জাতীয় পঞ্জীকরণের অজুহাতে অসমে বাঙালী বিতাড়নের প্রতিবাদে সারা ত্রিপুরা জুড়ে আমরা বাঙালীর আন্দোলন

সংবাদদাতা
নিজস্বসংবাদদাতা, আগরতলা
সময়

এন.আর. সি বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জীকরণের মাধ্যমে  অসম থেকে ১.৩৯ কোটি বাঙালীকে বিদেশী চিহ্ণিত করে বিতাড়নের চক্রান্তের বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে ‘আমরা বাঙালী’ দলের বিক্ষোভ আন্দোলন ক্রমশই জোরদার হয়ে উঠছে৷

এই ইস্যুতে গত ৬ই জানুয়ারি খোয়াই শহরের সুভাষ পার্কে ৮ই জানুয়ারি তেলিয়ামুড়া ব্লক চৌমুহনিতে ‘আমরা বাঙালী’ দলের বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা৷ আর ওই ৮ই জানুয়ারিতেই সমগ্র উত্তর ত্রিপুরা জেলা জুড়ে প্রচার পথসভা অনুষ্ঠিত হয়৷ বক্তা ছিলেন রাজ্য কমিটির সদস্য গোপালকৃষ্ণ দেব ,যুবনেতা বিভাস দাস প্রমুখ৷

খোয়াইতে বক্তা ছিলেন রাজ্য কমিটির সহ সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্রপাল, প্রচার সচিব এ্যাডভোকেট গৌতম ঘোষ, জেলাসচিব গৌতম দেব, যুব নেতা সুবল দেব প্রমুখ৷

তেলিামুড়াতে বক্তা ছিলেন গৌরাঙ্গ রুদ্রপাল, ব্রজেন্দ্র দাস, গৌতম দেব ও গোপাল সরকার৷ উত্তর ত্রিপুরাতে বক্তারা ছিলেন গোপালকৃষ্ণদেব, বিভাস দাস প্রমুখ৷

৯ই জানুয়ারিতে একই ইস্যুতে করইলং শিশুবিহার, তেলিয়ামুড়াতে হয় বিক্ষোভ সভা৷  বক্তা হলেন জেলা সহ সচিব ব্রজেন্দ্র দাস, যুবনেতা সুবল দেব ও ব্লক সচিব গোপাল সরকার প্রমুখ৷

তাঁদের সকলের বক্তব্যের সার কথা হচ্ছে  নাগেরিক পঞ্জীকরণ আইনের অজুহাতে প্রথম দফায় যে ১ কোটি ৩৯ লক্ষ বাঙালীর নামকেটে যে বিদেশীর তালিকায় ঢোকানো হয়েছে ও সমগ্র অসমের প্রায় ৭০ শতাংশ,কাছাড় জেলায় প্রায় ১০০ শতাংশ বাঙালীর নামই বিদেশী তালিকায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ তারা সবাই অসম রাজ্যে বসবাসরত ভারতের স্থায়ী বাসিন্দা বা বৈধনাগরিক৷ বরং যারা নিজেদেরকে ভূমিপুত্র বলে দাবী করছে সেই অসমিয়ারাই অবৈধ বিদেশী৷ এঁরা প্রায় ৭০০ বছর আগে আরাকান দেশ থেকে অসমে প্রবেশ করেছিল৷ তাছাড়া স্বাধীনতার পর থেকে অসমের যে সমস্ত বাঙালীরা লোকসভা ও অসম বিধানসভার সদস্য নির্র্বচন করেছে তারা যদি অবৈধ নাগরিক হয় তবে তাদের ভোটে নির্র্বচিত অতীতের সমস্ত সরকারগুলি তো অবৈধ৷ এই বিচারে সংশ্লিষ্ট সরকারগুলির  সমস্ত সিদ্ধান্তগুলিও অবৈধ৷ আসলে স্বাধীনতার পর থেকেই হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী কায়েমী স্বার্থবাদীচক্র অসম, ত্রিপুরাসহ ভারতের বুক থেকে বাঙালীদেরকে নিশ্চিহ্ণ করে দেওয়ার জন্যে গভীর চক্রান্ত করে চলেছে৷ এমতাবস্থায় বক্তাদের অভিমত হল ‘আমরা বাঙালী’র আন্দোলনকে  শক্তিশালী করাই এর হাত থেকে বাঁচার একমাত্র পথ৷

বক্তারা আরও বলেন---স্বাধীনতার সময় দেওয়া জাতীয়  নেতাদের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক উদ্বাস্তু পঞ্জাাবীদের জন্যে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হলেও  বাঙালীদেরে জন্যে কেন করা হয়নি? অধিকন্তু অসম, ত্রিপুরা তথা ভারতবর্ষে যেখানে বাঙালীদের বাসভূমি সেখানে শুধু রাজনৈতিক স্বার্থে রাজ্যে রাজ্যে  এন আর সি-এর মতো বিভিন্ন আইনের মাধ্যমে  বাঙালীদের নাগরিক তথা সাংবিধানিক অধিকার হরণের চেষ্টা চালাচ্ছে বাম ডান বা বিজেপির মতো দল গুলি৷ বক্তাদের মতে বাঙলীদের  ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে ভারতের সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ শোষণমুক্ত সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চল বাঙালীস্তান গড়ে তোলাই এর একমাত্র স্থায়ী সমাধান৷ একাজে তাঁরা সকলশ্রেণীর মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন৷

গত ১১ই জানুয়ারী আগরতলা শহরে অসমে বাঙালীদেরকে বিদেশী চিহ্ণিত করণের প্রতিবাদে বেলা ১২ টায় ‘আমরা বাঙালী দলের বিক্ষোভ মিছিলে ও সিটি সেন্টারে বেলা ২টোয় জনসভাও অনুষ্ঠিত হয়৷