প্রভাত রঞ্জনের মননে গন্ধ পরিক্রমা

লেখক
সমরেন্দ্র নাথ ভৌমিক

এই  বিশ্বচরাচর সবকিছু পঞ্চভূতের সমাহার৷ আর এই বিশ্বচরাচরের সব অস্তিত্বগুলি স্পন্দনাত্মক ৷ স্পন্দনাত্মক অস্তিত্বগুলির মধ্যে সবচেয়ে সুক্ষ্মতম অস্তিত্ব হল তন্মাত্র                            inferences) আবার এই  তন্মাত্রগুলি অর্র্থৎ  শব্দ- স্পর্শ-রূপ-রস-গন্ধ তন্মাত্রগুলির মধ্যে শব্দ তন্মাত্র হল সূক্ষ্মতম তন্মাত্র ও গন্ধ হল স্থূল তন্মাত্র৷ কিন্তু এই স্থূল গন্ধতন্মাত্রটির মানব জীবনে ও পশুর জীবনে প্রভাব অপরিসীম৷ এই গন্ধের সঙ্গে মাইক্রোবাইটামের এক নিবিড় সম্পর্ক আছে৷

মহাজ্ঞানী ভাষাবিদ্ শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকার গন্ধ পরিক্রমাগ্রন্থে গন্ধ প্রসঙ্গে বলেছেন--- ‘‘মানুষ যদি সহস্রারের বিশেষ বিশেষ অংশে (যা গুরু প্রমুখাৎ শিখতে হয়) ও আজ্ঞা চক্রের  বিশেষ বিশেষ অংশে  বিশেষ বিশেষ পদ্ধতিতে (যা গুরু প্রমুখাৎ শিখতে হয়) মনসংযোগ ও দৃঢ় পুরশ্চরণ করে, সেই অবস্থায় অলৌকিক গন্ধভান্ডারের স্তরে স্তরে, স্তবকে স্তবকে যে মাধুরী নিহিত রয়েছে সে সেই মাধুর্য লাভ করতে পারে ও করেও থাকে৷’’

শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকার শব্দচয়নিকাগ্রন্থ রচনা করেছেন৷ এই শব্দ চয়নিকা গ্রন্থটির ২৬টি খন্ড আছে৷ এই গ্রন্থে শ্রী সরকার প্রতিটি শব্দের  বহুবিধ ব্যাখ্যা ও শব্দ গুলির প্রয়োগ বিষদভাবে আলোচনা করেছেন৷ আজকের প্রবন্ধে মহাজ্ঞানী শ্রী প্রভাত রঞ্জনের সুবৃহৎ শব্দ-বাগিচা হতে গন্ধশব্দটির বহুধা পল্লবিত অর্থের কিছু চয়ন করে সুধী পাঠকবৃন্দকে উপহার দিলাম৷

শ্রীপ্রভাত রঞ্জনের গন্ধ পরিক্রমাগ্রন্থটিতে গন্ধ্ ধাতুটির ১২টি অভিনব আলোচনা বিশদভাবে ব্যক্ত করেছেন৷ পৃথিবীর কোন সংস্কৃত কিংবা বাংলা অভিধানে গন্ধ্ধাতুটির এত ব্যাপক আলোচনার উল্লেখ আছে বলে মনে হয় না৷ আশা করি অভিজ্ঞতাপূর্ণ পাঠকবর্গের কাছে তা স্পষ্ট হবে৷

গন্ধশব্দটির গন্ধ্ধাতু হতে উৎসারিত হয়েছে৷ গন্ধ্ ধাতুর সঙ্গে অচ্ প্রত্যয় যোগে গন্ধশব্দটি উৎপন্ন হয়েছে৷ শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকার তাঁর এক প্রবচনে গন্ধ্ ধাতুর ১২টি বিভিন্ন  অর্থের কথা ও ব্যাখ্যা করেছেন৷ তাঁর এই প্রবচন থেকেই হুবহু সেই অর্থগুলির উল্লেখ করছি৷ গন্ধ্ধাতুটি বহু অর্থর্োধকঃ

১) গন্ধ্’-ধাতুর একটি অর্থ হল কাউকেtease করা  বা কারও পেছনে লাগা৷

২)গন্ধ্’-ধাতুর আর একটি অর্থ হল কারও আঁতে ঘা দিয়ে কথা বলা৷

৩)গন্ধ্ধাতুর আর একটি অর্থ হল ধাক্কা দেওয়া বা জোর করে ঠেলে দেওয়া৷

৪)গন্ধ্ধাতুর আর একটি অর্থ হল হত্যা করা৷

৫)গন্ধ্ধাতুটির আরও একটি অর্থ হল প্রবাহিত হওয়া৷

৬)গন্ধ্ধাতুর অন্য  একটি অর্থ হল কোন কিছু বহন করে নিয়ে যাওয়া৷

৭)গন্ধ্ধাতুর আর একটি অর্থ হল  চিরে ফেলা৷

৮)গন্ধ্ধাতুর অন্য একটি অর্থ হল ফল বা কোন বস্তুর ভেতর থেকে কোন কিছু বার করার জন্য খোলা ছাড়ানো (যেমন নেবু) অথবা তাকে ভেঙে ফেলা(যেমন নারকোল/বেল)৷

৯)গন্ধ্ধাতুর অন্য  একটি মানে হল পোকা-মাকড় জন্তুকে বিপর্য করবার জন্যে কোন বিষাক্ত গ্যাস বা বায়ু ছড়িয়ে দেওয়া (কোন কিছু স্প্রেকরে কীটনাশ করা) প্রভৃতি৷

১০) গন্ধ্ধাতুর আর একটি অর্থ হল হাতে ভিক্ষাপাত্র নিয়ে আবাজ করে ভিক্ষা চাওয়া৷

১১)গন্ধ্ধাতুর অন্য একটি অর্থ হল চন্দনপিঁড়িতে জল সহযোগে চন্দন কাঠ ঘর্ষনণ করা৷

১২)গন্ধ্ধাতুর অন্য মানে  গন্ধ বিকিরণ করা অর্র্থৎ কোন বস্তুকে গন্ধায়িত করা, যেমন গোলাপের নির্যাসে তিল তৈলকে সুবাসিত করা৷