বি পি পোদ্দার হাসপাতালে হল সফল অস্ত্রোপচার৷ এতগুলি পাথর দেখে ওটিতেই তাজ্জব হয়ে যান চিকিৎসকরা৷ ফেব্রুয়ারি মাসে একদিন পড়তে বসে পেটে চিনচিনে ব্যথা টের পেয়েছিল সুপ্রভা৷ তবে সামনে যার উচ্চ মাধ্যমিক, সে কি আর ব্যথা নিয়ে মাথা ঘামানোর সুযোগ পায়! ব্যথা ভুলে বইয়ের পাতায় মন দিয়েছিল সে৷ জানায়নি মা-বাবাকেও৷ তাহলেই যে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন তাঁরা৷ ডাক্তার, ওষুধ, ছুটোছুটিপাছে পড়ার সময় কম পড়ে! তবে পেটের চিনচিনে ব্যথা আর পাঁচটা সাধারণ ব্যথার মতো রইল না৷ পরীক্ষাটা কোনওমতে মিটতেই ব্যথা চরম আকার নিল৷ বাবা-মা জানতে পেরেই কালবিলম্ব না করে নিয়ে গেলেন হাসপাতালে৷ বি পি পোদ্দার হাসপাতালের সিনিয়র ল্যাপারোস্কোপিক সার্জেন ডাঃ স্বস্তিক নন্দী নিদান দিলেন, গলব্লাডারের অসংখ্য স্টোনই এই ব্যথার কারণ৷ পরীক্ষানিরীক্ষার পর দেখা যায়, অস্ত্রোপচার ছাড়া গতি নেই৷ এদিকে রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যধিক ধরা পড়ায় অস্ত্রোপচার সম্ভব হচ্ছিল না৷ এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ডাঃ অর্কজিৎ ঘোষের তত্ত্বাবধানে থেকে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে এনে করা হল অস্ত্রোপচার৷ অস্ত্রোপচার করতে করতেই অবাক বনে যান চিকিৎসকদের দল৷ গলব্লাডারে অনেক পাথর থাকবে, এ শঙ্কা তাঁদের ছিলই৷ তা বলে ৪ হাজার! অবাক বনে যান সকলেই৷ বাড়তি সাবধানতা ও সতর্কতা নিয়ে অস্ত্রোপচার শেষ হয়৷ এই জটিল অপারেশন সাফল্যের সঙ্গে সারতে পেরে খুশি চিকিৎসকদের দল৷ তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন হাসপাতালের গ্রুপ অ্যাডভাইজার সুপ্রিয় চক্রবর্তী৷ জানান, ‘গলব্লাডার স্টোন বা হিস্টেরেক্টমি অপারেশনের ক্ষেত্রে তাদের হাসপাতালে ব্যবহৃত হয় ফোর কে ল্যাপারোস্কোপিক সেট৷ এতে সাধারণ ল্যাপারোস্কোপের তুলনায় আরও ছোট ছিদ্র হয়৷ রক্তপাত ও ব্যথার পরিমাণ আরও কমে৷ সংক্রমণের শঙ্কাও প্রায় থাকে না৷’ ১৮-র সুপ্রভা এখন বেশ চনমনে৷ পেটের ব্যথা ভ্যানিশ! কেমন আছে জিজ্ঞেস করলেই বলছে, ‘স্টোনের চিন্তা আমার আর নেই৷ ওটা ডাক্তারকাকু বুঝে নেবে বলেছে৷ আমি শুধু ভাবছি পরীক্ষা তো ভালো হল, এবার রেজাল্টও যেন ভালো হয়!’
সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়