স্বাস্থ্য বিজ্ঞান

শ্বিত্র (শ্বেত কুষ্ঠ বা ধবল)

লক্ষণ ঃ শ্বিত্র রোগটি কুষ্ঠের অন্তর্ভুক্ত হলেও জীবনীশক্তির পক্ষে ততটা ঘাতক নয় ও রসস্রাবী নয় বলে সংক্রামকও নয়৷ সপ্ত ধাতুর বিকৃতির ফলে যে কুষ্ঠ সৃষ্ট হয় তা’ মানুষের শরীর ও মনে অল্প কালের মধ্যেই মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করে, কিন্তু এই শ্বেত কুষ্ঠ বা শ্বিত্রে সাধারণতঃ রক্ত, মাংস ও মেদ কেবলমাত্র এই তিনটি ধাতুই বিকৃতিপ্রাপ্ত হয়৷

বাতরোগ

রোগের লক্ষণ ঃ রক্তে অম্লদোষ ৰেড়ে গেলে বাত রোগের সৃষ্টি হয়৷ এখানে বাতরোগ বলতে বিশেষ করে গ্রন্থিবাতের ( গেঁটে বাত) কথাই ৰলা হচ্ছে৷

ঔষধ ঃ এই বাতরোগ কোন ঔষধের বহিঃপ্রয়োগে খুব ভাল ভাবে সারে না৷ তবে সাময়িক ভাবে উপশম হয়৷ বাতরোগে মালিশ জাতীয় বস্তুর মধ্যে যেগুলি উত্তম মানের তাদের অনেকেরই উপাদান হ’ল ধুতুরা ফল৷ কণ্টকযুক্ত ধুতুরা ফল খাদ্য হিসেবে কথঞ্চিৎ বিষাক্ত হলেও বহিঃপ্রয়োগে ভাল ফল দেয়৷ তবে কৃষ্ণ ধুতরোর ফলেতে এই গুণ একটু বেশী৷

অজীর্ণ রোগে নিরাময়

অজীর্ণ রোগ নিজে প্রাণঘাতক নয় কিন্তু এর ফলে অনেক প্রাণঘাতক রোগের সৃষ্টি হতে পারে ও বৈবহারিক জগতে এই ব্যাধি কষায় বৃত্তিকে বাড়িয়ে দেবার ফলে মানুষ অত্যন্ত খিটখিটে হয়ে পড়ে৷ অজীর্ণ রোগ থেকে পাকস্থলীর, অন্ত্রের ও মলনাড়ীর বিভিন্ন ধরণের ক্ষত, কোষ্ঠকাঠিন্য ও জটিল আমাশয় সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা পূর্ণ মাত্রায় থেকে যায়৷

চিকিৎসা ঃ

প্রাতে ঃ উৎক্ষেপ মুদ্রা, ময়ূরাসন, পদহস্তাসন, শয়ন বজ্রাসন, আগ্ণেয়ী প্রাণায়াম৷

সন্ধ্যায় ঃ (যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য) অগ্ণিসার, দীর্ঘপ্রণাম, যোগাসন বা যোগমুদ্রা, ভুজঙ্গাসন৷ (যাদের তরল ভেদ) অগ্ণিসার ও সর্বাঙ্গাসন, আগ্ণেয়ী মুদ্রা ও আগ্ণেয়ী প্রাণায়াম৷

স্বাস্থ্য ও কৌশিকী নৃত্য

মানুষের অস্তিত্ব ত্রি–স্তরীয় অর্থাৎ এর তিনটে স্তর ত্রব্ধব্জ্ত্রব্ধব্ভপ্প রয়েছে– শারীরিক ত্নড়ম্ভব্দন্ন্তুত্রপ্ত্, মানসিক ত্নড়ম্ভন্তুড়ন্ন্তুগ্গ ও আধ্যাত্মিক ত্রহ্মন্ব্জন্ব্ধব্ভ্ত্রপ্৷ এই যে তিনটে স্তর এদের কোনটিকেই অবজ্ঞা করা যায় না৷ শারীরিক স্তরের চেয়ে মানসিক স্তরের মহত্ত্ব অধিক, কিন্তু তাই বলে শারীরিক স্তরটাকেও ত্নড়ম্ভব্দন্ন্তুত্রপ্ত্ ব্দব্ধব্জ্ত্রব্ধব্ভপ্প উপেক্ষা করা যায় না৷ ঠিক তেমনি মানসিক স্তর ত্নব্দম্ভন্তুড়ন্ন্তু ব্দব্ধব্জ্ত্রব্ধব্ভপ্প অপেক্ষা আধ্যাত্মিক স্তরের ত্রহ্মন্ব্জন্ব্ধব্ভ্ত্রপ্ ব্দব্ধব্জ্ত্রব্ধব্ভপ্প গুরুত্ব বেশী কিন্তু মানসিক স্তরটাও ত্নব্দম্ভন্তুড়ন্ন্তু ব্দব্ধব্জ্ত্রব্ধব্ভপ

বৈধব্য ও সতীদাহ

বিচার–বুদ্ধি–মনীষার্ উন্মেষের ফলে প্রাচীনকালের যে সমস্ত অনুষ্ঠান বা বিধি বর্জিত হয় তাকে ‘ক্রিয়ালোপ’ বলে৷ পরিবেশগত চাপে বা প্রাকৃতিক কারণে যে সকল রীতি–বিরাজ বন্ধ হয়ে যায় তাকেও ‘ক্রিয়ালোপ’ বলে৷ এককালে কুসংস্কারের ফলে ভারতের মানুষ সদ্যবিধবা নারীকে জীবন্ত অবস্থায় স্বামীর চিতায় পুড়িয়ে মারত৷ আজ সে প্রথা অবলুপ্ত৷ আমি দেখেছি বর্দ্ধমান জেলার যে সকল গ্রামে তথাকথিত উচ্চবর্ণীয় মানুষেরা বেশী সংখ্যায় বাস করেন, বিশেষ করে যে সমস্ত গ্রামে ব্রাহ্মণ–কায়স্থের বাস সেই সমস্ত গ্রামে এমন কিছু কিছু  জায়গা আছে যাকে বর্দ্ধমানের স্থানিক ভাষায় ‘আগুন–খাকী’ বলা হয়৷ আগুন–খাকী মানে যে সব নারী জীবিত অবস্থায় আগুন খেয়েছিলেন অ

পোয়াল ছাতু প্রসঙ্গে

তোমরা অনেকেই নিশ্চয় পোয়াল ছাতু দেখেছ–অনেকেই হয়তো বা খেয়েছ৷ রাঢ়ের এটি একটি জনপ্রিয় সুখাদ্য৷ পোয়াল ছাতুকে কোথাও কোথাও ভুঁইফোঁড়ও বলা হয়৷ ইংরেজীতে বলা হয় mushroom. শীতপ্রধান–গ্রীষ্মপ্র্ নির্বিশেষে বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই এই ছত্রাক বর্গীয় বস্তুটি কোথাও সোজাসুজি খাদ্য হিসেবে, কোথাও বা মাংসের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷ সংস্কৃতে এর নাম ‘কবক’৷ জিনিসটি নিরামিষ হলেও মাংসের গুণসম্পন্ন৷ তাই সাত্ত্বিক আহার যাঁরা করেন, তাঁদের পক্ষে এটি খাওয়া নিষিদ্ধ৷ রাঁধলে স্বাদও হয় মাংসের মত৷ পৃথিবীর কোথাও কোথাও জিনিসটিকে না জানিয়ে মাংসের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷

খাদ্যরস

খাদ্যরস সাধারণতঃ ছয় প্রকারের৷ এই ষড়রস হচ্ছে–তিক্ত, কটু, কষায়, লবণ, অম্ল ও মধুর৷ তন্ত্র–ভারতীয় ভেষজবিজ্ঞান এই হিসাবকেই অনুসরণ করে৷ প্রথম পাতে খেতে হয় তিক্ত (যেমন পলতা, শুক্তো, নিম–বেগুন, শিউলি পাতার ঝোল প্রভৃতি)৷ দ্বিতীয় পাতে খেতে হয় কটু অর্থাৎ ঝাল (যেমন একটু বেশী লঙ্কা বা গোলমরিচ বা পিপুল দিয়ে তৈরী রান্না–আলু–মরিচ, নিরামিষ ঝাল, ৰড়ির ঝাল)৷ তৃতীয় পাতে খেতে হয় কষায় জিনিস (যেমন ডুমুর, মোচা, থোড়, কাঁচকলা প্রভৃতি)৷ চতুর্থ পাতে খেতে হয় লবণযুক্ত জিনিস (যেমন অচার, পাঁপড়, নোনতা পোলাও, নিমকি, সিঙ্গাড়া প্রভৃতি)৷ পঞ্চম স্তরে খেতে হয় অম্লরস যুক্ত খাদ্য (অম্বল, চাটনি, টক, তেঁতুল, আমড়া, জলপাই, করমচা, কামরা

শশা

কিডনী ও লিবারের রোগে ঃ বর্ষাতী ও শীতের শশা–এই উভয় শশারই ঔষধীয় ও স্বাস্থ্যগত মূল্য আছে৷ কিডনী ও লিবারের ওপরে এর শুভ প্রভাবই রয়েছে৷ তবে অতি মাত্রায় খেলে সব কিছুই খারাপ৷ বর্ষাতী শশা সরস, মিষ্ট রস–যুক্ত, কষা ভাব অল্প–তাই মুড়ি ও চিড়ে ভাজার সঙ্গে অত্যন্ত মুখরোচক৷ জলখাবার হিসেবে চিঁড়ে ভাজার সঙ্গে খেলে স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ভাল৷ মুড়ির সঙ্গে খেলে স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর নয়৷ বর্ষাতী শশার সঙ্গে মুড়ির কোন দোষ নেই, অথচ স্বাদেও ভাল৷

আমাশয়

লক্ষণ ও কারণ ঃ পাচক রসের ত্রুটি নিবন্ধন মল কাঠিন্য প্রাপ্ত হলে তা যথাবিহিত ভাবে নিঃসারিত হতে চায় না৷ মলের সেই কাঠিন্যকে বলা হয় কোষ্ঠকাঠিন্য৷ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে কোষ্ঠকে পরিষ্কার করবার জন্যে প্রাকৃতিক নিয়মে উদরে এক প্রকার হড়হড়ে বস্তু (gelatinous substance) তৈরী হয়ে যায়৷ এই হড়হড়ে বস্তুকে সংস্কৃত ও বাংলায় ‘আম’ বলা হয়৷ হিন্দীতে ‘আঁব’ (আঁও) বলে৷ এই ‘আম’ একটি তৎসম শব্দ যার ভাবারূঢ়ার্থ হ’ল কাঁচা জিনিস৷ যেমন ‘আম–মাংস’ মানে কাঁচা মাংস৷ অতিরিক্ত কাঁচা ফল খেলে (কাঁচা মানে না–রাঁধা), অতিরিক্ত কোষ্ঠকাঠিন্য আনতে পারে এমন জিনিস খেলে (যেমন চিঁড়ে, যবের মণ্ড, ঘি কম ব্যবহার করে আতপ চাল, অতি মাত্রায় পুঁই শাক)