প্রভাত সঙ্গীতের ৩৬ বর্ষপূর্তি উৎসবের অঙ্গ হিসেবে পঃবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড প্রভৃতি সমস্ত বাংলাভাষী এলাকায়, কোথাও কোথাও বাংলা ভাষী এলাকার বাইরেও মহান দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার রচিত সুরারোপিত প্রভাত সঙ্গীত ও এই প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য ও অংকনের প্রতিযোগিতা চলছে৷ বর্তমানে ৬৮টি কেন্দ্রে প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতা চলছে৷
প্রাথমিক কেন্দ্রগুলি থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানাধিকারীরা আগামী ২৩ শে সেপ্টেম্বর কলকাতায় আনন্দমার্গের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন৷ বিভিন্ন স্থান থেকেই মহাসমারোহে প্রভাত সঙ্গীত প্রতিযোগিতার সংবাদ আসছে৷
দুর্লভপুর (বাঁকুড়া) ঃ গত ৮ই, ৯ই সেপ্টেম্বর দুর্লভপুর আনন্দমার্গ স্কুলে ৬০০ প্রতিযোগীকে নিয়ে রেণেসাঁ আটিষ্টস্ এ্যান্ড রাইটার্স এ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া)-এর উদ্যোগে প্রভাত সঙ্গীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়৷ প্রতিযোগী, প্রতিযোগিদের অভিভাবক-অভিভাবিকা, আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধব ও সাধারণ দর্শক এই সব নিয়ে ২ দিন ধরে এই প্রতিযোগিতা প্রকৃতই উৎসবের রূপ নেয়৷ সঙ্গীত ও নৃত্যে ৫টি ও অংকনে ৪টি করে গ্রুপে প্রতিযোগিতা হয়৷ ৪০ জন বিচারক, ৫০ জন অফিসিয়াল ষ্টাফ ও ৩০ জন ভলান্টীয়ার্সের অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রতিযোগিতাটি সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়৷
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যাঁদের উজ্জ্বল উপস্থিতি লক্ষণীয় তাঁরা হলেন সভাপতি আনন্দমার্গের কেন্দ্রীয় প্রকাশন সচিব আচার্য মন্ত্রেশ্বরানন্দ অবধূত, বিশেষ অতিথি আচার্য তন্ময়ানন্দ অবধূত, অবধূতিকা আনন্দ অভীষা আচার্যা, ভারত কলাকেন্দ্র সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের কর্ণধার সৌরভ চ্যাটার্জী, পার্থ ফিলানথ্রফিক ট্রাষ্ট-এর সদস্য শ্রী নিশাকর পান্ডা, শ্রী মাধব বসাক প্রমুখ৷ উপস্থিত অতিথিবৃন্দ কৃতী প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন৷ তাঁরা তাঁদের বক্তব্যে অভিনব ভাব, ভাষা, সুর ও ছন্দবিশিষ্ট প্রভাত সঙ্গীতের ভূয়সী প্রশংসা করেন৷
অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ও পরিচালক আচার্য সত্যানিষ্ঠানন্দ অবধূত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন৷ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শ্রী গৌরাঙ্গ ভট্টাচার্য৷
মদনপুর ঃ গত ৯ই সেপ্টেম্বর স্থানীয় ‘রাওয়া’ সচিব ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাসের উদ্যোগে ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দের অকুন্ঠ সহযোগিতায় স্থানীয় আনন্দমার্গ স্কুলে ১৫০ জন প্রতিযোগিতাকে নিয়ে নদীয়া জেলার মদনপুরে প্রভাত সঙ্গীত ও প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য ও অংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়৷
কান্দি ঃ গত ৯ই সেপ্টেম্বর মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দিতে রেঁণেসা আর্টিষ্ট এ্যান্ড রাইটার্স এ্যসোসিয়েশন (রাওয়া)-এর পক্ষ থেকে কান্দি পৌরসভার কমিউনিটি হলে প্রভাত সঙ্গীত ও প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য ও অংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়৷ এই প্রতিযোগিতায় তিনশতাধিক প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে৷ উক্ত প্রতিযোগিতায় মুখ্য বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অবধূতিকা আনন্দ পূর্ণপ্রাণা আচার্যা৷ সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন আনন্দমার্গ স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল আচার্য বিশ্বোত্তরানন্দ অবধূত ৷ সহযোগিতায় ছিলেন অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ ও কান্দি আনন্দমার্গ ইউনিটের সদস্যবৃন্দ৷
নিউব্যারাকপুর ঃ গত ৯ই সেপ্টেম্বর নিউব্যারাকপুর রেঁণেসা আর্টিষ্ট এ্যান্ড রাইটার্স এ্যসোসিয়েশন (রাওয়া)-র পক্ষ থেকে নিউব্যারাকপুর আনন্দমার্গ আশ্রমে প্রভাত সঙ্গীত ও প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য ও অংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়৷ এই প্রতিযোগিতায় ৯৩ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন৷ এদের মধ্যে সঙ্গীতে অংশগ্রহণ করেন ৩৬ জন৷ উক্ত প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন আচার্য বোধিসত্তানন্দ অবধূত৷ সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন আনন্দমার্গ নিউব্যারাকপুর ইউনিটের সদস্যবৃন্দ৷
রামনগর (কাঁথি) ঃ গত ১২ই আগষ্ট আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের সাংস্কৃতিক প্রকোষ্ঠ রেঁণেসা আর্টিষ্ট এ্যান্ড রাইটার্স এ্যসোসিয়েশন -এর উদ্যোগে রামনগর শাখার প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে অঙ্কন , গীত ও নৃত্যের প্রারম্ভিক প্রতিযোগিতা রামনগর হাইস্কুলে অনুষ্ঠিত হয়৷ এই প্রতিযোগিতায় তিনটি বিভাগে মোট ১২০ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রীপতি দাস৷ সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অনিন্দ্য দাস (প্রধান শিক্ষক, কালিন্দী ইউনিয়ন হাইস্কুল), বিশিষ্ট নাট্যকার সম্মানীয় অলক মাইতি, ডাঃ গৌতম প্রধান প্রমুখ৷ প্রধান অতিথিরূপে আমন্ত্রিত ছিলেন রামনগর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিতাইচরণ সার৷ বিচারকের আসন অলঙ্কৃত করেছিলেন আচার্য শিবপ্রেমানন্দ অবধূত, আচার্য সত্যসাধনানন্দ অবধূত ও নীলোৎপল ঘোষ দস্তিদার মহাশয়৷ প্রভাত সঙ্গীতের প্রেক্ষাপট , প্রাসঙ্গিকতা ও গুরুত্ব তুলে ধরেন ‘রাওয়া’ সম্পাদক বিদ্যাসাগর মাইতি৷ তিনি বলেন মার্গগুরু আনন্দমূর্ত্তিজী তথা শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার ১৯৮২ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৯০ সালের ২০শে অক্টোবর মাত্র ৮ বছরে বিভিন্ন ভাব -ভাষা -সুর-ছন্দ ও রাগ রাগিনীর মোট ৫০১৮ টি সঙ্গীত রচনা করেছেন ও সুর দিয়েছেন যা অতিবিস্ময়ের৷ ১ম, ২য় ও ৩য় স্থানাধিকারী ছাড়াও সকল অংশগ্রহণকারীকে পুরসৃকত করা হয়৷ আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর কলিকাতার ভি.আই.পি বাজারস্থিত আনন্দমার্গ আশ্রমে অনুষ্ঠিত হবে বিভিন্ন জোন থেকে বিজয়ীদের নিয়ে প্রাক্-চুড়ান্ত ও চুড়ান্ত প্রতিযোগিতা৷ অনুষ্ঠানে প্রত্যক্ষ ও সক্রিয় সহযোগিতায় ছিলেন সদস্য বিজয়ানন্দ মাইতি, মনোরমা মাহাত, শ্রীকৃষ্ণ পাত্র, সৌমেন কামিলা, অজয় পাহাড়ী, শম্ভু শীট, অমিতাভ মাইতি, ক্ষিতিশ জানা প্রমুখ৷