পেট্রোপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির আগুনে সারা দেশের জনমানস উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে৷ গত ১০ই সেপ্টেম্বর কংগ্রেস ও তার সঙ্গে আর ২২টি দল পেট্রোল ও ডিজেলসহ নিত্য- প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ‘ভারত বনধ্’-এর ডাক দিয়েছিল৷ পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস ভারত বনধের সঙ্গে একমত ছিল না৷ তাই তারা ধর্মঘটের বিরোধিতা করলেও কেন্দ্রীয় সরকারের পেট্রোপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ তাই সারা ভারতে এই বনধের ডাকের মিশ্র প্রভাব পড়েছে৷ সবাই কর্মনাশা একদিনের বন্ধের সমর্থন না করলেও কেন্দ্রের মূল্যবৃদ্ধির নীতির বিরোধিতায় সবাই এক মত৷
২০১৪ সালে বিজেপি যখন ক্ষমতায় আসে তখন আন্তর্জাতিক বাজারের অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি ১০৬ ডলার৷ তখন দেশে পেট্রোলের দাম ছিল ৭১.৫০ টাকা আর ডিজেলের দাম ৫৫.৪৯ টাকা প্রতি লিটার৷ গত ৯ই সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম যখন ব্যারেল প্রতি ৭৬ ডলার৷ তখন এদেশে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ৮১ টাকা থেকে ৮৩ টাকা আর ডিজেলের দাম ৭৩ টাকা থেকে ৭৬ টাকা৷
এর মূল কারণ হ’ল ডলারের তুলনায় ভারতীয় টাকার ক্রমাগত অবমূল্যায়ন৷ তার ওপরে এদেশে কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রোল ও ডিজেলের ওপর অস্বাভাবিক কর চাপিয়েছে৷ কেন্দ্রীয় সরকার তেলের ওপর কর ও শুল্ক কমিয়ে দিলে পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য কমে যাবে৷ কিন্তু জনসাধারণের কষ্ট লাঘব করার দিকে কেন্দ্রীয় সরকারের হুঁশ নেই৷
বলা বাহুল্য, পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি ফলে কেবল যারা গাড়ী চালায়, তাদেরই যে অসুবিধা হচ্ছে তা নয়, এর ফলে পরিবহনের খরচ বাড়ছে, তারজন্যে সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যেরই মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে ৷ আর দেশের দরিদ্র জনসাধারণকে এই মূল্যবৃদ্ধির বোঝা বইতে বইতে ওষ্ঠাগত প্রাণ৷