বিশাল জনবহুল ভারতে যে শাসন ব্যবস্থা চলছে সেটির যে কি হাল সে কথা কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্যগুলোতে যাঁরা শাসনে আছেন তাঁরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন৷ ভাঁড়ে মা ভবানী৷ বলতে দ্বিধা নেই দীর্ঘ ৭১ বছরের গণতন্ত্র যে কীভাবে চলছে সেটা ভালোভাবে উপলদ্ধি করছেন কোটি কোটি হতভাগ্য জনগণ৷ করের বোঝা, চরম দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, চরম বেকার সমস্যা, প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে৷ এটা আত্ম অভিমানী কেন্দ্র ও রাজ্য গুলো মানতে চাননা৷ কারণটা হলো তাঁদের মারাত্মক অহংবোধ যেটা সর্বনাশ নামিয়ে এনেছে সমগ্র রাষ্ট্রে৷
সকলের প্রশ্ণ৷ চিটফান্ডগুলোর টাকা যে কোথায় গেছে সেটা সরকার ছাড়াও সকলের প্রশ্ণ চিটফান্ডগুলোর টাকা যে কোথায় গেছে সেটা সরকার এর না জানার কোন কারণ নেই৷ ব্যাঙ্কের সুদ কেন কমছে সেটা যেমন তাঁরা জানেন আর হতভাগ্য জনগণের টাকাটা যে কোথায় তার হদিশ তাঁরা অবশ্যই জানেন৷ সেই প্রবাদ বাক্যটা সকলেরই জানা ‘ঠাকুর ঘরে কে, আমি তো কলা খাইনি’ প্রশ্ণের উত্তর যে সেটা সঠিক নয় , তা সবাই বোঝে৷
দল বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলো যে কতটা দুর্নীতিগ্রস্ত সেটা নাগরিকদের জানতে বাকি নেই৷ তবে দু’চার জন যে অতি আত্মত্যাগী নেই তা বিশ্বাস অবশ্যই করতে হয়৷ দল পরিচালনা করাটা বর্ত্তমানে যে অত্যন্ত কঠিন সেটি যাঁরা নেতা ও নেত্রী সেটা ভালোই উপলব্ধি করছেন৷ দুর্নীতিতে দেশ ছেয়ে গেছে৷
ইংরেজ ছিল বিদেশী৷ তাকে বিতাড়নের জন্যে সকলে এক হয়ে ছিল৷ কিন্তু আজ ইংরেজ নেই কিন্তু দেশের বর্ত্তমানে যাঁরা নেতা ও নেত্রী তাঁরা অনেকেই স্বাধীন দেশ-এ জন্মেছেন৷ তাঁরা কত ত্যাগ স্বীকার করে স্বাধীনতা এনেছেন৷ বর্তমান প্রজন্ম তা জানেনই না যে, সেদিন যাঁরা সংগ্রাম করে জীবন দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলন করে গেছেন৷ আজ যাঁরা এ পদে এসেছেন অনেকেই রূপো ও সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্মেছেন আর অনেকে উত্তরাধিকার সূত্রে নেতা ও নেত্রী হয়েছেন৷ যাদের দেশের জন্য কোন আত্মত্যাগই নেই৷ এঁরা হলেন সেই রাজপুত্র বা রাজ কন্যার মতো ভাগ্যবান৷ এঁদের ভাষা অত্যন্ত নিম্নমানের৷ সংবিধান সম্বন্ধে কোন সম্যকজ্ঞান নেই৷
এঁদের বাক্যগুলি অত্যন্ত আত্ম অহংকারে মোড়া৷ অনেকের মন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতাই নেই৷ কিন্তু দল রক্ষার জন্য তাঁদের মন্ত্রী করা হয়েছে৷ গণতন্ত্রে টাকা ছড়িয়ে দল ভাঙ্গাভাঙ্গী হচ্ছে৷ টাকা ছড়িয়ে নির্বাচনে জেতা হচ্ছে৷ লাঠিসোঁটা,বোমা বন্দুক, দেখিয়ে অর্র্থৎ লেঠেল বাজি করে নির্বাচনকে প্রহশনে পরিণত করে গণতন্ত্রের পবিত্রতা নষ্ট করে দলীয় প্রার্থীদের জিতিয়ে নেতানেত্রীগণ বুক ফুলিয়ে দেখাচ্ছেন যে তাঁরা দেখ কতো বড়ো নেতা ও নেত্রী! হায় গণতন্ত্র হায় দেশ সেবা৷
লোকসভা ও বিধানসভায় চলাকালীন মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী হাজির থাকে না৷ প্রশ্ণোত্তরের সময় আলোচনার সময় যা কান্ড হয় দেখে শুণে মনে হয় আমরা কোন রাজত্বে বাস করি৷ এখানে কি সত্যই সুশাসন আছে? দুর্নীতিতে রাজনৈতিক দলগুলো একেবারেই অধিকাংশ ডুবেছে৷ তার কিছু কিছু দুর্র্ভগ্যজনক পরিণতির প্রকাশ ঘটে মহামান্য আদালতের রায়ে৷ দুর্নীতিগ্রস্তরাই সবদেশের নেতা ও নেত্রী৷ রাজনীতি থেকে, সৎনীতিবাদীরা দূরে সরে গেছেন৷ কেন এমন হলো? এর উত্তর কে দেবে? গণতন্ত্রে টাকার খেলা৷ জনগণের রায় সঠিক হচ্ছে না কারণ রাজনৈতিক দলগুলোই নির্বাচনকে প্রহশনে পরিণত করেছে৷ শাসকগণ শাসন ব্যবস্থাকে বিরোধীশূন্য করার হুমকিই শুধু দিচ্ছেন না, তাঁদের কাজ কর্মে, আচরণে সেটা প্রতি পদে পদে প্রকাশ পাচ্ছে৷
মহামান্য আদালত এর রায় পথে পড়ে কাঁদছে৷ কেন? এর উত্তর সবার জানা৷ সেটা হলো দুর্নীতিগ্রস্তরাই শাসনের দন্ড হাতে নিয়ে বসে আছে৷ ত্রিপুরার নির্বাচনটা কি হলো? পশ্চিম বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরিণতিটাই বা কি ধরণের? প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারল না! জনগণ মার খেল! অনেকে মারা গেল৷ নির্বাচন কমিশন যে কাঠের পুতুল৷ পুলিশ নীরব দর্শক৷ লেঠেল ও বন্দুক বাজদের আস্ফালন৷ এ কেমন গণতন্ত্র? জনগণের রায়ের দরকার নেই৷ আমরাই বিধাতা৷ আমাদের কথাই শেষ কথা৷ এই হামলাবাজরা কারা? এদের পশ্চাতে কারা আছে? সেটাতো সবাই জানে৷ তারা অসহায়! তাঁরা কারা? কারা আছে? সেটা তো সবাই মানে৷ তাঁরা অসহায় তারা কারা? তাঁরা হলেন হতভাগ্য নাগরিকগণ৷ তাঁদের কোন শক্তি নেই৷
এটাই আজ গণতন্ত্রের মর্র্মন্তিক পরিণতি! এইসব কাজ যারা করছে তাদের কোন দোষ নেই কারণ অনেকেই হতভাগ্য বেকার৷
তাদের এই বিভৎস কাজে লাগানো হয়েছে৷ যারা লাগিয়েছে তারা সবই জানে৷ এটাই হলো ভয়ংকর দলবাজি৷ তাই নোংরা দলবাজীটাই দেশকে ডোবাচ্ছে৷ এর হাত থেকে গণতন্ত্রকে বাঁচাতে প্রয়োজন নোতুন নেতা ও নোতুন আদর্শ৷ গণতন্ত্র আজ মানবতাহীন , নিষ্ঠুর দলবাজিটাই তাকে ধবংস করছে লোভ আর রাষ্ট্র ক্ষমতা লোলুপ কিছু ভয়ংকর স্বার্র্থন্বেষীদের ইঙ্গিতে৷
ফরাসী বিপ্লব ঘটে ১৬ই লুই এর আমলে৷ গণতন্ত্রেও এক বিক্ষোভ ও বিদ্রোহ জাগবে নিয়তির বিধানে৷ তাই ভারতের জনগণকে সজাগ থাকতে হবে৷ বাম শাসক শেষ৷ এদের যারা এসেছে তারা যাবে৷ কংগ্রেস শেষ৷ মহা প্রকৃতি সবই দেখছেন আর সবারই প্রতিকার হবে৷ আজ দেশে সৎমানুষের দারুণ অভাব৷ আজ হাল ধরতে হবে, সৎনীতিবাদীদের৷
- Log in to post comments