সাঁইথিয়ায় ইয়ূ.পি.আই.এফ-এর রাজ্য সম্মেলন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

সাঁইথিয়া ঃ গত ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর বীরভূম জেলার সাঁইথিয়াতে ইউ.পি.আই.এফ. (ইয়ূনিবার্সাল প্রাউটিষ্ট ইনটেলেকচুয়্যাল ফেডারেশন)-এর রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হ’ল৷ বর্তমানে দেশ জুড়ে অভাবনীয় অর্থনৈতিক সমস্যা, একদিকে মুষ্টিমেয় ধনিক শ্রেণীর হাতে বিপুল পরিমাণ সম্পদ পুঞ্জীভূত ও অন্যদিকে দেশের জনসাধারণের বৃহদংশের নিদারুণ দারিদ্র্য ও বেকার সমস্যা, এন আর সি-র নামে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক বাঙালী নির্যাতন, দেশজুড়ে মানুষের নৈতিক মানের ব্যাপক অবনয়ন---এই সমস্ত সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে ইয়.পি.আই.এফ.-এর কী করণীয় এই সমস্ত পর্যালোচনা করার জন্যে বিশেষ করে পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ১৫০-এর বেশি বুদ্ধিজীবী প্রতিনিধি এই সম্মেলনে যোগদান করেন ও তাঁরা উক্ত সমস্যাবলী নিয়ে তাঁদের মূল্যবান বক্তব্য রাখেন৷ সম্মেলনে উপস্থিত বুদ্ধিজীবী প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন ডেপুটি ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিষ্ট্রেট সোমনাথ বিশ্বাস, ইন্দিরা গান্ধী ওপেন ইয়ূনিভার্সিটির ডিরেক্টর ডঃ বিশ্বজিৎ ভৌমিক, প্রফেসর কৌশিক ভট্টাচার্য, বকুল রায়, তারাপদ বিশ্বাস প্রমুখ বহু শিক্ষক, প্রফেসর, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিশিষ্ট সমাজসেবী প্রভৃতি৷

দুই দিন ব্যাপী এই সম্মেলনে বিশিষ্ট প্রাউট-তাত্ত্বিক আচার্য মন্ত্রেশ্বরানন্দ অবধূত, আচার্য রবীশানন্দ অবধূত প্রমুখ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জ্বলন্ত সমস্যাগুলিকে প্রাউটের মাধ্যমে কীভাবে সমাধান করা সম্ভব হবে সেই সম্পর্কে আগত প্রতিনিধিদের সামনে বিস্তারিত আলোচনা করেন৷

আচার্য মন্ত্রেশ্বরানন্দ অবধূত ক্যাপিট্যালিজমের জন্মদাতা এ্যাডাম স্মিথের অবাধ অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থেকে কীভাবে অর্থনৈতিক শোষণ চরম রূপ নিতে থাকে, কীভাবে মার্কসবাদের উদ্ভব হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন৷ তিনি মার্কসবাদের ত্রুটিগুলোর ওপর বিস্তারিত আলোকপাত করে দেখান---কী কারণে রাশিয়া ও পূর্ব ইয়ূরোপের বিভিন্ন দেশে কমিউনিষ্ট সরকারগুলির পতন হ’ল৷ তিনি বলেন, বর্তমান চীনে নামে মাত্র কমিউনিষ্ট সরকার, কিন্তু কমিউনিষ্ট অর্থনীতির বিন্দুমাত্র অবশিষ্ট নেই সেখানে৷ প্রকৃতপক্ষে কমিউনিজমের অপমৃত্যু ঘটেছে৷ তাই ঐতিহাসিক কারণেই বিশ্বজুড়ে সামাজিক-অর্থনৈতিক আদর্শের চরম শূন্যতা পূরণ করতেই ইতিহাসের অমোঘ নিয়মে প্রাউটের আবির্ভাব৷

আচার্য রবীশানন্দ অবধূত বলেন পুঁজিবাদ ও মার্কসবাদ নয়, নিপীড়িত মানবতার মুক্তির পথ একমাত্র প্রাউট৷ তাই আজ ইউ.পি.আই.এফ-এর প্রধান কর্তব্য হ‘ল এই প্রাউটের আদর্শের ব্যাপক প্রচার৷ এই জন্যে সর্বত্র সিম্পোজিয়াম, আলোচনাচক্র প্রভৃতির আয়োজন করার ওপরে তিনি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন৷ রাজ্য সম্মেলনে নূতন করে ১২ জনের ইয়ূ.পি.আই.এফ-এর রাজ্যকমিটি তৈরী করা হয়৷ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেলেন শ্রীবিশ্বজিৎ ভৌমিক মহাশয়, আর সেক্রেটারী হিসেবে নির্বাচিত হলেন শ্রীতাপস সিন্হা৷

সম্মেলনের ব্যবস্থাপনায় ছিলেন আচার্য কৃষ্ণস্বরূপানন্দ অবধূত (ফেডারেশন সেক্রেটারী) ও তাঁর সঙ্গে সহযোগিতা করেন সোমনাথ দত্ত, বাদল দলুই, জগন্নাথ দাস, চরণ গরাঞ ও স্থানীয় প্রাউটিষ্টবৃন্দ৷