স্বাস্থ্য বিজ্ঞান

শোভাঞ্জন বা শোজনে

পরিচয় ও প্রজাতি ঃ তোমরা শোভাঞ্জন বা শোজনের অথবা (Moringa oleifera pterygosperma Gaetn.) সঙ্গে ভাল ভাবেই পরিচিত৷ শোভাঞ্জন ঞ্ছ শোহাঞ্জন ঞ্ছ শোআঞ্জন ঞ্ছ শোজিনা ঞ্ছ শোজনে৷ শোভাঞ্জন শব্দের ভাবারূঢ়ার্থ হ’ল চোখের শোভা৷ শীতকালে যখন শাদা শোজনে ফুলে গাছ ভরে যায় তখন তা দেখতে ভারী সুন্দর লাগে৷ তাই এর নাম শোভাঞ্জন৷ শোজনের ফুল আসে শীতের মাঝামাঝি সময়ে৷ ডাঁটা ধরে শীতের শেষে–সেই সময়ে যে সময়ে বসন্ত রোগের প্রাদুর্ভাব হয়৷

হৃদ্রোগ (হার্ট ডিজিজ)

লক্ষণ ঃ বুকের মধ্যে জোর শব্দ হওয়া, বুকে ব্যথা, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট বোধ হওয়া, হাত পা থর থর করে কাঁপা প্রভৃতি৷

কারণ ঃ হৃদরোগের পেছনে অজস্র কারণ থাকতে পারে৷

১) পাকস্থলীকে যাঁরা সব সময় খুব বেশী ভারাক্রান্ত করে রাখেন, তাঁদের পাকস্থলীতে অধিক পরিমাণে রক্ত সঞ্চালনের আবশ্যকতা দেখা দেয় ও ওই রক্ত যুগিয়ে চলবার জন্যে হৃদ্যন্ত্রকে অত্যধিক পরিশ্রম করতে হয়, যার ফলে তা’ দুর্বল হয়ে’ পড়ে৷

ভিটামিনের গুণাবলি, প্রয়োজনীয়তা

ভিটামিন–বি কমপ্লেক্স কি শরীরে শক্তি জোগায়?

এন এন এস ঃ কোনো ভিটামিন বা মিনারেলই সরাসরি শক্তি জোগায় না৷ খাদ্যে থাকা শক্তিকে ক্যালরিতে পরিমাপ করা হয়৷ খাদ্যের ভেতর কেবল প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেড ও ফ্যাটই ক্যালরি সরবরাহ করার ক্ষমতা রাখে৷ ভিটামিন বা মিনারেলে ক্যালরি বা শক্তি থাকে না৷ কোবাল্ট, কপার, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, পটাশিয়াম, জিঙ্কের মতো ভিটামিন–বিও শক্তি বের করার জন্যে জরুরি৷ তাই ভিটামিন–বিকে গৌণশক্তি সরবরাহকারী হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে৷ জেনে রাখা ভালো, শরীরের চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত ভিটামিন–বি গ্রহণ করলেও তা অতিরিক্ত শক্তি বের করায় কোনো ভূমিকাই রাখতে পারে না৷

গাঁদাল পাতা

পরিচয় ঃ গাঁদাল পাতার সংস্কৃত নাম খরগন্ধা/খরগন্ধিকা/খরগন্ধনিভা৷ তিনটে শব্দেরই অর্থ গাঁদাল পাতা৷ খর মানে ....... পায়খানার দুর্গন্ধ৷ যে পাতায় কতকটা ওই ধরণের গন্ধ রয়েছে তা খরগন্ধা৷ গাঁদাল পাতার অন্য সংস্কৃত নাম হচ্ছে–কৃষ্ণপল্লবি/কৃষ্ণপল্লবী/কৃষ্ণপল্লবিনী৷ ঙ্মলৌকিক সংস্কৃতে বলা হয় গন্ধভাদালী ক্ষ৷ গাঁদাল একটি লতানে উদ্ভিদ৷

এ্যান্টি বায়োটিকের কুফল

এলোপ্যাথি চিকিৎসায় জ্বর, পেটের অসুখ যাই হোক না কেন কথায় কথায় এ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে তাড়াতাড়ি রিলিফ দেওয়া হয়৷ কথায় কথায় বড়দের বা শিশুদের অসুখ-বেসুখেও এ্যামোক্সিসিলিন, মেট্রোনিডাজোল  গ্রুপের এ্যান্টি বায়োটিক ওষুধ ব্যবহার করা হয়৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই যথেচ্ছভাবে এ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার কারণেই ভারতে বছরে ৫৮ হাজার শিশুর মৃত্যু হয় বলে এক সমীক্ষায় জানা গেছে৷ সমীক্ষাটি করেছেন সিডিডিইপি (সেন্টার ফর ডিজিজ ডায়লমিক্স ইকোনমিক্স এ্যাণ্ড পলিসি)৷

হৃদরোগীদের জন্যে গাজর

প্রতিদিন গাজর খেলে হৃদরোগের ভয় কমে যায়৷ দীর্ঘ গবেষণার পর জানা গেছে যে গাজরের খাদ্য মূল্য অত্যন্ত অধিক৷ গাজরে আছে বিটা–ক্যারোটিন যা হৃদরোগের আক্রমণ থেকে অনেকাংশে বাঁচায়৷ একটি সমীক্ষায় জানা গেছে যাঁরা নিয়মিত গাজর তরকারি করে খান তাঁদের হৃদরোগের সম্ভাবনা ৬৮ শতাংশ কমে যায়৷ সুতরাং প্রতিদিন একটি করে গাজর খেলে হৃদরোগে ভয় অনেকটাই কমে যায়৷

মানসিক দুশ্চিন্তা দূর করতে নিম পাতা চিবিয়ে খান

নিম পাতা আমাদের বিশেষ উপকারী সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷ তবে মানসিক দুশ্চিন্তা দূরে রাখতে নিম পাতা যে সাহায্য করে তা হয়ত অনেকেই জানেন না৷ দুশ্চিন্তা দূর করতে প্রতিদিন কয়েকটি তাজা নিম পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন৷ তাজা নিমপাতা চিবিয়ে খেলে চর্মরোগ দূরে পালিয়ে যায়, দাঁতের অসুখ সেরে যায়, রক্তে শর্করা ও উচ্চচাপ দূরে পালিয়ে যায়৷ এছাড়া নিদ্রাহীনতার রোগও পালিয়ে যায়৷ অম্বল হলে নিম গাছের ছাল এক কাপ গরম জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে ছেঁকে খালি পেটে খেলে উপকার পাওয়া যায়৷ রোজ সকালে খালি পেটে নিমছাল ও নিমপাতা বেটে তার বড়ি করে খেলে কৃমি রোগ সেরে যায়৷

শ্বাসযন্ত্র সংক্রান্ত রোগ ও জ্বররোগে তুলসী

তুলসীর গুণাগুণ ঃ বাংলার গ্রামে রাধাতুলসী যতটা জনপ্রিয়, বাবুই তুলসী বা কৃষ্ণতুলসী ততটা জনপ্রিয় নয়৷ সব তুলসীর ঔষধীয় গুণ প্রচুর৷ তবে ঔষধীয় গুণে সবার সেরা রাধাতুলসী, তারপর বাবুইতুলসী, তারপরে চন্দন তুলসী, তারপরে কৃষ্ণতুলসী৷ রাধাতুলসী মানুষের বয়স যত কম থাকে তার ওপরে তত বেশী প্রভাব বিস্তার করে৷ যত বয়স ক্ষাড়ে রাধাতুলসীর ঔষধীয় প্রভাব তার তুলনায় তত কম হয়৷ মানুষের বয়স যত বেশী হবে কৃষ্ণতুলসীর ঔষধীয় গুণের প্রভাব তত বেশী কাজে লাগবে৷ আর বয়স যত কমতে থাকবে ঔষধীয় গুণের প্রভাব তত কমতে থাকবে ঙ্ম দ্রব্যগুণের ভিত্তিতে চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোন বিশেষ রোগে যে প্রকার তুলসী বেশী কার্যকরী, তা না পাওয়া গে

নারকোল

নারকোল পৃথিবীর বিষুবরেখীয়, কর্কটক্রান্তীয় ও মকরক্রান্তীয় এলাকায় জন্মায়৷ নারকোলের প্রজাতি আছে অনেক রকমের৷ তবে বয়স–সীমা ও উচ্চতার বিচারে ভারতীয় নারকোল মুখ্যতঃ দু’টি শাখায় বিভক্ত৷ কনিষ্ঠ প্রজাতির নারকোল আন্দাজ ৭ বছর বয়সে ফল দেয়, দেয়ও মাঝারি পরিমাণে বাঁচে আন্দাজ ৪০ বছর৷ গরিষ্ঠ প্রজাতির নারকোল ফল দেয় আন্দাজ ৯ বছর বয়সে বাঁচে আন্দাজ ৭৫ বছর, ফল দেয় যথেষ্ট পরিমাণে৷ আজকালকার অধিক ফলনশীল নারকোল* তিন বৎসর বয়সে ফল দিতে শুরু করে৷ নারকোল উৎপাদনে পৃথিবীর প্রধান পাঁচটি দেশ হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ভারত৷ ভারতের নারকোল গাছ ও ফলের সকল অংশই কোন না কোন কাজে লাগে৷ সেজন্যে সংস্কৃত ভাষায়