কুৎসিত  দলবাজিতে গণতন্ত্রের এমন দুর্দশা চরম লজ্জার!

লেখক
প্রভাত খাঁ

বিশাল জনবহুল ভারতে যে শাসন ব্যবস্থা চলছে সেটির  যে  কি হাল সে কথা কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্যগুলোতে  যাঁরা শাসনে আছেন  তাঁরা  হাড়ে হাড়ে  টের পাচ্ছেন৷ ভাঁড়ে মা ভবানী৷  বলতে দ্বিধা নেই  দীর্ঘ ৭১ বছরের গণতন্ত্র যে কীভাবে চলছে  সেটা ভালোভাবে  উপলদ্ধি করছেন  কোটি কোটি  হতভাগ্য জনগণ৷  করের বোঝা, চরম দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, চরম বেকার সমস্যা, প্রশাসনিক  ব্যর্থতার কারণে৷ এটা আত্ম অভিমানী কেন্দ্র ও রাজ্য গুলো মানতে চাননা৷  কারণটা হলো তাঁদের  মারাত্মক  অহংবোধ যেটা  সর্বনাশ  নামিয়ে  এনেছে সমগ্র রাষ্ট্রে৷

সকলের প্রশ্ণ৷ চিটফান্ডগুলোর টাকা যে কোথায় গেছে সেটা সরকার ছাড়াও সকলের প্রশ্ণ চিটফান্ডগুলোর  টাকা যে কোথায়  গেছে  সেটা সরকার  এর  না জানার  কোন কারণ নেই৷ ব্যাঙ্কের সুদ কেন কমছে সেটা যেমন তাঁরা জানেন আর হতভাগ্য জনগণের  টাকাটা যে  কোথায়  তার হদিশ তাঁরা অবশ্যই  জানেন৷ সেই প্রবাদ বাক্যটা  সকলেরই জানা ‘ঠাকুর ঘরে  কে, আমি তো কলা খাইনি’ প্রশ্ণের  উত্তর  যে সেটা  সঠিক নয় , তা সবাই বোঝে৷

দল বিশেষ করে  রাজনৈতিক দলগুলো যে কতটা দুর্নীতিগ্রস্ত সেটা নাগরিকদের জানতে  বাকি নেই৷ তবে দু’চার জন যে অতি আত্মত্যাগী নেই তা বিশ্বাস অবশ্যই করতে  হয়৷  দল পরিচালনা করাটা বর্ত্তমানে যে অত্যন্ত কঠিন  সেটি যাঁরা  নেতা ও নেত্রী সেটা ভালোই উপলব্ধি  করছেন৷ দুর্নীতিতে দেশ ছেয়ে গেছে৷

ইংরেজ ছিল বিদেশী৷ তাকে বিতাড়নের জন্যে সকলে এক হয়ে ছিল৷ কিন্তু  আজ ইংরেজ নেই কিন্তু দেশের  বর্ত্তমানে যাঁরা নেতা ও নেত্রী তাঁরা অনেকেই  স্বাধীন দেশ-এ জন্মেছেন৷  তাঁরা কত ত্যাগ স্বীকার করে স্বাধীনতা এনেছেন৷ বর্তমান প্রজন্ম তা জানেনই না যে, সেদিন যাঁরা সংগ্রাম করে জীবন দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলন করে গেছেন৷ আজ যাঁরা এ পদে এসেছেন অনেকেই রূপো ও সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্মেছেন  আর  অনেকে উত্তরাধিকার সূত্রে  নেতা ও নেত্রী  হয়েছেন৷ যাদের  দেশের জন্য কোন আত্মত্যাগই  নেই৷  এঁরা হলেন সেই রাজপুত্র বা রাজ কন্যার  মতো  ভাগ্যবান৷ এঁদের  ভাষা অত্যন্ত নিম্নমানের৷ সংবিধান সম্বন্ধে কোন  সম্যকজ্ঞান নেই৷

এঁদের বাক্যগুলি অত্যন্ত আত্ম অহংকারে মোড়া৷ অনেকের  মন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতাই নেই৷ কিন্তু দল রক্ষার জন্য  তাঁদের  মন্ত্রী করা হয়েছে৷  গণতন্ত্রে টাকা  ছড়িয়ে  দল ভাঙ্গাভাঙ্গী হচ্ছে৷ টাকা ছড়িয়ে নির্বাচনে জেতা হচ্ছে৷ লাঠিসোঁটা,বোমা বন্দুক, দেখিয়ে অর্র্থৎ লেঠেল বাজি করে নির্বাচনকে  প্রহশনে পরিণত করে গণতন্ত্রের পবিত্রতা নষ্ট করে দলীয় প্রার্থীদের জিতিয়ে নেতানেত্রীগণ বুক ফুলিয়ে দেখাচ্ছেন  যে তাঁরা  দেখ কতো বড়ো নেতা ও নেত্রী! হায় গণতন্ত্র হায় দেশ সেবা৷

লোকসভা ও বিধানসভায় চলাকালীন মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী হাজির থাকে না৷ প্রশ্ণোত্তরের সময় আলোচনার সময় যা কান্ড হয় দেখে শুণে মনে হয় আমরা কোন রাজত্বে বাস করি৷  এখানে কি সত্যই সুশাসন আছে? দুর্নীতিতে রাজনৈতিক দলগুলো একেবারেই  অধিকাংশ ডুবেছে৷ তার কিছু কিছু  দুর্র্ভগ্যজনক পরিণতির প্রকাশ ঘটে  মহামান্য আদালতের রায়ে৷ দুর্নীতিগ্রস্তরাই  সবদেশের  নেতা ও নেত্রী৷ রাজনীতি থেকে, সৎনীতিবাদীরা  দূরে সরে গেছেন৷  কেন এমন হলো?  এর উত্তর কে দেবে?  গণতন্ত্রে টাকার খেলা৷ জনগণের রায় সঠিক হচ্ছে না কারণ রাজনৈতিক দলগুলোই নির্বাচনকে  প্রহশনে পরিণত করেছে৷ শাসকগণ শাসন ব্যবস্থাকে বিরোধীশূন্য করার হুমকিই শুধু দিচ্ছেন না, তাঁদের  কাজ কর্মে, আচরণে সেটা প্রতি পদে পদে প্রকাশ পাচ্ছে৷

মহামান্য আদালত এর রায় পথে  পড়ে কাঁদছে৷ কেন?  এর উত্তর সবার জানা৷  সেটা হলো দুর্নীতিগ্রস্তরাই  শাসনের দন্ড হাতে নিয়ে  বসে আছে৷ ত্রিপুরার নির্বাচনটা কি হলো? পশ্চিম বাংলার  পঞ্চায়েত নির্বাচনের  পরিণতিটাই বা কি ধরণের? প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারল না! জনগণ মার খেল! অনেকে মারা গেল৷  নির্বাচন কমিশন যে কাঠের  পুতুল৷ পুলিশ নীরব দর্শক৷ লেঠেল ও বন্দুক বাজদের  আস্ফালন৷  এ কেমন গণতন্ত্র?  জনগণের  রায়ের দরকার নেই৷ আমরাই বিধাতা৷  আমাদের কথাই শেষ কথা৷ এই  হামলাবাজরা কারা?  এদের  পশ্চাতে  কারা আছে? সেটাতো সবাই জানে৷  তারা  অসহায়! তাঁরা কারা?  কারা আছে? সেটা তো  সবাই মানে৷ তাঁরা অসহায় তারা কারা?  তাঁরা  হলেন হতভাগ্য নাগরিকগণ৷ তাঁদের কোন শক্তি নেই৷

এটাই আজ গণতন্ত্রের মর্র্মন্তিক পরিণতি! এইসব  কাজ যারা  করছে তাদের  কোন দোষ নেই  কারণ  অনেকেই  হতভাগ্য  বেকার৷

তাদের  এই  বিভৎস কাজে  লাগানো হয়েছে৷  যারা লাগিয়েছে তারা সবই জানে৷ এটাই হলো  ভয়ংকর দলবাজি৷  তাই নোংরা  দলবাজীটাই  দেশকে ডোবাচ্ছে৷  এর হাত থেকে  গণতন্ত্রকে  বাঁচাতে  প্রয়োজন  নোতুন নেতা ও নোতুন আদর্শ৷ গণতন্ত্র আজ মানবতাহীন , নিষ্ঠুর দলবাজিটাই  তাকে ধবংস করছে  লোভ আর রাষ্ট্র ক্ষমতা লোলুপ কিছু ভয়ংকর  স্বার্র্থন্বেষীদের ইঙ্গিতে৷

ফরাসী বিপ্লব ঘটে  ১৬ই লুই  এর আমলে৷ গণতন্ত্রেও এক বিক্ষোভ ও বিদ্রোহ জাগবে নিয়তির বিধানে৷ তাই ভারতের জনগণকে  সজাগ থাকতে হবে৷  বাম শাসক শেষ৷ এদের যারা  এসেছে তারা যাবে৷ কংগ্রেস শেষ৷ মহা প্রকৃতি সবই  দেখছেন আর সবারই প্রতিকার হবে৷ আজ দেশে সৎমানুষের দারুণ অভাব৷ আজ হাল ধরতে হবে, সৎনীতিবাদীদের৷