গত ১২ই ফেব্রুয়ারী দিনটিকে দেশে বিদেশে সর্বত্র আনন্দমার্গীরা ‘‘নীলকন্ঠ দিবস’’ হিসেবে পালন করেন৷ কারণ, ১৯৭৩ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারী তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার সিবিআই-এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে আনন্দমার্গের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীকে গ্রেফতার করে তাঁকে হত্যা করার জন্যে তাঁর ওপর বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিল৷ অবশ্য শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী তাঁর ঐশী শক্তিবলে পাপশক্তির ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে ওই বিষকে আত্মসাৎ করে নিয়েছিলেন৷
এই উপলক্ষ্যে এই দিন কলকাতায় কেন্দ্রীয় আশ্রমে বিকেল ৩টে থেকে ৬টা পর্যন্ত আয়োজিত অখণ্ড কীর্ত্তনে কলকাতা ও পাশ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার আনন্দমার্গীরা যোগদান করেন৷ অখণ্ড কীর্ত্তনান্তে মিলিত সাধনা ও প্রভাত সঙ্গীতের পর ‘নীলকন্ঠ দিবসের’ ওপর বক্তব্য রাখেন আচার্য সর্বেশ্বরানন্দ অবধূত, আচার্য কেশবানন্দ অবধূত প্রমুখ৷
আচার্য সর্বেশ্বরানন্দ অবধূত বলেন, ১৯৮৩ সালে ১২ই ফেব্রুয়ারীর আগে পটনা বাঁকিপুর সেন্ট্রাল জেলে ‘বাবা’র সঙ্গে আর যে আনন্দমার্গীরা ছিলেন তাঁদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়৷ তারপর ওইদিন বাবার ওপর ওষুধের নাম করে বিষপ্রয়োগ করা হয়৷ পরদিন বিষের প্রতিক্রিয়া তাঁর শরীরে ফুটে ওঠে৷ শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী এই বিষপ্রয়োগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবীতে দীর্ঘ ৫ বছর ৪ মাস ২ দিন অনশন করেছিলেন৷ শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী সমাজের সর্বস্তরে ---কি আধ্যাত্মিক, কি সামাজিক, অর্থনৈতিক -রাজনৈতিক সর্বস্তরেই এক সর্র্বত্মক শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন৷ তাঁর প্রবর্তিত আধ্যাত্মিক দর্শন ‘আনন্দমার্গ’ ও সমাজদর্শন ‘প্রাউট’-এ এই কথাই বলা হয়েছে৷ সমাজের শোষকগোষ্ঠী তাই শাসকগোষ্ঠীর মাধ্যমে শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীকে বহুভাবে বহুবার হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছিল৷ তারা আনন্দমার্গ সংস্থাকেও ধবংস করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাপশক্তির সমস্ত ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়৷
১৯৭৮ সালের ২রা আগষ্ট শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী আদালতে সম্পূর্ণ নির্র্দেষ প্রমাণিত হন ও তিনি কারামুক্ত হন৷ পাপশক্তির সমস্ত ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে’ এরপরে আনন্দমার্গকে তিনি বিশ্বের ১৮২টি দেশে ছড়িয়ে দিয়েছেন, দেশে দেশে জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছেন৷ আজকে আমাদের সবাইকে শপথ নিতে হবে, তাঁর আদর্শকে আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে বাস্তবায়িত করবই করব৷