ভাষা সংক্রান্ত

ঞ ঃ (১) ‘এ্‌’ (ইঁ) একটি সুপ্রাচীন ধাতু৷ ধাতুটি বিভিন্ন অর্থে প্রচলিত৷ ‘ঞ’ ধাতুর একটি অর্থ ‘জ্বল্‌ জ্বল্‌ করা’৷ পৃথিবী থেকে আমরা যে, জ্যোতিষ্কগুলিকে দেখি তাদের মধ্যে শুকতারা সবচেয়ে বেশী জ্বল্‌ জ্বল্‌ করে৷ সন্ধ্যা রাত্তিরে এই শুকতারাকে ৰলি ‘সন্ধ্যাতারা’ আর শেষ রাত্তিরে ৰলি শুকতারা৷ আসলে এটি তারাই নয়, সূর্যের একটি গ্রহ.....শুক্রগ্রহ venus) ৷ শুক্র> শুক্ক> গুক৷ মনে রাখা দরকার যে ‘শুকতারা’য় ব্যবহৃত ‘শুক’ শব্দটি তৎসম নয়, তদ্ভব৷ সংস্কৃতে ‘শুক’ শব্দটির অর্থ ‘যে পাখী কথা ৰলে’৷ তাই জ্বল্‌ জ্বল্‌ করা অর্থে ‘ঞ’ ধাতু+ ‘ড’ প্রত্যয় করে আমরা ‘ঞ’ শব্দটি পাচ্ছি যার মানে ‘শুক্রগ্রহ’৷ জ্যোতিষিক মতে জড়জগত

ডম/ডোম

 ‘ডম্‌’ ধাতু+ অচ্‌ প্রত্যয় করে ‘ডম’ শব্দ নিষ্পন্ন হচ্ছে৷ ‘ডম’ শব্দটি ব্যুৎপত্তিগত স্বীকৃতি পাচ্ছে কিন্তু ‘ডোম’ শব্দটি সে স্বীকৃতি না পেলেও বৈবহারিক স্বীকৃতি পাচ্ছে৷ তাই সংস্কৃতে ডম/ডোম দুই-ই শুদ্ধ৷ ‘ডম্‌’ ধাতুর অর্থ বাদ্যযন্ত্রে ধবনি সঞ্চার করা৷ প্রাচীনকালে যারা ৰাঁশ কেটে ৰাঁশী তৈরী করত, ‘ধবনিসৃষ্টিকারী’ এই অর্থে তাদের ‘ডম’ বা ‘ডোম’ ৰলা হত৷ ডোম-রমণীরা বাঁশের ট্যাচারি দিয়ে নবজাত শিশুর নাড়ি কেটে দিতেন৷ ৰাঁশের সঙ্গে ডোমেদের ছিল এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক৷ এখনও লোকে ৰলে থাকে ‘বাঁশ’ ৰনে ডোম কাণা৷ প্রাচীন ৰাংলায় ডোমের জন্যে ‘ডোম্ব’ (পুং) ও ‘ডোম্বী’ (স্ত্রী) শব্দের ব্যবহার ছিল৷

(৯) আবার ‘যুজ’+ ‘ঘঞ’ প্রত্যয় করে ‘যোগ’ শব্দ পাচ্ছি৷ ‘যুজ্‌’ ধাতুর অর্থ হ’ল যোগ করা, জোড়া লাগানো, যোগ্যতায় প্রতিষ্ঠিত করা, যোগ্যতা অর্জন করা৷ দু’টি আৰ+ তিনটি আঁ = পাঁচটি আঁৰ৷ এক্ষেত্রে আঁৰগুলির প্রত্যেকটির পৃথক পৃথক অস্তিত্ব থাকছে৷ এটি যোগ to add, to unite)৷ এই ‘যুজ ধাতু+ ‘ড’ প্রত্যয় করে যে ‘য’ শব্দ পাচ্ছি তার একটি অর্থ হ’ল ‘যুক্ত করা’ to unite)৷

 য ঃ (১) ‘যা’ ধাতু সাধারণতঃ তিনটি অর্থে ব্যবহৃত হয়---যাওয়া বা চলা, নড়াচড়া করা, শান্তিপূর্ণভাবে সঙ্গে থাকা৷ ‘যা’ ধাতু+ ‘ড’ প্রত্যয় করে যে ‘য’ শব্দ পাচ্ছি তার একটি অর্থ হচ্ছে ‘যে চলে’ goer)৷

(২) এই ‘যা’ ধাতু+ ‘ড’ প্রত্যয় করে যে ‘য’ শব্দ পাই তার আর একটি অর্থ হচ্ছে ‘যে নড়াচড়া করে’৷ মনে করো, তুমি চলছ৷ সেক্ষেত্রে তোমাকে ‘য’ ৰলা চলৰে৷ আর তুমি চলছ না কিন্তু হাতে পেন্সিল নিয়ে কিছু লিখছ, তোমার হাত নড়াচড়া করছে, সেক্ষেত্রেও তোমাকে ‘য’ ৰলা চলৰে৷

ৰঃ (১) ‘ড’ প্রত্যয়যুক্ত ‘ৰ’ শব্দটি আমরা পাচ্ছি মুখ্যতঃ ‘ৰণ’ ‘ৰট্‌’ ও ‘ৰল্‌’ ধাতু থেকে৷ ‘ৰণ্‌’ ধাতুর অর্থ ৰনৰন শব্দ করা, ৰোঁ ৰোঁ শব্দ করা---আবার সাধারণ অর্থে যে কোন শব্দ করা৷ জলের অস্তিত্ব তার বিভিন্ন প্রকার ধবনিতে কল্‌-কল্‌-কল্‌, খল্‌-খল্‌-খল্‌, ছল্‌-ছল্‌-ছল্‌, ছলাৎ-ছলাৎ-ছলাৎ, টিক-টিক-টিক, টপ-টপ-টপ, পট্‌-পট্‌-পট্‌, ঝম-ঝম-ঝম ইত্যাদি শব্দের দ্বারা নিষ্পন্ন হয়৷ এই শব্দ-উৎপাদনকারী ঐশ্বরীয় শক্তি বিশেষকে প্রাচীনকালে ৰলা হত ৰরুণ দেবতা৷ তাই ‘ৰণ্‌’ ধাতু+ ‘ড’ প্রত্যয় করে যে ‘ৰ’ শব্দ পাচ্ছি তার ভাবারাড়ার্থ হ’ল ‘ৰরুণ দেবতা’৷

(২) ওই একই অর্থে ‘ৰণ্‌+ ‘ড= ‘ৰ’ ৰলতে ‘জল’কেও ৰোঝায়৷

 ১৯) ‘ভদ্‌’ ধাতুর অর্থ হ’ল ভাল কাজ করা বা শান্তশিষ্টভাবে থাকা৷ (ভদ্‌+ রক্‌ ‘ভদ্র’ করে ভদ্র শব্দ পাচ্ছি যার মানে ভাল (ভদ্র> ভদ্দ> ভল্ল>ভল্লা> ভাইলা> ভালা> ভাল)৷ হিন্দীতে শুভত্ব ৰোঝাতে ‘ভালাঈ’ শব্দ ব্যবহৃত হয়, ওড়িয়ায় ‘ভল’৷ ভদ্রলোক বলতে তাই ভাল মানুষ.....শান্তশিষ্ট মানুষ, যে মানুষটি ভাল কাজ করতে চায় সে৷ ‘ভদ্‌’+ ‘ড’ করে যে ‘ভ’ শব্দ পাই তার একটি অর্থ হ’ল ‘ভাল’৷

আইনা/আয়না ঃ শব্দটি মূলতঃ ফার্সী, ৰাংলা ভাষায় এসেছে মোগল যুগের গোড়ার দিকে-যার মানে ইংরেজীতে mirror, কাচ অর্থেও ‘আয়না’ শব্দের ব্যবহার উর্দু, ফার্সী, পঞ্জাৰী, ডোগরী, কশ্মীরী, পশ্‌তু ভাষায় রয়েছে৷ ‘আয়না’-র খাঁটি ৰাংলা শব্দ হচ্ছে ‘আরশী’ (আরশী একটি খাঁটি তদ্ভব শব্দ, এসেছে মূল শব্দ ‘আদর্শী’ থেকে৷ হিন্দতেও ‘আরসী’ মারাঠীতেও আরসী/আরসা৷ উত্তর ভারতে আরসীপ্রসাদ নামে লোক বিরল নয়৷ মাইকেল মধুসূদন দত্ত লিখেছেন--‘‘সরসী আরশী মোর’’৷

 

(৫) ‘পা’ ধাতুর অর্থ রক্ষা করা To protect+)৷ এই অর্থে যিনি রক্ষক তার জন্যেও তাই ‘পা+ ‘ড’ করে ‘প’ শব্দ ব্যবহার করা যাৰে৷

(৬) ত্রাণ করা (‘ত্রৈ’ ধাতু) অর্থেও ‘পা’ ধাতু ব্যবহৃত হয়৷ তাই বিপদে আপদে যে ত্রাণ করে তার জন্যেও ‘প’ শব্দ ব্যবহার করা যাৰে৷

(৭) সংবর্ধন করা বা লালন করা অর্থে ‘পা’ ধাতুর ব্যবহার রয়েছে ও তদ্বোধার্থে আশ্রয়দাতা বা পালক পিতা বা ‘পিতা’কেও ‘প’ ৰলা হয়৷

(৮) পোষ্যপুত্র বা পোষ্যকন্যার কাছে গৃহীত পিতাও ‘প’৷

বাংলাভাষার উন্নতিকল্পে হুসেনশাহের অবদান স্মরণযোগ্য

প্রণবকান্তি দাশগুপ্ত

উদ্ধৃতি ঃ নোতুন পৃথিবী (আপ্তবাক্য)---‘‘বঙ্গদেশে সংস্কৃত পণ্ডিতেরা বাংলাভাষাকে অবদমন করার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু নবাব হুসেন শাহ বাংলাভাষার উন্নতিকল্পে সব রকমের সাহায্য ও উৎসাহ দিয়েছিলেন৷ তখন ও পর্যন্ত রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত সংস্কৃতেই লিখিত ছিল৷ পরবর্ত্তীকালে কবি কৃত্তিবাস, কবি মালাধর বসু (গুণরাজ খাঁ) যথাক্রমে রামায়ণ মহাভারত ও ভাগবত বাংলায় অনুবাদ করেন৷ সংস্কৃত পণ্ডিতেরা রটিয়ে দেন যে নবাব হুসেন শাহ্‌ নাকি হিন্দুধর্মকে ধবংস করার ষড়যন্ত্র করছেন কারণ হিন্দুদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলিকে সংস্কৃতে না রেখে বাংলায় অনুবাদ করানো হচ্ছে৷ তাঁরা কৃত্তিবাস ওঝাকে সামাজিক বয়কট ও হিন্দুধর্ম থেকে বহিষ্কার করেছিলে

বাংলা বানান সংস্কার

জ্ঞানভিক্ষু

প্রাউট–প্রবক্তা মহান দার্শনিক ঋষি শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার ভাষাতত্ত্ব ও ব্যাকরণ বিজ্ঞানের ওপরও বহু অমূল্য পুস্তক রচনা করেছেন, যা কলকাতা, ঢ়াকা, কল্যাণী প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা অধ্যাপক সহ বিশিষ্ট ভাষাতাত্ত্বিক ও জ্ঞানী গুণীজনের দ্বারা বহুল প্রশংসিত৷ তাঁর রচিত ‘প্রভাতরঞ্জনের ব্যাকরণ বিজ্ঞানে’ (৩ খণ্ড) তিনি বহু প্রচলিত অনেক বাংলা বানানের ভুলত্রুটি বা অর্থবিচ্যুতি দেখিয়ে সে সবের সংস্কার সাধনেও সচেষ্ট হয়েছেন৷ এ ধরনের কিছু বাংলা বানান সম্পর্কে তাঁর অভিমত তাঁর ভাষাতেই প্রকাশ করা হচ্ছে ঃ

গায়ত্ত্রী

(১১) ডব্‌ ধাতুর অর্থ নীচে নাৰা/নীচে পড়ে যাওয়া/জলের তলায় থাকা৷ এই ‘ডব্‌’ ধাতু থেকেই ৰাংলায় ‘ডোৰা’ শব্দ এসেছে৷ মনে করো, তুমি সমতল ভূমির উপর দিয়ে যাচ্ছে৷ হঠাৎ একটু নীচের দিকে পড়ে গেল৷ অর্থাৎ মাটির স্তর একটু নেৰে গেল৷ এই নীচু অংশকেও আমরা তাই ডোবা ৰলি৷ ডোৰাতে যে জল জমে থাকতে হবেই এমন কোন কথা নেই৷ ৰাঙলার কোন কোন অংশ---ৰরিশাল, ফরিদপুর, ডাকা (ঢাকা), ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, আড়িয়ল, চাঁদপুর, কালিকচ্ছ, সরাইল প্রভৃতি স্থানগুলিকে এক কালে ডোবা জায়গা ৰলা হত কারণ ওই সকল স্থান বছরে প্রায় সাত মাস জলের তলায় থাকত ডুৰে থাকত৷ এই অর্থে পূর্ব ৰাঙলার একটি ৰড় অংশকে ‘ডবাক্‌’ বলা হত৷ এই ‘ডবাক থেকেই ডাকা (ঢাকা) শব্দটি

 

(১২) তোমাদের এর আগেই ৰলেছি ‘ডৰ্‌’ ধাতুর একটি অর্থ জলের তলায় ডুৰে থাকা (উত্তর ভারতে ‘ডুৰকি মারণা’)৷ বিভিন্ন ধরণের পচা বস্তু জলের সংস্পর্শে এসে মার্স গ্যাসের সৃষ্টি হয়৷ এই মার্স গ্যাস বুদ্‌বুদ্‌ আকারে জলের তলা থেকে জলের ওপরের স্তরে যখন উঠে আসে তখন বাতাবরণের অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে যে দপ্‌ করে জ্বলে ওঠে৷ জ্বলেই আবার নিৰে যায়৷ একে ইংরেজীতেwillow-the-wisp ৰলা হয়, ৰাংলায় ৰলে ‘আলেয়া’৷ বিহারের কোথাও কোথাও ৰলে ‘পানীকে রাখস’, সংস্কৃতে ৰলে ‘ৰাড়বানল’৷ মনে রেখো, ‘ৰাড়বা’-র মত ‘ৰড়বা’ শব্দটিরও প্রথমটি বর্গীয় ‘ৰ’, দ্বিতীয়টি অন্তঃস্থ ‘ব’৷

বাংলা বর্ণমালায় নোতুন কিছু অক্ষরের সংযোজন

জ্ঞানভিক্ষু

বর্গীয় ৰ ও অন্তঃস্থ ব

 

পূর্ব প্রকাশিতের পর

অন্তস্থ ‘ব’–যুক্ত কিছু শব্দের তালিকা ঃ–

কুলি ঃ অষ্ট্রিক ভাষায় ‘কুলি’ শব্দ দুই অর্থে ব্যবহৃত হয়৷ ৰানানেও কুলি/কুলী দুই-ই চলবে৷ ‘কুলি’ শব্দের একটি অর্থ হ’ল মজুর৷ এই মজুর অর্থে ‘কুলি’ coolie) শব্দটি ইংরেজীতে গৃহীত হয়েছে৷ এটি মোটেই ইংরেজী শব্দ নয়৷ বর্তমানে ‘কুলি’ শব্দটি ইংরেজীতে শ্রমিক ও মুটে-দুই অর্থেই চলে৷ শ্রমিকের নিজস্ব ইংরেজী হচ্ছে ওয়ার্কম্যান Workman) ও ‘মুটে’র ইংরেজী পোর্টার Porter) হ্যাঁ, মজুর অর্থে ৰাংলায় যে শব্দটি চলে সেই ‘মজুর’ শব্দটিও ৰাংলা নয়, এটি এসেছে উর্দু ‘মজ্‌দুর’ শব্দ থেকে৷ (শব্দটি উর্দূতে এসেছে ফার্সী থেকে)৷ শ্রমিক বা মুটে অর্থে যে অষ্ট্রিক ‘কুলি’ শব্দটি চলে তার স্ত্রীলিঙ্গ রূপ ‘কামিন’৷ গ্রাম্য পথ অর্থে ‘কুলি’ শব্

‘গণেশ’ শব্দটির মানে হ’ল জননায়ক---একই অর্থে গণপতি, বিনায়ক৷ মানুষের স্বাভাবিক মনস্তত্ব হচ্ছে এই যে নিজের জিনিসকে সে একটু ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখায়৷ কারো পুকুরের রুই মাছ যদি বারটা মোষের সমান হয় তাহলে তার প্রতিদ্বন্দ্বীর পুকুরের ইলিশমাছ অন্ততঃ চবিবশটি মোষের সমান হবেই তাই নিজের গণপতি বা দলপতি যে একজন হেজিৰেজি লোক নন সেটি দেখাবার জন্যে তার মুখটি করে দেওয়া হয়েছে সর্ববৃহৎ জানোয়ারের মুখের মত অর্থাৎ হাতীর মত৷ এতে নিজের দলপতির শ্রেষ্ঠত্বই বিঘোষিত হচ্ছে, দলপতির চেহারাটি নাদুস নুদুস হলে দলের মর্যাদা অবশ্যই বৃদ্ধি পায়, কারণ তাতে প্রমাণিত হয় যে দলের মধ্যে প্রাচুর্যের তথা ঐশ্বর্যের মাধুর্য রয়েছে৷ ৰড় ৰড় গুদামের

আনন্দনগরে আনন্দপূর্ণিমা ধর্ম মহাসম্মেলন সমাপ্ত

৩১মে, ১ ও ২ জুন ২০২৪ আনন্দনগরে আনন্দপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে আন্তর্জাতিক আনন্দমার্গ ধর্ম মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়৷ বিভিন্ন দেশ-বিদেশের ভক্তমণ্ডলীর সমাগমে ও উচ্চ আধ্যাত্মিক তরঙ্গের পরিমণ্ডলে ৩০ মে ২০২৪ বিকেল ৩টায় ৭২ ঘণ্টা অখণ্ড ‘বাবা নাম কেবলম’ নাম সংকীর্ত্তনের মাধ্যমে সম্মেলনের শুভারম্ভ হয়৷ প্রত্যহ প্রভাতী কীর্তনের মাধ্যমে প্রভাতফেরী ও ভোর পাঁচটায় সামূহিক পাঞ্চজন্যের আধ্যাত্মিক উন্মেষনায়, উন্মীলনে অনুষ্ঠানের সমারম্ভ হতো৷ এ তদ্ব্যতীত সকাল-সন্ধ্যায় মিলিত ঈশ্বর প্রণিধান, প্রভাত সঙ্গীত ও তার মর্মার্থ ব্যাখ্যা, দুবেলা তাণ্ডব-কৌষিকী নৃত্য পরিবেশন অনুষ্ঠিত হতো৷ এক সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পশ্চিম রাঢ়ে

‘ঋষ্‌’ ধাতু ঃ এর অর্থ হচ্ছে কোন কিছুকে ফুঁড়ে এগিয়ে যাওয়া অথবা কোন কিছুর দ্বারা বিদ্ধ হয়ে যাওয়া৷ যেমন ‘‘কেউ কাউকে ফুঁড়ে দিলে অথবা কারুর দ্বারা কেউ ফোঁড়া হয়ে গেল’’৷ ‘ঋষ্‌’ ‘ইঞ্‌’ করে ‘ঋষি’ শব্দ পাচ্ছি যার মানে, যিনি সমস্ত ৰাধার বিন্ধ্যাচলকে ফুঁড়ে এগিয়ে যান, যাঁর প্রগতি কোন ৰাধা মানে না৷ এই ‘ঋষি’ শব্দ থেকেই আমরা পাচ্ছি ‘আর্ষ’ শব্দটি৷ আজকাল আমরা যাকে হিন্দুমত বা হিন্দুধর্ম বলি এটা কিন্তু তার সংস্কৃত নাম নয়৷ ‘হিন্দু’ শব্দটা ফার্সী যার মানে হচ্ছে হিন্দু অর্থাৎ ভারতের বাসিন্দা (ইংরেজীতেIndian)৷ যে ধর্মমত বৈদিক যুগের ঋষিরা প্রচার করে গেছেন তাই হ’ল ‘আর্য’৷ যেমন ‘ঋ’ ধাতু থেকে ‘আর্য’ তেমনি ‘ঋসি’ থেকে

‘ছাত্রী’ শব্দটি ভুল, হবে ‘ছাত্রা’

‘ছদ্’ ধাতুর অর্থ আচ্ছাদন দেওয়া৷ যে বস্তু আচ্ছাদন দেয় তা–ই ‘ছত্র’৷ গুরুর ছত্রছায়ায় যে আশ্রিত তাকে ছত্র অণ করে ‘ছাত্র’ বলা হয়৷ ‘ছাত্র’ শব্দের স্ত্রীলিঙ্গে দু’টি রূপ রয়েছে–‘ছাত্রী’ ও ‘ছাত্রা’৷ ‘ছাত্রী’ মানে ‘ছাত্রের পত্নী’৷ তিনি নিজে পড়ুয়া হতেও পারেন, নাও হতে পারেন৷ ‘ছাত্রা’ মানে যিনি নিজে পড়ুয়া কিন্তু তিনি কারও স্ত্রী হতেও পারেন, নাও পারেন৷          (সূত্র ঃ ‘প্রভাতরঞ্জনের ব্যাকরণ বিজ্ঞান’)

 

‘ঋষ্‌’ ধাতু ঃ এর অর্থ হচ্ছে কোন কিছুকে ফুঁড়ে এগিয়ে যাওয়া অথবা কোন কিছুর দ্বারা বিদ্ধ হয়ে যাওয়া৷ যেমন ‘‘কেউ কাউকে ফুঁড়ে দিলে অথবা কারুর দ্বারা কেউ ফোঁড়া হয়ে গেল’’৷ ‘ঋষ্‌’ ‘ইঞ্‌’ করে ‘ঋষি’ শব্দ পাচ্ছি যার মানে, যিনি সমস্ত ৰাধার বিন্ধ্যাচলকে ফুঁড়ে এগিয়ে যান, যাঁর প্রগতি কোন ৰাধা মানে না৷ এই ‘ঋষি’ শব্দ থেকেই আমরা পাচ্ছি ‘আর্ষ’ শব্দটি৷ আজকাল আমরা যাকে হিন্দুমত বা হিন্দুধর্ম বলি এটা কিন্তু তার সংস্কৃত নাম নয়৷ ‘হিন্দু’ শব্দটা ফার্সী যার মানে হচ্ছে হিন্দু অর্থাৎ ভারতের বাসিন্দা (ইংরেজীতেIndian)৷ যে ধর্মমত বৈদিক যুগের ঋষিরা প্রচার করে গেছেন তাই হ’ল ‘আর্য’৷ যেমন ‘ঋ’ ধাতু থেকে ‘আর্য’ তেমনি ‘ঋসি’ থেকে

 পঃ (১)‘পা’,‘পচি’,‘পচ্‌’, ‘পক্ষ্‌’ প্রভৃতি ধাতুর উত্তর ‘ড’ করে ‘প’ শব্দ পাই৷ এই ‘প’ শব্দ বিভিন্ন অর্থে প্রযুক্ত তথা ব্যবহৃত হয়ে থাকে৷ ‘পচি’ ধাতুর অর্থ ছড়িয়ে পড়া, কোন কিছুকে চরম স্তরে পৌছে দেওয়া, রান্না করা প্রভৃতি ণিজন্তেও ঘঞন্তে ‘হজম করা’৷ যা ছড়িয়ে যায় এই অর্থে ‘পচি+ ড করে আমরা যে ‘প’ শব্দ পাচ্ছি তার ভাবারূঢ়ার্থ হচ্ছে ‘যা ছড়িয়ে পড়ে’৷ এটি যোগারুঢ়ার্থ হচ্ছে ‘বায়ু’ বা ‘ঝঞ্ঝা’৷

পো+ অন্‌ = পবন শব্দের অর্থ বায়ু৷ কিন্তু ণিজন্তে পে+ অন্‌= পাবন শব্দের অর্থ যা পবিত্র করে ও যা হজম করায়৷ যে জিনিস হজম করায় তাকে সাধু ৰাংলায় ‘পাচক’ বলে৷ উত্তর ভারতে হজমী গুলিকে তাই ‘পাচক’ ৰলা হয়৷

ধূ

(৮) ‘ধূ’ ধাতুর অর্থ কাঁপিয়ে দেওয়া/নড়িয়ে চড়িয়ে দেওয়া/আলোড়িত করা৷ আমরা যখন কাপড় কাচি তখন কাপড়কে আলোড়িত করে নিই৷ তাই কাচা অর্থে ‘ধৃ’ ধাতু অবশ্যই চলৰে৷ ‘ধূ’+ ক্ত= ধূত ধূ+ ণিচ্‌ ‘ক্ত’= ধৌত৷ অবস্থা বিশেষে দুটোই চলৰে৷ ‘ধূ+ক্তিন্‌= ধূতি, অব---ধ+ক্ত= অবধূত৷ ‘অবধূত’-এর কয়েকটি অর্থের মধ্যে প্রধান অর্থ হল---যে মানুষ আদর্শনিষ্ঠায় সমাজজীবনে একটা আলোড়ন আনে৷ ‘ধূ+‘ড’ করে যে ‘ধ’ শব্দ পাই তার মানে যে কেচেছে, যাকে কাচা হয়েছে৷ ‘ধূ’ ধাতুর আলোড়ন আনা অর্থ নিয়ে ‘ধূ+‘ড’ করে যে ‘ধ’ শব্দ পাই তার মানে ‘যে আলোড়ন এনেছে’৷

তঃ (১) ‘তৃ’ ধাতুর অর্থ পার হওয়া---সে মাঠ পার হওয়াই হোক আর নদী পার হওয়াই হোক৷ এই ‘তৃ’  ‘অনট্‌’ করে পাই ‘তরণ’৷  তরণ মানে সাঁতার কাটা, যার থেকে হিন্দীতে ‘তৈরণা’৷ ‘যার দ্বারা পার হওয়া যায়’ এই অর্থে তরণী মানে নৌকা, তরী মানেও তা-ই৷ উৎ-তৃ+অনট্‌ - উত্তরণ, মানে নীচের দিক থেকে ওপরে ওঠা৷ ‘সম্‌’---তৃ+ অনট্‌= সন্তরণ৷ ৰাংলায় ‘সন্তরণ’ ও তজ্জাত ‘সাঁতার’ শব্দটি ভালভাবেই চলে৷ পার হওয়া অর্থে ‘তৃ’ ধাতু+ ‘ড’ করে আমরা যে ‘ত’ শব্দটি পাচ্ছি তার একটি অর্থ হ’ল ‘নৌকা’৷

(২) প্রাচীন সংস্কৃতে ভাবারুঢ়ার্থে ‘ত’ ৰলতে ‘রথ’কেও ৰোঝাত৷

ঐরাবত

 বৈদিক ভাষায় ‘ইর’ ধাতুর মানে হচ্ছে নড়াচড়া করা৷ ‘ইর্‌’ ধাতুর উত্তর ‘অল’ প্রত্যয় করে আমরা ‘ইর্‌’ শব্দ পাচ্ছি (স্ত্রীলিঙ্গে ‘ইরা’) যার ভাবারূঢ়ার্থ হচ্ছে  যা নড়াচড়া করে,আর যোগারূঢ়ার্থ হচ্ছে ‘জল’৷ এই ‘ইর’ বা ‘ইরা’ যাতে আছে এই অর্থে  ইর+  মতু+প্রথমার একবচনে ‘ইরাবান্‌’ স্ত্রীলিঙ্গে ‘ইরাবতী’৷ ‘ইরাবৎ’ বা ইরাবতী শব্দের ভাবারুঢ়ার্থ হ’ল বৃহৎ জলাশয়৷ যোগারূঢ়ার্থ ‘ইরাবৎ’ মানে সমুদ্র আর ‘ইরাবতী’ মানে ৰড় নদী৷ পঞ্জাবে ‘ইরাবতী’ নামে একটি প্রসিদ্ধ নদী আছে, ইংরাজীতে যাকে ‘রাবি’ Ravi) ৰলা হয়ে থাকে৷ ব্রহ্মদেশেরও সর্বপ্রধান নদীটির নাম ইরাবতী ৷ রেঙ্গুন শহর এই ইরাবতীর ৰ-দ্বীপেই অবস্থিত৷ পৌরাণিক কথা অনুযায়ী সমুদ্র বা

কণ্টকী

শব্দটি ‘কণ্টক’-এর স্ত্রীলিঙ্গ রূপ হলেও ব্যবহারে ‘কণ্টকতুল্য’ অর্থেই প্রযোজ্য৷ যে শ্বাশুড়ী বধূকে কষ্ট দিত তাকে ৰলা হত ‘ৰধূকণ্টকী’ (ৰউ-কাঁটকী)৷ তেমনি যে বধূ শ্বাশুড়ীকে কষ্ট দিত তাকে ৰলা হত ‘শ্বাশুড়ী-কাঁটকী ৰউ’৷ যে ফলের গায়ে কাঁটা আছে তাকে ৰলা হয় কণ্টকীফল-কাঁটাল৷ ‘কাঁঠাল’ ৰানানটি অশুদ্ধ৷ ‘ঠ’ ব্যবহারের কোন যুক্তিই নেই৷

ফ (১) ‘স্ফায়’ একটি বৈদিক ধাতু৷ মানে হ’ল ‘ফুলে যাওয়া’, যা থেকে আমরা ‘স্ফীতি’, ‘স্ফীত’ প্রভৃতি শব্দ পাচ্ছি৷ ‘স্ফায়’+ ‘ড’ প্রত্যয় করে পাচ্ছি ‘ফ’ শব্দটি৷ এ ক্ষেত্রে ভাবারাঢ়ার্থে ‘ফ’ ৰলতে বোঝায় ‘যা ফুলে গেছে’ কিন্তু যোগারাঢ়ার্থে ‘যা ফুলেছে বা ফুলে চলেছে’ যেমন স্ফীতোদর না ৰলে ৰলতে পারি ‘ফোদর’ (ফ+উদর)৷ যোগারাঢ়ার্থে ৰোবায় যা সংখ্যায় বেড়ে চলেছে’৷ এক অনেকে পর্যবসিত হচ্ছে৷ একটি জীবপঙ্কগত কোষ cell) একাধিক জীবপঙ্কে পর্যবসিত হয়ে চলেছে৷ তাই ‘ফ’ ৰলতে জীবপঙ্কীয় কোষকে protoplasmic cell) ৰোঝায়৷ (২) যিনি এক ছিলেন কিন্তু নিজ সংকল্পে অনেক হয়েছেন ‘ফ’ ৰলতে সেই ‘পরমব্রহ্ম-কেও ৰোঝায়৷ (৩) যা আকারে ছোট ছিল, কোন কারণে

একজ/একজন্মিন্‌ ঃ শব্দটির কয়েকটিই অর্থ হয়৷ একটি মানে হচ্ছে---‘একই পিতামাতার সন্তান’ দ্বিতীয় মানে ‘যে একলা জন্মগ্রহণ করেছে’, তৃতীয় মানে ‘শূদ্র’, চতুর্থ মানে ‘যে সকল জীব ডিম্বের মাধ্যমে জন্মগ্রহণ না করে সোজাসুজি মাতৃগর্ভ থেকে জন্মগ্রহণ করে’৷ যে সব জীব অণ্ডের মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করে তাদের ৰলা হয় ‘দ্বিজ’৷ দাঁত দু’বার গজায়৷ তাই দাঁতের একটি নাম ‘দ্বিজ’৷ শূদ্র ৰাদে ৰাকি মানুষেরা অর্থাৎ যাদের উপনয়ন সংস্কার সেকালে হত (বিপ্র, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য) তাদেরও ৰলা হত ‘দ্বিজ’৷ তাদের প্রথম জন্ম হত মাতৃগর্ভ হতে স্বাভাবিক মানুষের মত৷ দ্বিতীয়বার উপনয়ন সংস্কারের সময়-ধর্মীয় জন্ম ৷

এক ঃ ‘ইন্‌’ ধাতুর উত্তর কৃদর্থে ‘কন্‌’ প্রত্যয় করে ‘এক’ শব্দ নিষ্পন্ন হয়!

(১) ‘ভা’ ধাতুর অর্থ চকচক করা, জ্যোতিঃ বিকিরণ করা৷ তাই ‘ভা’ ধাতুর উত্তর ‘ড’ প্রত্যয় করে যে ‘ভ’ শব্দ পাই ভাবারূঢ়ার্থে তা হ’ল ‘যা চকচক করে’, বা ‘জ্যোতিঃ বিকিরণ করে’৷ যোগারাঢ়ার্থে ‘ভ’ ৰলতে ৰোঝবায় পরমৰ্রহ্ম৷ পরমৰ্রহ্ম জ্যোতিষ্মান ৰলেই বিশ্বের আর সকল সত্তা জ্যোতিষ্মতী৷ পরমৰ্রহ্মের আলোকেই সব কিছু আলোকময়৷

                ‘‘ন তত্র সূর্যো ভাতি ন চন্দ্রতারকম

                নেমা বিদ্যুতো ভান্তি কৃতোইয়গ্ণ্নিঃ৷৷

                তমেব ভান্তমনুভাতি সর্বং

                তস্য ভাসা সর্বমিদং বিভাতি৷’’

 (১) ণক্ষ্‌ একটি বৈদিক ধাতু যার মানে নাকের সোজা ছুটে চলা৷ এই ‘ণক্ষ্‌’ ধাতুর উত্তর ‘শতৃ’ প্রত্যয় করে পাই ‘ণক্ষৎ’ শব্দটিকে৷ ণক্ষৎ+ ত্রৈ+ ড = ণক্ষত্র৷ বর্তমানে বৈয়াকরণিক বিধি ভুলে যাওয়ায় লোকে ‘’-এর পরিবর্তে ‘’ দিয়ে লিখছে৷ গুপ্তযুগ থেকে ‘ণ’-এর পরিবর্তে ‘ন’ লিখছে৷ তবে তোমরা ইচ্ছা করলে ‘ণক্ষ’ ৰানানটিও লিখতে পারো৷ বৈয়াকরণিক বিচারে সেটাই ৰেশী শুদ্ধ একটা ত্র দিয়ে লেখা অশুদ্ধ৷ ‘ন’ দিয়ে লেখা অশুদ্ধ হলেও নিপাতনে সিদ্ধ অর্থাৎ ভুল করে ‘ন’ দিয়ে লেখার প্রথা গুপ্তযুগ থেকেই চলে আসছে৷

আলোকে যে কেটে কেটে দেয় তার জন্যে ছো+ ড করে ‘ছ’ শব্দ ব্যবহার করা যায়৷ এই ‘ছ’ শব্দের একটা অর্থ হ’ল ‘ছায়া’ যা আলোকে কেটে কেটে দেয়৷ যেহেতু ‘রাহু’ আর ‘কেতু’ এই দুটি হচ্ছে পৃথিবীরই দুই ধরণের ছায়া (ছায়া ও উপচ্ছায়া--umbra and penumbra), এই দু’টিকে ‘ছায়াগ্রহ’ বা ‘ছ’ ৰলা হয়৷ পৌরাণিক গল্প অনুযায়ী রাহু-কেতু ছিল একটি দানব৷ সে লুকিয়ে লুকিয়ে অমৃত খেয়ে ফেলেছিল৷ তাই বিষ্ণু চক্রের সাহায্যে তার মাথা কেটে দেন৷ অমৃত ভক্ষণ করায় তার মৃত্যু হ’ল না বটে, তবে ধড় ও মাথা দু’টো অংশ পৃথকভাবে বেঁচে রইল৷ মাথাটার নাম ‘রাহু’ umbra) ও ধড়টার নাম ‘কেতু’ penumbra)৷ পৌরাণিক গল্প অনুযায়ী সূর্যের স্ত্রীর নাম ‘ছায়া’৷ তার জন্যেও ‘ছ’

 (১) প্রাচীনকাল থেকেই ‘দ’ শব্দটি নানান অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে৷ বেদের একটি আখ্যায়িকায় আছে, পরস্পর সংঘর্ষরত দেবতা, দানব ও মানুষেরা একবার দেখলে, তাদের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক জ্যোচিষ্মান পুরুষ৷ নীচের দিকে তাকিয়ে তার আদি-অন্ত দেখা যায় না! ওপরের দিকে তাকিয়েও আদি-অন্ত দেখা যায় না এ যেন জ্যোতিঃর একটি ঘনীভূত রূপ৷ তারা সবাই করজোড়ে তাঁর কাছ থেকে নির্দেশ প্রাপ্তির আশায় দাঁড়িয়ে রইল৷ সেই বিরাট পুরুষ তাদের উদ্দেশে কেবল ‘দ’ শব্দটি উচ্চারণ করে অন্তর্হিত হলেন৷

লিপির ইতিকথা

লিপি বা অক্ষরের ক্ষেত্রেও এমানেশনের প্রভাব রয়েছে৷ আমরা আগেই বলেছি যে এক একটি ভাষা আনুমানিক এক হাজার বছর বাঁচে কিন্তু এক একটি লিপি বাঁচে আনুমানিক দু’ হাজার বছরের মত৷ যজুর্বেদের যুগের গোড়ার দিকে কোন লিপি ছিল না৷ শেষের দিকে অর্থাৎ আনুমানিক পাঁচ হাজার বছর আগে ভারতে লিপির আবিষ্কার হয়৷ অক্ষর আবিষ্কারের সময় ঋষিরা ভেবেছিলেন যে অ–উ–ম অর্থাৎ সৃষ্টি–স্থিতি–লয় নিয়ে এই জগৎ রয়েছে৷ কিন্তু ব্যক্ত জগৎটা হচ্ছে চৈতন্যের ওপর প্রকৃতির গুণপ্রভাবের ফল–ক্গনিটিব্ ফ্যাকাল্টির ঙ্মচৈতন্যসত্তারৰ ওপর বাইণ্ডিং ফ্যাকল্টির ঙ্মপরমা প্রকৃতিৰ আধিপত্যের ফল৷ অর্থাৎ এক্ষেত্রে পরমপুরুষ প্রকৃতির ৰন্ধনী শক্তির আওতায় এসে গেছেন৷ এই য

‘সংগঠন’ শব্দটি ভুল, হবে ‘সংঘটন’

সংস্কৃতে ‘গঠন’ বলে কোন শব্দই নেই–আছে ‘ঘটন’৷ এই ‘ঘটন’ শব্দ বিকৃত হয়ে ‘গঠন’ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তাই শুদ্ধভাবে লিখতে গেলে ‘সংঘটন’ লেখাই সমীচীন৷

সংঘটন শব্দটি (সম্–ঘট্ + ল্যুট) আমরা এই ‘ঘট্’ ধাতু থেকে পাচ্ছি যাকে ভুল করে আমরা ‘সংগঠন’ বলি বা লিখে থাকি৷ আবার এই ‘সংগঠন’–কে ঠিক ভেবে আমরা ‘সংগঠিত’, ‘গঠনাত্মক’, ‘সুসংগঠিত’,‘সংগঠনী শক্তি’, ‘গঠনমূলক কার্য’ প্রভৃতি শব্দগুলি অবলীলাক্রমে ব্যবহার করে থাকি৷ বুঝি না গোড়াতেই ভুল৷ ‘সংগঠন’ শব্দটি ভুল৷ আসলে ঠিক শব্দটি হ’ল ‘সংঘটন’৷ ঘটন>ঘডন>ঘ৷ একটি কবিতাতেও দেখেছিলুম–

‘‘তার উপরে মুখের গঠন অনেকটা ঠিক প্যাঁচার মতন৷’’

বাংলা বানান সংস্কার

ছাত্রী নয়, ছাত্রা

‘ছদ্’ ধাতুর অর্থ আচ্ছাদন দেওয়া৷ যে বস্তু আচ্ছাদন দেয় তা–ই ‘ছত্র’৷ গুরুর ছত্রছায়ায় যে আশ্রিত তাকে ছত্র  অণ করে ‘ছাত্র’ বলা হয়৷ ‘ছাত্র’ শব্দের স্ত্রীলিঙ্গে দু’টি রূপ রয়েছে–‘ছাত্রী’ ও ‘ছাত্রা’৷ ‘ছাত্রী’ মানে ‘ছাত্রের পত্নী’৷ তিনি নিজে পড়ুয়া হতেও পারেন, নাও হতে পারেন৷ ‘ছাত্রা’ মানে যিনি নিজে পড়ুয়া কিন্তু তিনি কারও স্ত্রী হতেও পারেন, নাও পারেন৷

সঠিক নয়, ঠিক

ঠিক একটি বিশেষণ৷ সাধারণ নিয়মে বিশেষণের আগে ‘স’–এর সংযুক্তি হয় না৷ যেমন ‘সচকিত’ ভূল তেমনি ‘সঠিক’–ও ভুল৷ ‘ঠিক’ বলাই ঠিক৷

বাংলা বানান সংস্কার

জাদুগর

‘গর’ প্রত্যয়যুক্ত ফারসী শব্দ ‘সওদাগর’ অর্থাৎ যিনি সওদা বোঝেন৷ ‘জাদুগর’ অর্থে যিনি জাদু জানেন, বোঝেন৷ এখানে বলে রাখা ভাল যে কেউ কেউ ‘জাদুগর’ বানানের পরিবর্ত্তে ‘যাদুকর’ এইরকম বানান লেখেন৷ তাঁরা শব্দটিকে ‘যাদু’ শব্দের উত্তর কৃ  অল্ করে দেখাতে চান৷ কিন্তু তা ঠিক নয়৷ ‘জাদু’ ফারসী শব্দ৷ ‘জাদু’ জানেন, বোঝেন এই অর্থে ফারসী প্রত্যয় ‘গর’ যুক্ত হয়ে হয়েছে ‘জাদুগর’৷ তাই ‘যাদুকর’ বানানের টিকি থেকে ন্যাজের ডগা পর্যন্ত ভুল৷ ‘জাদুগর’ শব্দের সংস্কৃত প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘বাজিকর’৷ ‘কর’ সংস্কৃত প্রত্যয়৷ ফারসীতে ‘কর’ প্রত্যয় নেই৷ ‘কার’ বলে যে শব্দটি রয়েছে তা প্রত্যয় নয়৷ ‘কার’ মানে ফারসীতে ‘কাজ’৷ ‘জাদু’ শব্দের সংস্ক

বাংলায় ‘ৰ’ ও ‘ব’ প্রসঙ্গে

জ্ঞানভিক্ষু

প্রাউট–প্রবক্তা মহান দার্শনিক ঋষি শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার ভাষাতত্ত্ব ও ব্যাকরণ বিজ্ঞানের ওপরও বহু অমূল্য পুস্তক রচনা করেছেন, যা কলকাতা, ঢ়াকা, কল্যাণী প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা অধ্যাপক সহ বিশিষ্ট ভাষাতাত্ত্বিক ও জ্ঞানী গুণীজনের দ্বারা বহুল প্রশংসিত৷ তাঁর রচিত ‘প্রভাতরঞ্জনের ব্যাকরণ বিজ্ঞানে’ (৩ খণ্ড) তিনি বহু প্রচলিত অনেক বাংলা বানানের ভুলত্রুটি বা অর্থবিচ্যুতি দেখিয়ে সে সবের সংস্কার সাধনেও সচেষ্ট হয়েছেন৷ তাছামড়া, বাংলাভাষাকে সমৃদ্ধশালী করে তুলতে, সংস্কৃত থেকে আগত তৎসম শব্দগুলির উচ্চারণ ও অর্থ যথাযথভাবে প্রকাশ করতে, বিভিন্ন বিদেশী শব্দেরও উচ্চারণকে ঠিক ঠিক ভাবে প্রকাশ করার প্রয়োজনে, এছাড়া

বাংলা বানান সংস্কার

ব্যক্তি নয়, ব্যষ্টি

মানুষ অর্থে ‘ব্যক্তি’ শব্দটি একটি আপাদমস্তক ভুল শব্দ৷ মানুষ অর্থে ‘ব্যক্তি’ শব্দটির ব্যবহার কোন শুভ লগ্ণে হয়েছিল তা ভাষাবিজ্ঞানের পণ্ডিতেরা বলতে পারেন–তা আমার মত প্রাকৃত জনের কর্ম নয়৷ ‘ব্যক্তি’ শব্দটির মানে হচ্ছে ফুটিয়ে তোলা৷ মেয়েরা কাপড়ের ওপর যে সূচীকর্ম করেন তাকে যদি কেউ ‘সূচীব্যক্তি’ বলেন আমার তাতে আপত্তি নেই কিন্তু মানুষকে ব্যক্তি বলতে আপত্তি রয়েছে৷

‘নোতুন পৃথিবী’ বানান ‘নোতুন’ কেন?

 ‘‘সংস্কৃতে ‘নব’ শব্দের দু’টি অর্থ–একটি মানে ‘নয়’ (৯), দ্বিতীয় মানে নূতন৷ ‘নয়’ (৯) শব্দের বিশেষণে ‘নবম’ (ninth) নূতন অর্থে Comparative degree- েত নবতর, কিন্তু Superlative degree েত নবতম ও নবতন৷ যেখানে কারও সঙ্গে তুলনা না করে বলা হচ্ছে এটি সবচেয়ে নূতন, সেখানে ‘নবতন’ আর যেখানে অনেকের সঙ্গে তুলনা করে’ বলা হচ্ছে, এটি সবচেয়ে নূতন সেখানে ‘নবতম’৷ নবতম > নওতন > নওতুন > নোতুন৷ ভালভাবে মনে রাখা দরকার যে, ‘নূতন’ ও ‘নোতুন’ এক নয়৷ ‘নূতন’ একটি তৎসম শব্দ যার ইংরেজী প্রতিশব্দ new আর ‘নোতুন’ একটি তদ্ভব শব্দ যার মানে যা সবচেয়ে নূতন৷ যেমন অনেকের সঙ্গে তুলনা করে যদি বলি যে এটি সবচেয়ে পুরোনো  তার জন্যে

বাংলা বানান প্রসঙ্গে

শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

সোচ্চার নয়, সরব

আজকাল বহু শিক্ষিত মানুষও ‘সরব’ (vocal) বোঝাতে গিয়ে ‘সোচ্চার’ কথাটা প্রায়শঃ লিখে থাকেন বা বলে থাকেন৷ শব্দটা আগাপাস্তলা ভুল৷ উচ্চারূণ>উচ্চার৷ ‘উচ্চার’ মানে ‘বিষ্ঠা’৷ ‘ঔচ্চার’ মানে ‘বিষ্ঠা সম্বন্ধীয়’৷ উচ্চারেণ সহ ইত্যর্থে ‘সোচ্চার’ (তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস) যার মানে হচ্ছে যিনি মলত্যাগ করেছেন কিন্তু এখনও জলশৌচ করেননি৷ মলত্যাগকালে কোঁথ দেওয়াকেও ‘উচ্চার’ বলা হয়৷ অতএব ‘সোচ্চার’ শব্দের আরেকটি মানে হ’ল যে মলত্যাগ করবার জন্যে কোঁথ দিচ্ছে৷ কেবল সংস্কৃত বা বাংলা ব্যাকরণেই নয়, বাংলা ভাষায় অন্য ভাষার যে সব শব্দ আছে সেগুলো একটু মানে বুঝে ব্যবহার করলে ভাল হয়৷

বাংলা বানান সংস্কার

জাদুগর

‘গর’ প্রত্যয়যুক্ত ফারসী শব্দ ‘সওদাগর’ অর্থাৎ যিনি সওদা বোঝেন৷ ‘জাদুগর’ অর্থে যিনি জাদু জানেন, বোঝেন৷ এখানে বলে রাখা ভাল যে কেউ কেউ ‘জাদুগর’ বানানের পরিবর্ত্তে ‘যাদুকর’ এইরকম বানান লেখেন৷ তাঁরা শব্দটিকে ‘যাদু’ শব্দের উত্তর কৃ  অল্ করে দেখাতে চান৷ কিন্তু তা ঠিক নয়৷ ‘জাদু’ ফারসী শব্দ৷ ‘জাদু’ জানেন, বোঝেন এই অর্থে ফারসী প্রত্যয় ‘গর’ যুক্ত হয়ে হয়েছে ‘জাদুগর’৷ তাই ‘যাদুকর’ বানানের টিকি থেকে ন্যাজের ডগা পর্যন্ত ভুল৷ ‘জাদুগর’ শব্দের সংসৃক্ত প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘বাজিকর’৷ ‘কর’ সংসৃক্ত প্রত্যয়৷ ফারসীতে ‘কর’ প্রত্যয় নেই৷ ‘কার’ বলে যে শব্দটি রয়েছে তা প্রত্যয় নয়৷ ‘কার’ মানে ফারসীতে ‘কাজ’৷ ‘জাদু’ শব্দের সংসৃক

বাংলা বানান সংস্কার - ‘ভোট’ নয়, ‘বোট’

শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকার

আমরা এই পত্রিকায় Vote কে বোট  লিখছি এই  কারণে  যে ইংরেজী V’ শব্দটির  যথার্থ উচ্চারণ বাংলার  অন্তস্থ-‘ব’৷ কিন্তু  বর্তমান  বাংলা বর্ণমালায়  বর্গীয় - ৰ ও অন্তঃস্থ ‘ব’ একইভাবে  লেখা হয়--- যা  যুক্তিসঙ্গত  নয়৷  কারণ  বর্গীয় ‘ৰ’ --- অর্থাৎ (প, ফ -এর  পর যে ব’  তার উচ্চারণ  ইংরেজী B’ -এর  মতো৷ তাই  মহান দার্শনিক  শ্রী প্রভাতরঞ্জন  সরকারের  অভিমত, বর্গীয় ‘ৰ’--- কে  ‘’ -এইভাবে  লেখা উচিত, আর  অন্তঃস্থ  ‘ব’  কে ‘ব’ যেমন  লেখা হয়  সেভাবেই  লেখা উচিত৷ 

তাই  ইংরেজী  শব্দ Bat , Ball , Ban -কে বাংলায়  লিখতে হবে যথাক্রমে ব্যাট, ৰল, ৰান

বাংলা বানান প্রসঙ্গে

ইতোপূর্বে, ইতোমধ্যে :   ইতিপূর্বে, ইতিমধ্যে–‘ইতিপূবে’, ‘ইতিমধ্যে’ দুটো শব্দই অশুদ্ধ৷ কারণ, শুদ্ধ শব্দগুলি হচ্ছে ‘ইতঃপূর্বে’, ‘ইতঃমধ্যে’৷ তবে ইচ্ছে গেলে বিসর্গের ব্যবহার না করেও ‘ও’–কার দিয়ে কাজ চালাতে পারি৷ লিখতে পারি ‘ইতোপূর্বে’, ‘ইতোমধ্যে’৷

ওই : ‘ও–ই’ শব্দটি বাংলা ‘ও’ শব্দটি থেকে এসেছে৷ তাই তার বানান ‘ও–ই’ হতেই হবে–‘অ–ই’ অথবা ‘ঐ’ দিয়ে লিখলে চলবে না৷

উচিত: বচ + ণচ + ক্ত = উচিত৷ মনে রাখা দরকার, ‘ক্ত’ প্রত্যয়ান্ত শব্দে খণ্ড ‘ত’ (ৎ) বা হসন্তযুক্ত ব্যঞ্জন হয় না৷ তাই ‘উচিত’ বানান পুরো ‘ত’ দিয়ে লিখতে হবে, খণ্ড ‘ত’ (ৎ) দিলে চলবে না৷

বাংলা বানান সংস্কার

ন্যাজ

অনেকে ‘ন্যাজ’ না বলে বলে ‘লেজ’ বা ‘ল্যাজ’৷ কিন্তু সেটা ঠিক নয়৷ সংস্কৃত ‘ন্যুব্জ’ থেকে ভাষাতত্ত্বের বিশেষ নিয়মে ‘ন্যাজ’ হতে পারে, ‘লেজ’ বা ‘ল্যাজ’ হতে পারে না৷ কেননা মূল শব্দের বানানে দন্ত্য ‘ন’ রয়েছে৷ তার বিবর্ত্তিত রূপে ‘ল’ আসবে কোত্থেকে? শব্দটা ‘লাঙ্গুল’ থেকেও আসে নি কারণ লাঙ্গুল–এ ‘জ’ অক্ষরটি নেই৷ এমনকি ‘দ’–ও নেই৷ অনেক সময় ‘দ’ বিবর্ত্তিত হয়ে ‘জ’ হয়ে যায়৷ ‘লাঙ্গুল’–এর তদ্ভব বাংলা শব্দ ‘নেঙ্গুন’৷ এই শব্দটি আমি বীরভূমের গ্রামে শুণেছি.......একটি ছড়ায় ঃ ‘‘ছুতোরে কাঠ কাটে/বগাতে নেঙ্গুন নাড়ে৷’’

জ্যোতিঃ

বাংলা বানান প্রসঙ্গে

কর্ষক ঃ এমনিতে যাঁরা চাষবাস নিয়ে থাকেন তাঁদের জন্যে সংস্কৃত ভাষায় বেশি প্রচলিত শব্দ দু’টি রয়েছে–কৃষীবল ও কর্ষক৷ ‘কর্ষক’ শব্দটি কৃষ ধাতু থেকে উৎপন্ন৷ যাঁরা এই কর্ষককে ‘কৃষক’ বানিয়ে ফেলেছেন তাঁরা না জেনেই এই ভুল করেছেন৷ আর যাঁরা আজও ‘কৃষক’ লেখেন তাঁরা ভুলকে ভুল না জেনেই লেখেন৷ আমরা ‘আকর্ষক’ ‘বিকর্ষক’ বলবার সময় ঠিক বলি কিন্তু কেন বুঝি না ‘কর্ষক’ বলবার সময় ভুল করে কৃষক বলে ফেলি৷

 

বাংলা বানান প্রসঙ্গে

করদাতৃগণ, নেতৃগণ, ভ্রাতৃগণ, বত্তৃণগণ, ভ্রাতৃবর্গ / করদাতাগণ, নেতাগণ, ভ্রাতাগণ, বক্তাগণ, ত্রাতাবর্গ–যৌগিক পদে অনেক সময় দেখা যায় লোকে বলবার সময় বা  লেখবার সময় পূর্ব পদস্থিত ‘তৃচ’ প্রত্যয়ান্ত শব্দটিতে মূল শব্দরূপ না রেখে প্রথমার একবচন ব্যবহার করে থাকেন৷ যেমন, ‘কর্ত্তৃগণ’ না লিখে লেখেন ‘কর্ত্তাগণ’৷ মনে রাখতে হবে মূল শব্দটি ‘কর্ত্তৃ’ যার প্রথমার একবচনে ‘কর্ত্তা’৷ তাই নিয়মানুসারে যৌগিক পদে মূল শব্দটি ব্যবহার করা হয়৷ অর্থাৎ ‘কর্ত্তাগণ’ না লিখে লিখতে হবে ‘কর্ত্তৃগণ’৷ অনুরূপভাবে ‘করদাতাগণ’, ‘নেতাগণ’, ‘ভ্রাতাগণ’ ‘বক্তাগণ’, ‘ত্রাতাবর্গ’, শব্দগুলির শুদ্ধরূপ হ’ল ‘কর্ত্তৃগণ, ‘করদাতৃগণ’, ‘নেতৃগণ’, ‘ভ্রাতৃ

বাংলা বানান সংস্কার

প্রাউট–প্রবক্তা মহান দার্শনিক ঋষি শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার ভাষাতত্ত্ব ও ব্যাকরণ বিজ্ঞানের ওপরও বহু অমূল্য পুস্তক রচনা করেছেন, যা কলকাতা, ঢাকা, কল্যাণী প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা অধ্যাপক সহ বিশিষ্ট ভাষাতাত্ত্বিক ও জ্ঞানী গুণীজনের দ্বারা বহুল প্রশংসিত৷ তাঁর রচিত ‘প্রভাতরঞ্জনের ব্যাকরণ বিজ্ঞানে’ (৩ খণ্ড) তিনি বহু প্রচলিত অনেক বাংলা বানানের ভুলত্রুটি বা অর্থবিচ্যুতি দেখিয়ে সে সবের সংস্কার সাধনেও সচেষ্ট হয়েছেন৷ এ ধরনের কিছু বাংলা বানান সম্পর্কে তাঁর অভিমত তাঁর ভাষাতেই প্রকাশ করা হচ্ছে ঃ      ––––জ্ঞানভিক্ষু

বাংলা বানান সংস্কার

[প্রাউট–প্রবক্তা মহান দার্শনিক ঋষি শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার ভাষাতত্ত্ব ও ব্যাকরণ বিজ্ঞানের ওপরও বহু অমূল্য পুস্তক রচনা করেছেন, যা কলকাতা, ঢাকা, কল্যাণী প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা অধ্যাপক সহ বিশিষ্ট ভাষাতাত্ত্বিক ও জ্ঞানী গুণীজনের দ্বারা বহুল প্রশংসিত৷ তাঁর রচিত ‘প্রভাতরঞ্জনের ব্যাকরণ বিজ্ঞানে’ (৩ খণ্ড) তিনি বহু প্রচলিত অনেক বাংলা বানানের ভুলত্রুটি বা অর্থবিচ্যুতি দেখিয়ে সে সবের সংস্কার সাধনেও সচেষ্ট হয়েছেন৷ এ ধরনের কিছু বাংলা বানান সম্পর্কে তাঁর অভিমত তাঁর ভাষাতেই প্রকাশ করা হচ্ছে ঃ  ––––জ্ঞানভিক্ষু]

 

বাংলা বানান সংস্কার

কর্ষক

এমনিতে যাঁরা চাষবাস নিয়ে থাকেন তাঁদের জন্যে সংস্কৃত ভাষায় বেশি প্রচলিত শব্দ দু’টি রয়েছে–কৃষীবল ও কর্ষক৷ ‘কর্ষক’ শব্দটি কৃষ ধাতু থেকে উৎপন্ন৷ যাঁরা এই কর্ষককে ‘কৃষক’ বানিয়ে ফেলেছেন তাঁরা না জেনেই এই ভুল করেছেন৷ আর যাঁরা আজও ‘কৃষক’ লেখেন তাঁরা ভুলকে ভুল না জেনেই লেখেন৷ আমরা ‘আকর্ষক’ ‘বিকর্ষক’ বলবার সময় ঠিক বলি কিন্তু কেন বুঝি না ‘কর্ষক’ বলবার সময় ভুল করে কৃষক বলে ফেলি৷

সর্জন

বাংলা বানান সংস্কার

কর্ষক

এমনিতে যাঁরা চাষবাস নিয়ে থাকেন তাঁদের জন্যে সংসৃক্ত ভাষায় বেশি প্রচলিত শব্দ দু’টি রয়েছে–কৃষীবল ও কর্ষক৷ ‘কর্ষক’ শব্দটি কৃষ ধাতু থেকে উৎপন্ন৷ যাঁরা এই কর্ষককে ‘কৃষক’ বানিয়ে ফেলেছেন তাঁরা না জেনেই এই ভুল করেছেন৷ আর যাঁরা আজও ‘কৃষক’ লেখেন তাঁরা ভুলকে ভুল না জেনেই লেখেন৷ আমরা ‘আকর্ষক’ ‘বিকর্ষক’ বলবার সময় ঠিক বলি কিন্তু কেন বুঝি না ‘কর্ষক’ বলবার সময় ভুল করে কৃষক বলে ফেলি৷

অসংসৃক্তি

বাংলা বানান প্রসঙ্গে৷

* ও, আর/এবং–সংযোজক ‘ও’–এর পরিবর্ত্তে অনেকে প্রায়শঃ ‘এবং’ শব্দটির ব্যবহার করে থাকেন৷ কিন্তু ‘এবং’ মানে ‘ও’ নয়৷ ‘এবং’ বাংলা শব্দও নয় এটি একটি সংসৃক্ত শব্দ, যার মানে ‘এইভাবে’, ‘এইরকমে’৷ যেমন, ‘এবং কুরু’ মানে এইভাবে করো৷ সুতরাং ‘ও’–র পরিবর্ত্তে ‘এবং’ প্রয়োগ করলে চলক্ষে না৷ পরিবর্ত্তে ‘ও’ বা ‘আর’ লিখলেই ভাল হয়৷

বাংলা বানান প্রসঙ্গে

জ্ঞানভিক্ষু

প্রাউট–প্রবক্তা মহান দার্শনিক ঋষি শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার ভাষাতত্ত্ব ও ব্যাকরণ বিজ্ঞানের ওপরও বহু অমূল্য পুস্তক রচনা করেছেন, যা কলকাতা, ঢাকা, কল্যাণী প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা অধ্যাপক সহ বিশিষ্ট ভাষাতাত্ত্বিক ও জ্ঞানী গুণীজনের দ্বারা বহুল প্রশংসিত৷ তাঁর রচিত ‘প্রভাতরঞ্জনের ব্যাকরণ বিজ্ঞানে’ (৩ খণ্ড) তিনি বহু প্রচলিত অনেক বাংলা বানানের ভুলত্রুটি বা অর্থবিচ্যুতি দেখিয়ে সে সবের সংস্কার সাধনেও সচেষ্ট হয়েছেন৷ এ ধরনের কিছু বাংলা বানান সম্পর্কে তাঁর অভিমত তাঁর ভাষাতেই প্রকাশ করা হচ্ছে ঃ

জাদুগর

‘নোতুন পৃথিবী' : ‘নোতুন’ বানান কেন?

‘নোতুন পৃথিবী’র ‘নোতুন’ বানানটি নিয়ে অনেকে প্রশ্ণ তোলেন৷
নিম্নে শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের বর্ণবিচিত্রা–১ম পর্ব পুস্তক থেকে কিছু অংশ উদ্ধৃত করছি৷ এ থেকেই পাঠকবর্গ ‘নোতুন’ বানানটির তাৎপর্য বুঝতে পারবেন৷