মহাপ্রাজ্ঞ প্রভাতরঞ্জন সরকারের মাইক্রোবাইটাম সাধনা ও মাইক্রোবাইটা

লেখক
শ্রীসমরেন্দ্রনাথ ভৌমিক

শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার ১৯৮৬ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ১৯৮৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত এই আড়াই বৎসরকাল সময় ধরে মাইক্রোবাইটামের মত এক দূরুহ বিষয়ের ওপর বহু প্রবচন দিয়েছিলেন৷ ১৯৮৬ সালের ৩১শে ডিসেম্বর ধর্মমহাচক্র উপলক্ষ্যে কলকাতায় ‘‘রেণেশাঁ ইয়ূনিবার্সাল’’-এর মঞ্চ থেকে পরম পূজনীয় শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার সভাপতি হিসাবে মাইক্রোবাইটামের ওপর প্রবচন দিয়েছিলেন৷ প্রবচনের বিষয় ছিল---‘Microvitam the mysterious emanation of cosmic factor’’ (‘‘ভূমাচৈত্তিক ধাতুর রহস্যজনক উৎসারণ’’) তিনি বলেছিলেন প্রাণের উৎস হ’ল এই মাইক্রোবাইটাম৷ বিশ্বসৃষ্টির মূল কারণ বা মূল উৎস হ’ল মাইক্রোবাইটা৷ এই মাইক্রোবাইটাম নিয়ে অবিলম্বে ব্যাপক গবেষণা হওয়া দরকার৷ কাজটি অবশ্যই বিরাট৷ তবুও বলব অবিলম্বে এই বিষয় নিয়ে গবেষণার সূত্রপাত হওয়ার দরকার৷ নইলে আজকের সমাজের বহুবিধ সংস্কার সমাধান করা যাবে না৷

শ্রীসরকার আরও বলেছেন---‘‘মাইক্রোবাইটাম হ’ল জৈব জীবনের গূঢ় রহস্য৷ ভৌতিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক তিন স্তরেই প্রগতির চাবিকাঠি এই মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বেই নিহিত রয়েছে৷ বুদ্ধিমান মানুষ এই মাইকেআবাইটাম তত্ত্বকে কোনও মতেই উপেক্ষা বা অবহেলা করবেন না৷ যত বেশী ও যথাযথভাবে এই মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বের প্রচার ও প্রসার ঘটানো যায় ততই মানব সমাজের প্রভূত কল্যাণ হবে৷’’ তাই যাতে শীঘ্রাতিশীঘ্র এই মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বকে নিয়ে গবেষণা হয়, তার জন্যে সমগ্র মানব সমাজকে উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন শ্রীসরকার৷

এই মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বের প্রয়োগ যত দেরীতে হবে ততই আগামী দিনে নানাবিধ কঠিন কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে৷ হয়ত বা ওই সমস্যা থেকেই যাবে৷ গ্রহ-গ্রহান্তর ও বিভিন্ন জ্যোতিষ্ক থেকে আগত নিত্যনূতন অজ্ঞাত জীবাণু দ্বারা পৃথিবীর মানুষ আক্রান্ত হয়ে দূরারোগ্য রোগে ভুগবে৷ মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বের প্রয়োগ শুধু এইসব দূরারোগ্য রোগের নিরাময়ের ক্ষেত্রেই নয়, রসায়নের ক্ষেত্রেও আগামী দিনে আনবে এক যুগান্তকারী বৈপ্লবিক পরিবর্তন৷ এ যাবৎ প্রচলিত বহু রাসায়নিক ফর্মুলার আমূল পরিবর্তন ঘটবে৷ সেদিনের মাইক্রোবাইটাম বিজ্ঞানীরা জলের ফর্মুলা যে চিরাচরিতH2O, তা তারা আর মানবেন না৷ তখন এই জলের প্রতিটি অণুতে কত সংখ্যক মাইক্রোবাইটাম বর্তমান আছে তা গুণে নিয়ে ওই প্রচলিত সংকেতের সঙ্গে সংযুক্ত করবেন৷ মাইক্রোবাইটাম আবিষ্কারকের মতে, যদি কোনও H2O অণুতে 2000 টি মাইক্রোবাইটাম বর্তমান থাকে, তবে ওর সংকেত হবে H2O (MV-2000)৷ এক্ষেত্রে সংকেতগুলি নিশ্চয়ই জটিল হবে৷ তিনি আরও বলেছেন---‘‘এই মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বের প্রয়োগের ফলে মানব সমাজের বহুমুখী পরিবর্তন ঘটিয়ে বিশ্বের সর্বাত্মক পরিবর্তন আনার জন্যে বিশ্বমানব সাগ্রহে প্রতীক্ষা করছেন৷ মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বের প্রয়োগ সম্পর্কে শ্রীসরকার আরও বলেছেন---মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বের প্রয়োগের ফলে বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে অবশ্যই যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটবে৷ মাইক্রোবাইটাম তত্ত্ব ঔষধ, রসায়ণ(Pharmo Chemistry) ও জৈব প্রযুক্তি বিদ্যাকে (Bio- Chemistry) প্রভাবিত করবে৷

আজকের মানুষ এই মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বকে কাজে লাগাবার কৌশল জানে না৷ তবে খুব শীঘ্রই মানুষ এই মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বকে জেনে ফেলবে ও এই তত্ত্বকে মানব কল্যাণে বিভিন্ন দিকে ব্যাপক প্রয়োগ করবে৷

মানুষের জীবনে এই মাইক্রোবাইটামের ব্যাপক গুরুত্বের কথা ভেবেই মহান দার্শনিক তথা বৈজ্ঞানিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার যেমন একদিকে মাইক্রোবাইটাম নিয়ে গবেষণা করতে বলেছেন, তেমনই অপরদিকে কিছু সাধককে মাইক্রোবাইটাম সাধনাও শিখিয়েছেন৷ ১৯৮৮ সালের ১৫ই জুলাই সর্বপ্রথম মাইক্রোবাইটাম সাধনা শেখানো শুরু করেছিলেন৷

যে মাইক্রোবাইটামের এত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অতীতে সেই মাইক্রোবাইটামের বিরাট প্রয়োগ হয়নি৷ এমনকি ভগবান সদাশিব কিংবা শ্রীকৃষ্ণ সেই মাইক্রোবাইটাম সম্পর্কে কিছুই বলেননি, সম্ভবতঃ সে সময় হয়তো বা সেই যুগে মাইক্রোবাইটামের প্রয়োগ প্রয়োজন ছিল না৷ তাই বলেননি৷ কিন্তু বর্তমান পৃথিবী যে কঠিন সমস্যার মধ্যে দিয়ে চলেছে তার সমাধান একমাত্র মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বের মধ্যেই নিহিত রয়েছে৷ একটি সুস্থ অখণ্ড অবিভাজ্য মানব সমাজ ঘটনে এই মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বের প্রয়োগ অবশ্যই প্রয়োজন৷ বলা বাহুল্য, তাই বোধ হয় পৃথিবীতে এই সর্বপ্রথম মাইক্রোবাইটামের ব্যাপক প্রয়োগ ও ব্যবহারের জন্য মহাপ্রাজ্ঞ শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন৷