আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের পক্ষ থেকে শ্রাবণী পূর্ণিমার পুণ্যতিথিতে গত ৭ই আগষ্ট কলকাতার কাশীমিত্র ঘাটে আনন্দ মার্গের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীশ্রী আনন্দমূত্তিজীর প্রথম দীক্ষাদান দিবস মহাসমারোহে পালিত হল৷ এই উপলক্ষ্যে ৬ই আগষ্ট রাত ১২টা থেকে ৭ই আগষ্ট দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১২ ঘন্টা ব্যাপী অখন্ড কীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হয়৷ অষ্টাক্ষরীয় সিদ্ধমন্ত্র ‘‘াা নাম কেবলম্’ মহামন্ত্রের সুমধুর ধবনিতে আকাশ বাতাস মুখরিত হতে থাকে৷ এলাকায় মানুষজনও এই কীর্ত্তনে আকৃষ্ট হয়ে ভক্তিভরে কীর্ত্তনে অংশগ্রহণ করেন৷
৮ই আগষ্ট, শ্রাবণী পূর্ণিমা’র তিথিতে ঠিক ১২টায় অখন্ড কীর্ত্তন শেষ হলে সবাই মিলিত সাধনায় অংশগ্রহণ করেন৷ এরপর এই ‘শ্রাবণী পূর্ণিমা’র ওপর শ্রী শ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর প্রবচনটি পাঠ করে শোনান আচার্য বাসুদেবানন্দ অবধূত৷ এরপর আনন্দমার্গের প্রবীণ অবধূত আচার্য সর্বেশ্বরানন্দ অবধূত শ্রাবণী পূর্ণিমায় মার্গগুরুদেবের দীক্ষাদানের ঘটনার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন৷ মার্গগুরুদেব শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী, যখন তাঁর বয়স মাত্র ১৮ বৎসর , তখন তিনি প্রথম দীক্ষাদান করেন কালীডাকাত নামে সমাজের চোখে একজন ঘৃণ্য ডাকাতকে৷ সর্বেশ্বরানন্দজী বলেন, এটা এক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা৷ সৎ , ভালো মানুষকে আধ্যাত্মিক পথে আনার মধ্যে কোনো কৃত্তিত্ব নেই৷ একজন ভয়ঙ্কর বিপথগামী ডাকাতকে আধ্যাত্মিক পথে নিয়ে এসে তার জীবনের পরিবর্তন ঘটানো তো একটা চ্যালেঞ্জ৷ মার্গগুরুদেব এই চ্যালেঞ্জই গ্রহণ করেছিলেন সেদিনও কালী ডাকাতকে মহাসাধক কালিকানন্দ অবধূতে পরিণত করেছিলেন ৷ শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর বাণী উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, গোটা মানবসমাজ আজ নানান ব্যাধিতে, নানান্ ভাবজড়তা বা ডগ্মায় তার সর্বাঙ্গ আজ পঁুতিগন্ধময়৷ এই সমাজের পরিবর্তন ঘটিয়ে এক সর্র্বঙ্গ সুন্দর সমাজ রচনা করাই মার্গগুরুদেব প্রবর্তিত আনন্দমার্গের আদর্শ৷
এদিনের এই অনুষ্ঠানে প্রায় তিন শতাধিক মানুষের মধ্যে বস্ত্র, কম্বল ও খাতা-কলম বিতরণ করা হয় ও ব্যাপকভাবে নারায়ণ সেবার ব্যবস্থা করা হয়৷
বার ঘন্টা ব্যাপী এই কীর্ত্তনানুষ্ঠান ও প্রভাত সঙ্গীত পরিবেশন পরিচালনা করেন অবধূতিকা আনন্দকীর্ত্তিলেখা আচার্যা, আনন্দ পূর্ণপ্রাণা আচার্র্য, কুমুদ দাস, নিত্যানন্দ দাস, হরলাল হাজারী, শুভদীপ হাজারী স্বপন মন্ডল প্রমুখ৷ সঙ্গে খোল বাজিয়ে সহযোগিতা করেন প্রতীম দাস, স্বপন দাস, তন্ময় প্রমুখ৷ সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আচার্য পরিতোষানন্দ অবধূত কলকাতার ভুক্তিপ্রধান শিবুপদ আচার্য সহ উৎসাহী আনন্দমার্গীরা৷