জলপাইগুড়ি ঃ প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের পক্ষ থেকে গত ৯ই মে থেকে এখানে শুরু হয়েছে ৫দিনের প্রাউট প্রশিক্ষণ শিবির৷ এই শিবিরে পশ্চিমবঙ্গ ও অন্যান্য রাজ্য থেকে দুই শতাধিক প্রাউটিষ্ট যোগদান করেছেন৷ তাঁদের প্রাউট দর্শন সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্যে বিশিষ্ট প্রাউট-তাত্ত্বিকগণও এসেছেন৷ প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের সেক্রেটারী জেনারেল আচার্য কল্যাণেশ্বরানন্দ অবধূত ছাড়াও প্রাউট প্রশিক্ষকদের মধ্যে এসেছেন আচার্য মন্ত্রেশ্বরানন্দ অবধূত, আচার্য সুতীর্র্থনন্দ অবধূত, আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত, আচার্য রবীশানন্দ অবধূত, শ্যামবং, ডঃ ভাস্কর জেনা প্রমুখ৷
৯ই মে প্রাউট প্রশিক্ষণ শিবিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আচার্য কল্যাণেশ্বরানন্দজী বলেন, আজ ভাগাড়কান্ড থেকে শুরু করে বিজয় মালিয়া ও নরেন্দ্রমোদীর ব্যাঙ্কের ঋণ খেলাপীর নামে জনসাধারণের কোটি কোটি টাকা লুঠ, এদিকে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের নামে সর্বত্র পেশীবল ও অর্থবলের দাপাদাপি এ সবকিছুই প্রমাণ করে বর্তমানে সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থা বলে কিছু নেই৷
চলছে শুধু দুর্নীতি ও শোষণের রাজ্যপাট৷ এই ভয়াবহ সমস্যা থেকে ধণতন্ত্র বা মাকর্সবাদ --- এরা কেউই সমাজকে বাঁচাতে পারছে না৷ এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে সমাজকে বাঁচাতে পারে একমাত্র মহান্ দার্শনিক শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার প্রবর্তিত প্রাউট দর্শন৷ তাই এই প্রাউট দর্শন দেশের ছাত্র-যুব- বুদ্ধিজীবী-শ্রমিক-কর্ষক---সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে৷ সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে হবে৷
আচার্য মন্ত্রেশ্বরানন্দজী বলেন প্রাউট দিয়েছে সর্বপ্রকার শোষণমুক্ত মানব সমাজ গড়বার নোতুন পরিকল্পনা সঙ্গে সঙ্গে দিয়েছে যারা সর্বাত্মক শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে তুলবে সেইধরনের নীতিবাদী বিপ্লবী চরিত্রের মানুষ তৈরীর পদ্ধতি৷ প্রাউট প্রশিক্ষণের ১ম দিন আচার্য মন্ত্রেশ্বরানন্দজী আজকের কৃষি ও কর্ষকদের সমস্যা ও কী করে প্রাউট দর্শনের পথ ধরে এই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান করা যায়, তা ব্যাখ্যা করেন৷ তিনি এজন্যে প্রতি ব্লকেই ব্যাপকভাবে সমবায়ের ভিত্তিতে কৃষিভিত্তিক ও কৃষিসহায়ক শিল্প গড়ে তোলার বিশেষ প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন৷ পরদিন আচার্য সুতীর্র্থনন্দ অবধূত প্রাউটের মূল পঞ্চ সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা করেন৷ তিনি বলেন, জাগতিক সম্পদ সীমিত৷ সমাজের কোনো ব্যষ্টিকেই এই সীমিত জাগতিক সম্পদের প্রয়োজনাতিরিক্ত সঞ্চয় করতে দেওয়া যাবে না৷ জমির সিলিংয়ের মত অন্যান্য জাগতিক সম্পদ সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে সিলিং একান্ত জরুরী৷ তার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলেন, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সম্পদ সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে প্রাউট মানুষকে পুরোপুরি স্বাধীনতা দিতে চায়৷
কারণ এক্ষেত্রে একজনের অধিক সঞ্চয় অন্যের অভাবের বা ক্ষতির কারণ হবে না৷ বরং যতই মানুষ মানসিক ও আধ্যাত্মিক সম্পদ লাভ করবে, ততই তারও মঙ্গল,সমগ্র সমাজের মঙ্গল৷