তেহসিনা, আলফিসার ও সমা৷ এই তিন কন্যা সম্প্রতি বাঙলা থেকে মুম্বাই গেল ফুটবল খেলতে৷ তিনজনই দলের নির্ভরযোগ্য ফুটবলার৷ দর্শক আজ তাদের ফুটবলার হিসেবে চিনবে কিন্তু কি পরিস্থিতিতে আর কতটা কণ্টকময় পথ অতিক্রম করে একজন মহিলা ফুটবলার হতে হয় তা জানতে মুম্বাইগামী ট্রেনে ওঠার সময় আলফিসারদের মুখোমুখি হতেই শোণা গেল তাদের অতীত দিনের কিছু কথা৷ বর্তমানে তেহসিনা তিন বছরের এক সন্তানের মা৷ তাঁর স্বামী কিছুতেই চাইতেন না স্ত্রী ফুটবল খেলুক৷ রাজাবাজারের মাঠে প্র্যাকটিস থাকতো সকাল ছ’টা থেকে৷ মাঠে যাবার জন্য যখন তেহসিনা তৈরী হতেন তখন তাঁর স্বামী তাঁদের সন্তানকে জাগিয়ে দিতেন৷ যাতে সন্তানকে ফেলে মা মাঠে যেতে না পারেন৷ কিন্তু অদম্য ইচ্ছায় তেহসিনা সব কিছু সামলে প্র্যাকটিসে যেতেন৷ জানালেন স্বামী পাশে নেই, ছোট্ট সন্তানকে মায়ের কাছে রেখে মুম্বাই যাচ্ছেন দলের হয়ে৷
আলফিসারের পরিবারের কেউ চাইতেন না তিনি মাঠে ফুটবলারের পোশাক পড়ে ফুটবল খেলুন৷ বাড়ীর মেয়ে ছেলেদের মত পোশাক পড়াটাই তাদের কাছে বেমানান৷ তাই ফুটবলে পা দেওয়া তো দূরের কথা মাঠে যাওয়াতেই আপত্তি৷ আলফিসারের বাবা তাঁর জুতো লুকিয়ে রাখতেন৷ এত বাধা সত্ত্বেও তিনি মাঠে গেছেন, নিয়মিত প্র্যাকটিস করেছেন৷ আর আজ? আলফিসার বললেন---বাবা সকালবেলা জুতো বের করে গুছিয়ে দিলেন, যাতে ভাল খেলি আশীর্বাদ করলেন৷
তিন কন্যার আর এক কন্যা সমা জানালেন বাধা অনেক, কিন্তু আমি মনে করি আমি ফুটবলার৷ ফুটবলকে ভালবাসি৷ স্ট্রাইকার হিসেবে আমাকে গোল করতে হবে৷ মাঠে নেমে জয়ী হয়ে ফিরতে চাই৷ বিপক্ষে যে দল থাকুক না কেন আমরা ভাল ফল করব৷ আসলে অদম্য মানসিকতা থাকলে, বাধাকে বাধা হিসেবে না দেখলে লক্ষ্যে পৌঁছনো যায়---এটাই প্রমাণ করে দেখালেন তেহসিনা-আলফিসার- সমারা৷