সদগুরুর শক্তি সম্পাত ও মাইক্রোবাইটাম

লেখক
শ্রীসমরেন্দ্রনাথ ভৌমিক

আজকের প্রবন্ধের আলোচনার বিষয় হ’ল---সদগুরু কীভাবে মানুষের শরীরে মাইক্রোবাইটামের সাহায্যে শক্তি সম্পাত করেন৷

পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম প্রয়োগ করেন পরমপুরুষ (সদগুরু) কিন্তু নেগেটিভ মাইক্রোবাইটাম সাধারণতঃ প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারাই ছড়ায়৷ সৎসঙ্গের মাধ্যমেও পজেটিভ মাইক্রোবাইটার উপস্থিতি ঘটে৷ পরমপুরুষ তথা সদগুরুর বিশেষ কৃপায় মানুষের শুভবুদ্ধির বা বৃত্তির ক্রিয়াশীলতা ক্রমশঃ বাড়ানো যায় অথবা ক’মে যাওয়া শুভবৃত্তিগুলোর ক্রিয়াশীলতাকে বাড়ানো যেতে পারে৷

গুরু যখন শিষ্যের আন্তরিক প্রয়াসে সন্তুষ্ট হন, তিনি তখন কৃপাপরবশ হয়ে পজেটিভ মাইক্রোবাইটামের সাহায্যে শুভবৃত্তিগুলোর ক্রিয়াশীলতা বাড়িয়ে দেন আর আর অশুভ বৃত্তির প্রভাবগুলোকে কমিয়ে দেন৷ কিন্তু কিভাবে এই শুভ বুদ্ধির উন্মেষ বা অভিব্যক্তি ঘটে? পরমপুরুষ কোন সাধক বা শিষ্যের ওপর সন্তুষ্ট হলে কৃপা ক’রে সেই শিষ্য বা সাধকের সমস্ত চক্রকে পজেটিভ মাইক্রোবাইটামের সাহায্যে বিশেষ শক্তি সম্পাত ক’রে চক্রগগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত গ্রন্থি-উপগ্রন্থিগুলোকে উজ্জীবিত করেন৷ এর ফলে ওই গ্রন্থি ও উপগ্রন্থিগুলো হরমোন নির্গত ক’রে শুভবুদ্ধিকে জাগরিত করে ও শুভবুদ্ধিকে বাড়িয়ে দেন৷ তাই আনন্দমূর্ত্তিজী তাঁর প্রবচনের মধ্যে বলেছেন---পরমপুরুষের কাছে যদি কিছু চাইতেই হয়, তা হ’ল তাঁর’ আশীর্বাদ ও শুভবুদ্ধি’৷ তাই বেদে বলা হয়েছে---‘স নো বুদ্ধ্যা শুভয়া সংযুক্ত৷’ অর্থাৎ পরমপুরুষ যেন আমার বুদ্ধিকে শুভের সঙ্গে সংযুক্ত রাখেন৷

তাই দেখা যাচ্ছে যে, পরমপুরুষকে (সদগুরু) আন্তরিক প্রয়াসে সন্তুষ্ট করার জন্য নিষ্ঠা ও ভক্তির ভাব নিয়ে সাধনা ক’রে যেতে হবে, তবেই সদগুরুর কৃপা মিলবে৷ আর কৃপাপরবশ হয়ে সদগুরু পজেটিভ মাইক্রোবাইটামের সাহায্যে চক্রের ওপর বিশেষ শক্তি সম্পাত করে শুভশক্তিকে বাড়িয়ে দেবেন৷ সুতরাং যে মানুষ যত বেশী নিষ্ঠা ও ভক্তির সঙ্গে সাধনা করে সে মানুষ ততই সদগুরুর কৃপাধন্য হবে ও এই কৃপাই সাধককে চরম লক্ষের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে৷ এই জন্যই বলা হয়---‘গুরুকৃপাহি কেবলম্’৷ তাঁর কৃপাধন্য হওয়াটাই জীবনের শেষ কথা ও সার কথা৷

গুরু কৃপা প্রসঙ্গে একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করছি৷ সারা পৃথিবীর মধ্যে বাবা ১৫৫ জনকে মাইক্রোবাইটাম সাধনা শিখিয়েছেন৷ ১৯৮৮ সালের ডিসেম্বর মাসে আচার্য পরমেশ্বরানন্দ অবধূতজী এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে মাইক্রোবাইটাম সাধনা শিখেছিলেন৷ ভয়ঙ্কর বলা হচ্ছে এই জন্য যে, ওই দাদা ওই সময় এক অদ্ভুত নেগেটিভ মাইক্রোবাইটাম দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন৷ এই ভয়ঙ্কর ব্যাধিটি সম্পর্কে বাবা বলেছিলেন--- ‘যদি সাধারণ কেউ এই ব্যাধির ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হয় তবে সে তৎক্ষণাৎ পাগল হয়ে যাবে আর তার স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়ে যাবে৷ ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে সে প্রাণ হারাবে৷’ পরমেশ্বরান্দজীর এই রোগই হয়েছিল৷ দাদা এক অসহনীয় বেদনায় কাতর হয়ে মৃত্যুর দিনের জন্যে প্রার্থনা ক’রে যাচ্ছিলেন৷ কিন্তু পরমারাধ্য করুণাময় বাবা পরমেশ্বরানন্দজীর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে দাদাকে আশীর্বাদ ক’রে বলেছিলেন---Try to win an iota of His grace’ (তাঁর কৃপার একটি কণা পাবার চেষ্টা কর) রোগ ব্যাধি কেন, তোমার জীবনটাই উদ্ধার হয়ে যাবে৷

তাই প্রভাতসঙ্গীতে বলা হয়েছে---

তোমার তরে প্রদীপ জ্বালা তোমার তরেই গাঁথা মালা৷

তোমায় ভেবে বেঁচে থাকা তোমায় ভেবে হই উতলা৷৷

অরূপ তুমি রূপে এলে রূপের ডালি সাজিয়ে দিলে৷

সব কিছুতেই প্রীতি ঢেলে চললো তোমার অশেষ চলা৷৷

তোমার কৃপার একটি কণা তৃপ্ত করে সব এষণা৷

মুক্ত পথে আনাগোনা জানায় প্রভু তোমার লীলা৷৷

---প্রভাতসঙ্গীত ২৬৯৯৷