ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জোটের জয়ের পর আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি’র অবহেলে জয়ের যে সম্ভাবনা জনসাধারণের সামনে প্রকটিত হচ্ছিল, সেই সম্ভাবনা চরম আঘাত পেল সদ্য অনুষ্ঠিত বিহার ও উত্তরপ্রদেশে উপনির্বাচনের ফলাফলে৷ যে উত্তরপ্রদেশের বিগত বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপি জোট জয়লাভ করেছিল, সেই উত্তরপ্রদেশের সদ্য অনুষ্ঠিত দুটি লোকসভা উপনির্বাচনে বিজেপি জোট কুপোকাৎ হয়ে গেল৷
উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে বিজেপি ৩০ বছরে কোনও দিন পরাজিত হয়নি৷ ওই আসনের সাংসদ ছিলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য নাথ৷ গোরক্ষপুর মঠের মহান্তও তিনি৷ তাছাড়া তিনি বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী৷ কিন্তু তবুও সেই আদিত্যনাথের ছেড়ে যাওয়া আসনটিকেই বিজেপি ধরে রাখতে পারল না৷
অপর লোকসভা কেন্দ্র উত্তরপ্রদেশের ফুলপুরে সাংসদ ছিলেন বর্তমান উপমুখ্যমন্ত্রী বিজেপি’র কেশব প্রসাদ শর্মা৷ সদ্য অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে এই আসনটিও বিজেপি ধরে রাখতে পারল না৷ এটা সম্ভব হয়েছে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির জোট হওয়ার ফলে৷ তাই এর থেকে এটাই এখন স্পষ্ট হয়ে উঠছে, বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হলে বিজেপি জোট ধরাশায়ী হবে৷
লক্ষণীয় ব্যাপার, উত্তরপ্রদেশে যেমন বিজেপির পরাজয় হ’ল, তেমনটি বিহারেও জেহানাবাদ বিধানসভা আসন ও আরারিয়া লোকসভা লালুপ্রসাদের যাদবের আর.জে.ডি লোকসভা আসনে জয়ী হয়েছে৷ বিজেপি জোট এই দুটি আসনেও ধরাশায়ী হয়েছে৷ বিহারে আর জে ডির সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হয়েছিল৷ একমাত্র ভাবুয়া বিধানসভা আসনে জিতেছে বিজেপি৷
দেখা যাচ্ছে লালুপ্রসাদ জেলবন্দী থাকা সত্ত্বেও তাঁর পার্টির ভোট ব্যাঙ্ক অটুট আছে৷ অপরদিকে নীতিশকুমারকে বিজেপি জোটে টেনেও কোন লাভ করতে পারল না৷
তাই উপনির্বাচনের ফলাফল যেন সুস্পষ্টভাবে এইটাই ঘোষণা করছে যে, আগামী ২০০৯তে দেশজুড়ে বিরোধীদের জোট (আর তারই সম্ভাবনা) বা তৃতীয় ফ্রণ্ট তৈরী হওয়া মানে তা বিজেপির পক্ষে অশনি সংকেত৷