বারাসাত ঃ সাম্প্রতিককালে দেখা যাচ্ছে, উত্তর ২৪ পরগণার বারাসাত কলেজে দু’গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ ক্রমশঃ রক্তাক্ত সংঘর্ষে পরিণত হচ্ছে৷ আগে বামফ্রন্ট আমলে এখানে সি.পি.এমের ছাত্র সংঘটন এস.এফ.আই-এর একচেটিয়া দাপট ছিল৷ এস.এফ. আইয়ের ছেলেরা বিরোধীদের ওপর হামেশাই হামলা করত৷
তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে এখন এখানে তৃণমূল ছাত্রপরিষদ-ই সংসদ দখল করেছে৷ এখন অন্যেরা নেই বললেই চলে কিন্তু ছাত্র সংঘর্ষের ট্র্যাডিশন সমানে চলছে৷ এখন তৃণমূল ছাত্রপরিষদেরই দু-গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে ৷ এক গোষ্ঠী উত্তর ২৪ পরগণার জেলা সভাপতি পারমিতা সেনের ও অপর গোষ্ঠী প্রাক্তন সহ সভাপতি চয়ন দাসের ৷ দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ইদানিং সংঘর্ষের ফলে বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে৷
এই অবস্থায় এখন বিদ্যাস্থানে বিদ্যাচর্র্চর চেয়ে রাজনীতি চর্র্চটাই বেশী করে হচ্ছে৷ ফলে শিক্ষার মান ধীরে ধীরে তলানীতে ঠেকেছে ৷ বলা বাহুল্য, গোটা রাজ্যে মোটামুটি এই একই পরিস্থিতি৷ দূষিত রাজনীতি প্রায় সমস্ত শিক্ষাকেন্দ্রে বিশেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে দলীয় রাজনীতির কুস্তির আখড়াতে পরিণত করেছে৷
‘প্রাউট’ দর্শনের প্রবক্তা শ্রদ্ধেয় শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার বলেছেন, দলীয় রাজনীতির প্রভাব থেকে শিক্ষাক্ষেত্রকে সম্পূর্ণ মুক্ত রাখতে হবে৷ স্কুল কলেজের পরিচালনার ভার দলীয় সরকারের হাতে থাকার জন্যে প্রতিটি দল চায় অপরিণত পড়ুয়াদের মধ্যে নিজস্ব ক্যাডার তৈরী করতে৷ এই যুব শক্তিকে পার্টির নেতারা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে কাজে লাগান৷ এই কারণে সমস্ত শিক্ষাকেন্দ্রগুলির পরিচালনার ভার নিরপেক্ষ শিক্ষাবিদদের দ্বারা তৈরী বোর্ডের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত৷ তাদের হাতে থাকবে এগুলির পরিচালনার ভার, এগুলির সিলেবাস তৈরী, পরীক্ষা গ্রহণ প্রভৃতি সর্বক্ষেত্রেই থাকবে তাঁদের একাধিপত্য৷ সরকার শুধু এগুলির আর্থিক ভার বহন করবে৷ জনগণের কাছ থেকে কর হিসেবে দেওয়া অর্থ থেকে শিক্ষার জন্য অর্থ বরাদ্দ হবে৷ তাই, যেহেতু সরকার টাকা দিচ্ছে, তাই সরকার অর্র্থৎ ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল শিক্ষাক্ষেত্রে নিজেদের অধিকার কায়েম করবে, এ যুক্তি চলবে না৷
বিদ্যাশিক্ষার জন্য যে শান্ত পরিবেশ থাকা উচিত, শিক্ষাকেন্দ্রগুলিতে সেই শান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতেই হবে৷ এজন্যেই দলীয় রাজনীতির কবল থেকে শিক্ষাক্ষেত্রকে মুক্ত রাখা একান্ত প্রয়োজন৷ নাহলে গোটা সমাজের ক্ষতি৷