপতি শিবাজী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যখন ভারতের মেয়েরা প্রত্যাবর্তন করল তখন লাল কার্পেটে তাঁদের অভিবাদন জানানো হয়৷ বিমানবন্দরের বাইরে অসংখ্য মানুষ তাদের সম্মান জানায়৷ কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের সংবর্ধনার কথা ঘোষণা করেছে৷

খেলার মধ্যে ভুলচুক হয়েই থাকে৷ ফাইনালে মিতালির রান আউট, আর পুনম ভুল সিদ্ধান্তের শিকার কিছুতেই মন থেকে মুছে ফেলা যাচ্ছে না৷ বিশেষ করে পুনমকে আম্পায়ার যে লেগ বিফোরদেন সেই বলটা কিন্তু লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে তো বটেই স্ট্যাম্পের থেকেও কয়েক ইঞ্চি ওপর দিয়ে যাচ্ছিল৷ টিভি রিপ্লেতে পরিষ্কার---পুনম আউট ছিল না৷ অথচ ম্যাচের রাশ কিন্তু ভারতের হাত থেকে কখনোই বেরিয়ে যায়নি৷ বর্ষীয়ান ঝুলন দুরন্ত বোলিং করেন৷ তুলে নেন দিনটি উইকেট৷  আর দীপ্তি শর্মা৷ মাত্র ঊণিশ বছর বয়স৷ কিন্তু লড়াইটাই না করল মেয়েটা৷ দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং-ব্যাটিং করেছে ও৷ তবুও শেষ রক্ষা হল না৷ শেষের দিকে কিছুটা তাড়াহুড়ো করে উঁচু শর্ট মারতে গিয়ে আউট হয়ে যায়৷ আসল হাতে উইকেটও ছিল না আর বলও কম ছিল৷ তবে যা হোক স্পোর্টসম্যানশীপদেখিয়েছে ভারত৷ রানার্স হয়েও অভিনন্দন জানিয়েছে সারা লর্ডস৷ এটাই জানান দেয় মহিলা ক্রিকেটের স্বর্ণযুগ ভারতের দোড়গোড়ায়৷

ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট আজ যেখানে পৌঁছে গেছে সেখানে আমরা আশা করতেই পারি যে আগামী টি-২০ বিশ্বকাপে ভারতের মহিলা ক্রিকেট দল চার-ছক্কা মারবেই, উইকেট নেবেই৷ আমরা আশা করতেই পারি যে আগামী দিনে বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতের পুরুষদের পাশাপাশি মহিলা ক্রিকেট দলকে নিয়েও গর্ববোধ করবে ভারতবাসী৷