‘ওই মহামানব আসে!’

লেখক
জিজ্ঞাসু

আমরা সাধারণ মানুষেরা, ঋষি কবির ওই বাণীতে আস্থা  হারাচ্ছিলাম, কারণ আমরা এমন একটা যুগ  সন্ধিক্ষণের  সাক্ষী যেখানে ব্যবসার নামে সর্বনাশ বিক্রি হয়৷  ডাক্তারীর নামে ডাকাতি হয়৷  উকিল ও বিচারকেরা বিক্রি হয়ে যান৷ বিশ্ববিদ্যালয়গুলি তোতাপাখী তৈরী করে৷ খবরের মাধ্যমগুলি তিলকে তাল, বা তালকে তিল বানায় নিজেদের  স্বার্থ দেখে৷ বেশীর ভাগ কিশোর-যুবদল নেশাগ্রস্ত  হয়ে হতাশায় ভোগে৷ দারিদ্র্যের শিকার হয়৷ ব্যাংকগুলিকে ভরসা করা যায় না৷ মন ভারাক্রান্ত, অশান্ত, বিক্ষুব্ধ, সন্দেহপ্রবণ! আর যেন ভালো কিছু হবার নয়৷ এই পৃথিবীতে  প্রাচীন সভ্যতাগুলি হারিয়ে যাবার  কারণ মানুষের  অজ্ঞতা, ভয়, অসভ্যতা, হিংস্রতা, জড়তা, স্বার্থপরতা ইত্যাদি জিন ঘটিত  ত্রুটি৷ ২০১৮ সালের পৃথিবীটাও ধর্ম,জাত-পাত আর ক্ষমতালোভী রাজনীতি নিয়ে ভাতৃঘাতী যুদ্ধ  ও শোষণক্ষেত্র হয়ে আছে৷  সার্বিক ভাবে যেন  জীবন্ত  নরক তৈরী  করছে মানুষরূপী  অমানুষেরা ৷ সাধুর মুখোশে  শয়তানের বাস৷ এমন হতাশার  গভীর রাতের জাল ছিঁড়ে যখন এক সোনালী ভোরের আভা অন্তত দেখা যায়, মন আনন্দে ভরে যায়৷ এই ভেবে যে অন্ধকার যত তীব্র হবে মানে প্রভাত হবার  বেশি দেরী নেই৷ এই বিশ্বাস তৈরী হয়ে যায়৷

বহুবছর আগেই  াা আনন্দমূর্ত্তিজীর ভবিষ্যবাণী ছিল---মানুষ একদিন গবেষণাগারেই উন্নত মানুষের জন্ম দেবে৷ শোষণমুক্ত নোতুন পৃথিবী তৈরী  হবে৷ আজ কি আধুনিক জীববিজ্ঞানীর মুখে তারই প্রতিধবনি  পাচ্ছি!! সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা ‘NATURE’’ - এর মাধ্যমে জানা যাচ্ছে নেদারল্যান্ডের  Merlin and Hubrecht institute in Utrecht এ কর্মরত গবেষক  জীববিজ্ঞানী Dr.Nicolas Riveren এক নোতুন আবিষ্কারের সম্ভাবনার সিংহদরজায় উপস্থিত৷ তাঁর মতে  গবেষণাগারেই Stem Cell  বানিয়ে নিয়ে , পছন্দ  মত মানব ভ্রূণ তৈরী সম্ভব যেখানে  কোনো নারীর ডিম্বাণু ও পুরুষের  শুক্রাণু নিষ্প্রয়োজন৷ তার মানে, দেহ কোষের  মধ্যে থাকা  তরলের একটা অংশে থাকা জিন (মাতা পিতার  দেহমানসিক বৈশিষ্ট্য) থেকে  সম্পূর্ণ মুক্ত থাকবে, গবেষণা গারে  তৈরী নোতুন মানুষ৷  ফলে তারা জিন ঘটিত  যা  কিছু  ভয়, দূর্বলতা, অসুখ, কুভ্যাস, অজ্ঞতা, হিংস্রতা সেসব থেকে মুক্তি পাবে৷ দক্ষ ও গতিবান  হবে৷ মনশক্তিকে  বিস্তারিত  চেতনায় রূপান্তরণের  তাৎক্ষণিক ক্ষমতা হবে৷ তেমন সমর্থ মানুষেরা  ভোগবাদ বা মৃত্যু ভয় বা নাম যশ বা ক্ষমতার দাপটের  কাছে বিক্রি হবেন না৷ এমন মানুষেরাই তো ধূলির এই ধরণীতে প্রাউটকে বাস্তবায়িত করবেন ও এক মহাবিশ্ব পরিবার বানিয়ে নেবেন৷ কবির বাণী মিথ্যা হবে না!