প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে লোকপাল ও লোকায়ুক্ত বিলের জন্যে আন্না হাজারে আন্দোলন করেছিলেন৷ সেই আন্দোলনকে তখন সমস্ত বিরোধী দল সমর্থন জানিয়েছিলেন৷ ১৯১১ সালের এপ্রিলে আন্না হাজারে যখন এই দাবীতে অনশন করেছিলেন, তখন কেন্দ্রে কংগ্রেস-জোটের সরকার ক্ষমতাসীন ছিল৷
কিন্তু আজও নানান অজুহাতে সেই লোকপাল বিল পাশ হল’না ৷ রাজ্যে লোকপাল বিলের অনুরূপ বিলের নাম ‘লোকায়ুক্ত’ বিল৷ যাতে মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ যে কোনো মন্ত্রী ও সচিবের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব ‘লোকায়ুক্ত’ এর ওপর দেওয়ার দাবী ছিল৷
সম্প্রতি বিধানসভায় এই লোকায়ুক্ত বিল পাশ করানোর জন্যে এই সম্পর্কীয় একটি বিলের কপি (দ্য ওয়েষ্ট বেঙ্গল লোকায়ুক্ত বিল-২০১৮) বিরোধী ও শাসক দলের বিধায়কদের কাছে পাঠানো হয়েছিল৷ তাতে বলা হয়েছিল ‘মুখ্যমন্ত্রী’র বিরুদ্ধে লোকায়ুক্ত তদন্ত করতে পারবে না৷
এ নিয়ে বিরোধীরা হৈ-হট্টগোল শুরু করার পর সরকার পক্ষ থেকে এই বিলের কপি ফেরৎ নেওয়া হয়৷ বলা হয় মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি না নিয়েই বিলের কপি ভুল করে বন্টন করা হয়েছে৷ এই বিলটিতে আরও সংশোধন করা হবে৷
এই বলে তখন বিলের খসড়া কপি ফেরৎ নেওয়া হলেও গত ২৪ তারিখে আবার বিলটি বিধায়কদের মধ্যে বিলি করা হয়েছে৷
এই নোতুন বিলেও মুখ্যমন্ত্রীকে ‘লোকায়ুক্ত’র আওতার বাইরে রাখা হয়েছে৷ অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত করা যাবে না৷ লোকপাল বিলেও ‘প্রধানমন্ত্রী’ কে লোকপাল বিলের আওতার বাহিরে রাখতে কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ আগ্রহী৷ রাজ্যের ক্ষেত্রেও একই চিত্র৷ সদ্য বিলি করা কপিতে আরও বলা হয়েছে, মন্ত্রিসভার কোনও সদস্য বা সরকারী কর্মচারীর ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের আগাম অনুমতি ছাড়া ‘লোকয়ুক্ত’ তদন্ত করতে পারবে না৷ অর্থাৎ নখদন্তহীন লোকায়ূক্ত বিল!
স্বাভাবিকভাবে আন্না হাজারে যে লক্ষ্যে লোকপাল ও লোকায়ুক্ত বিলের জন্যে আন্দোলন করেছিলেন, সেই লক্ষ্য অধরাই থেকে যাচ্ছে৷