কল্যাণপুর ঃ গত ৬ই সেপ্ঢেম্বর কল্যাণপুর ব্লকের দ্বারিকাপুর বাজারে আমরা বাঙালীর কল্যাণপুর ব্লক কমিটির উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ৷ উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন--- রাজ্য সাংঘটনিক সচিব কেশব মজুমদার ও খোয়াই জেলা সচিব গৌতম দেব৷ গৌতম দেব গভীর দুঃখের সঙ্গে বলেন যে, এ রাজ্যে কমিউনিষ্ট সংস্কৃতিতে কলেজগুলো বিদ্যাশিক্ষা মন্ডপের পরিবর্তে শাসক দলীয় ক্যাডার তৈরীর আর মার-দাঙ্গার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে৷ এরই প্রমাণ পাওয়া গেছে , সদ্য আগরতলার বিবি.এম কলেজে৷ এর পূর্বেও বহুবার বহু কলেজে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রারা পড়াশুণার মন নিয়ে কলেজে এসে রক্তপাতের মহড়া দেখেই ভড়কে যেত৷ তাই এর অবসানের জন্যে ব্যাপক গণচেতনা জাগানোর আহ্বান জানান৷ কেশব মজুমদার বলেন যে, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছেন ত্রিপুরার ভোট ব্যাঙ্ক তৈরী করতে তাই কেন্দ্রীয় উপজাতি মন্ত্রী শ্রী ওরাম এসে বলে গেছেন, রাজ্যের এডিসি এলাকাজুড়ে রাজ্য পরিষদ দিতে কেন্দ্রের চিন্তাভাবনার কথা৷ কিন্তু রাজ্যবাসীকে ভাবতে হবে যে, রাজ্য ও রাজ্যপরিষদের মধ্যে খুব একটা তফাৎ থাকবে না৷ তাই আমরা বাঙালী এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে৷
এরপর দিন অর্র্থৎ ৭ই সেপ্ঢেম্বর দলের অপর এক বিক্ষোভ সভা হয়েছে তেলিয়ামুড়া ব্লকের মোহর ছোড়া বাজারে৷ এতে সভাপতিত্ব করেন ব্লক সচিব গোপাল সরকার৷ বক্তারা ছিলেন কেশব মজুমদার , জেলা কমিটির সদস্যদ্বয় ব্রজেন্দ্রচন্দ্র দাস ও বিশ্বনাথ ঘোষ৷ শ্রী মজুমদার খুবই অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন যে, কেন্দ্রীয় সরকারের সার্কুলার অনুসারে রাজ্যের শিক্ষা দফতরে নিযুক্ত অনেক শিক্ষক -শিক্ষিকাই ছাঁটাই হয়ে যাবার উপক্রম দেখা দিয়েছে৷ এতে চাকুরী হারারা তো বিপন্ন হবেনই , অধিকন্তু অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হতে যাচ্ছে রাজ্যের অগণিত ছাত্র-ছাত্রারা৷ তাদের বার্ষিক পরীক্ষাও সামনে৷ অথচ এজন্যে সম্পূর্ণ দায়ী রাজ্যের অপদার্থ ও উদাসীন বাম সরকার৷ অপর দুই বক্তাও রাজ্য ভাঙ্গার ও রাজ্য পরিষদ দেওয়ার পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেন৷
তুলাশিখর ঃ গত ২রা সেপ্ঢেম্বর, আমরা বাঙালী দলের খোয়াই ব্লক কমিটির উদ্যোগে তবলাবাড়ি, তুলাশিখর ব্লকে এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়৷ উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন --- গৌতম দেব, বিপ্লব দাস, বিপুল দেব প্রমুখ৷ রাজ্য কমিটির ছাত্র যুব-নেতা বিপ্লব দাস শিক্ষাক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন বাম সরকার যে নৈরাজ্য নিয়ে এসেছে তার তীব্র সমালোচনা করেন৷ তিনি বলেন যে, রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনগুলি সিপিএমের গণ সংঘটন এস.এফ.আই.এর দৌলতে দলীয় রাজনীতির আখড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ সেখানে এখন আর পড়াশুণা হয় না, হয় দলীয় রাজনীতির পাঠ ও বিরোধীদলের ছাত্র-ছাত্রাদের ঠেঙ্গাবার প্রশিক্ষা৷ অন্যদিকে দীর্ঘসময় ধরে ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও কেন ত্রিপুরাতে শিল্প কারখানা গড়ে উঠল না, কেন বেকার সমস্যায় ত্রিপুরা রাজ্য দেশের মধ্যে দেশের মধ্যে শীর্ষে তা নিয়েও তিনি বাম সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন৷ তিনি বলেন যে, ত্রিপুরার বেকারদের ১০০ শতাংশ কর্মসংস্থানের গ্যারান্টি দিতে হলে ডান, বাম কোনো দলের দ্বারাই হবে না৷ তাই একমাত্র সম্ভব প্রাউটদর্শন মোতাবিক ত্রিপুরার কৃষিজ বনজ ও খনিজ সম্ভাবনাগুলি কাজে লাগিয়ে ব্লক ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনার মাধ্যমে৷ তাছাড়া, খোয়াই জেলা কমিটির সচিব গৌতম দেব আই.পি.এফ.টি অযৌক্তিক ত্রিপ্রাল্যান্ড গঠনের দাবীর তীব্র বিরোধিতা করেন৷ সেই সঙ্গে বিজেপি মুখে বিরোধিতা করলেও ক্ষমতা দখলের স্বার্থে স্টেট কাউন্সিলে ঘোষণা যে ঘুরিয়ে আলাদা ত্রিপ্রাল্যান্ডের দাবীকেই মেনে নেওয়া তাও উপস্থিত সবাইকে স্মরণ করিয়ে ভবিষৎ বাঁচার স্বার্থে আমরা বাঙালীর আন্দোলনকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানায়৷
মাইগঙ্গা বাজার ঃ গত ১৩ই সেপ্ঢেম্বর বিকাল ৫ টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত মাইগঙ্গা বাজারে ( তেলিয়ামুড়া) আমরা বাঙালী দলের একটি সভা অনুুষ্ঠিত হয় উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন --- সহ সচিব শ্রী গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল, সাংঘটনিক সচিব শ্রী কেশব মজুমদার, ব্লক সচিব শ্রী ব্রজেন্দ্র দাস, স্থানীয় নেতা শ্রী বিশ্বনাথ ঘোষ প্রমুখ৷ উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের রাজ্য কমিটির সদস্য শ্রী গোপাল সরকার মহোদয়, উক্ত সভায় ত্রিপুরার রাজনৈতিক অস্থির পরিস্থিতিতে সর্বস্তরের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান রাখেন৷ বাঙালীরা ঐক্যবদ্ধ না হয়ে নিজেদের অস্তিত্বের কথা ভুলে গিয়ে গিরগিটির মতো রঙ না পাল্টে ভবিষ্যতে অন্ধকারে যাতে ডুবে না যায় সেই দিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন৷ অন্যদিকে গত কয়েক দশকে আমরা বাঙালীর ত্রিপুরার বামশাসনে সর্বনাশা পরিস্থিতির কথা ও আমরা বাঙালী আন্দোলনের মূল্যবোধের কথা জনগণকে অবহিত করেন৷