২৩ সেপ্টেম্বর ঃ প্রভাত সঙ্গীতের ৩৬ বর্ষপূর্তি উৎসব উপলক্ষ্যে আয়োজিত কেন্দ্রীয় প্রভাত সঙ্গীত প্রতিযোগিতা কলকাতায় সাফল্যের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হ’ল৷ আনন্দমার্গের কলকাতা ভি.আই.পি নগরস্থ প্রধান কার্র্যলয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এই প্রভাত সঙ্গীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড , অসম, ত্রিপুরা প্রভৃতি বাঙালী অধ্যুষিত এলাকা , এমনকি মহারাষ্ট্র থেকেও প্রতিযোগীরা যোগদান করেছেন৷ ওইসব এলাকা থেকে ইতোপূর্বে ৬৮ টি প্রারম্ভিক প্রতিযোগিতা কেন্দ্রে বিজয়ীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন৷ এই ধরণের ৯০০ জন প্রতিযোগী ও তাদের সঙ্গে অভিভাবক-অভিভাবিকা , আগ্রহী দর্শক এমনি করে প্রায় তিন হাজারের বেশি মানুষের সমাগমে এদিনের এই অনুষ্ঠানে বিশাল আনন্দ মেলার রূপ নিয়েছিলো৷ প্রথমে বিভিন্ন ‘জোন’ (এলাকা) ভিত্তিক বয়স অনুসারে ক, খ, গ, ঘ---এই চারগ্রুপে প্রভাত সঙ্গীত (সঙ্গীত বিভাগ), প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য ও প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে অংকন বিভাগে ব্যষ্টিগত ও সমবেত অনুষ্ঠানের প্রতিযোগিতায় হয়৷ এটি ছিল প্রাক্-চূড়ান্ত অনুষ্ঠান৷ এই অনুষ্ঠান হয় ৯-৩০ থেকে ১টা পর্যন্ত৷ এরপরে ১টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা হয়৷ এভাবে ‘নবরত্ন’, ‘ত্রিরত্ন’ ও ‘রাওয়া রত্ন’ নির্র্ধরিত হয়৷ প্রতিযোগিতা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিজয়ী প্রতিযোগীদ্রেদর পুরস্কৃত করা হয়৷ অনুষ্ঠানের অংশগ্রহণকারী সমস্ত ছেলে-মেয়েদের ‘রাওয়া মেডেলও দেওয়া হয়৷
(আগামী সংখ্যায় বিজয়ীদের নাম প্রকাশ করা হবে)৷
এখানে উল্লেখ্য ১৯৮২ সালে ১৪ই সেপ্টেম্বর মহান্ দার্শনিক পরম শ্রদ্ধেয় শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার (যিনি ধর্মগুরু শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী রূপ সমধিক পরিচিত) দেওঘরে এই প্রভাত সঙ্গীত রচনা শুরু করেছিলেন৷ এরপর ১৯৯০ সালের ২০শে অক্টোবর তার মহাপ্রয়াণের পূর্বদিন পর্যন্ত তিনি ৫০১৮টি প্রভাতসঙ্গীত করেছেন ও নিজেই সেগুলিতে সুরারোপণ করেছেন৷ অভিনব ভাব,ভাষা সুর ও ছন্দের সমন্বয়ে রচিত তাঁর এই যুগান্তকারী সঙ্গীত মানুষের চেতনালোকে আজ যে অমানিশা ঘণীভূত সেই অমানিশার অবসানে প্রভাতের সূচনা করেছে৷ তাই এই সঙ্গীত ‘প্রভাত সঙ্গীত’ নামে অভিহিত৷
এই প্রভাত সঙ্গীতকে সারা বিশ্বের প্রচারের দায়িত্বে থাকা ‘রাওয়া’ (রেণেশাঁ আর্টিষ্টস্ এ্যাণ্ড রাইটার্স এ্যাসোসিয়েশন) এই প্রভাত সঙ্গীত প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল৷ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করে’ ‘রাওয়া’র কেন্দ্রীয় সচিব আচার্য রবীশানন্দ অবধূত এই প্রভাত সঙ্গীতের মাধ্যমে আত্মিক চেতনার জাগরণের জন্যে সবার কাছে আবেদন রাখেন৷ সারা বিশ্বজুড়ে নবজাগরণের আহ্বান জানান৷ তিনি বলেন, আনন্দমার্গের অধ্যাত্ম ভিত্তিক সর্বান্যুসূত দর্শনেরই প্রকাশ ঘটেছে ওই প্রভাত সঙ্গীতে৷ এই প্রভাত সঙ্গীতের ব্যাপকচর্চার জন্যে তিনি সবাইকে আহ্বান জানান৷ তিনি সমস্তরকম পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠান, বিভিন্ন সুরে বিভিন্ন আঙ্গিকে, ভক্তিমূলক, সমাজচেতনামূলক , নব্যমানবতাবাদ মূলক --- সমস্ত রকমেরই গান রয়েছে প্রভাত সঙ্গীতের ভান্ডারে৷
বাংলাসহ ইংরেজী৷ হিন্দি, উর্দু প্রভৃতি ৮টি ভাষায় প্রভাত সঙ্গীতও রয়েছে৷ তাই সবাই এই অপূর্ব সঙ্গীতের চর্চা করুন -এটাই সবার কাছে আবেদন৷