অগ্ণিগর্ভ অসম - অসম ভেঙ্গে  কি আবার নূতন রাজ্য সৃষ্টির পথে?

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

স্বাধীনতার সময় থেকেই দেখা গেছে উগ্র অসমীয়া জাতীবাদীরা কট্টোর বাঙালী বিদ্বেষী৷ যদিও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তে ও স্বাধীনতার পর হিন্দী সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তে পূর্বতন বাঙলার বৃহদংশকে বাঙলা থেকে কেটে অসমের সঙ্গে যোগ করে দেওয়া হয়েছে৷ অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গোপীনাথ বরদলৈ এক জনসভায় প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, অসম শুধু অসমীয়াদের জন্যে৷ সেই অনুসারে স্বাধীনতার পর তথা পঞ্চাশের দশক থেকেই অসমে চলছিল ‘বঙ্গাল খেদা’ আন্দোলন৷ তখন থেকে বাঙালীদের ওপর বার বার আক্রমণ ও নির্যাতন নেমে আসে৷ এর চরম বীভৎসরূপ দেখা যায় ১৯৮৩ সালে কুখ্যাত ‘নেলী গণহত্যা’র সময়, যখন প্রায় ১০ হাজার বাঙালী নিহত হয়েছিল৷ তারপর অসমের সেই খুনী জঙ্গী বাঙালী বিদ্বেষী ‘অগপ’ দলের সঙ্গেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর বিদেশী বিতাড়ন চুক্তি হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চকে ভিত্তি বছর করে৷ এই বিদেশী বিতাড়ন চুক্তি যে আসলে বাঙালী বিতাড়ন চুক্তি তা বর্তমান ঘটনায় অত্যন্ত পরিষ্কার৷

বর্তমানে অসমের বহু বাঙালী এন.আর.সি কর্তৃপক্ষের কাছে ১৯৫১ সাল থেকে অসমে থাকার নথিপত্র দাখিল করার পরও চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি থেকে তাদের নাম বাদ গেছে৷ যেমন অসমের বঙ্গাইগাঁওদের বাসিন্দা বিকাশ দাস বলেন, তাঁরা স্বাধীনতার পর থেকেই যে এখানে বসবাস করছেন তার নথিপত্র জমা দিয়েও নাগরিকপঞ্জিতে তাদের নাম ওঠেনি৷

অসমের অপর এক বাসিন্দা মুকুল মিত্র বলেন, তিনি ১৯৫১ সালের নথি জমা দিয়েছেন তবু এ নাগরিকপঞ্জিতে তাঁর নাম ওঠেনি৷ অসমের বাসিন্দা পুকেন দাসও বলেন, তাঁদের সমস্ত নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও তাদের পরিবারের ১৮ জন সদস্যের নাম নাগরিকপঞ্জির তালিকাভুক্ত হয়নি৷

এমনিভাবে প্রায় ৪০ লক্ষ বাঙালী এখানকার বৈধ নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তাদের ভবিষ্যৎ যে কী হবে--- তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছেন৷

গোয়ালপাড়া থেকে লামডিং, কাছাড়--- এই সমস্ত অরিজিন্যাল বাংলা ভাষী এলাকাতে বাঙালীরা বিশেষ করে যাদের নাগরিকপঞ্জিতে নাম ওঠেনি , তাদের মধ্যে চরম বিক্ষোভ বারুদের স্তুপের মত জমা হচ্ছে৷ যে কোনো মুহূর্তে প্রচণ্ড বিষ্ফোরণ ঘটতে পারে৷

এইভাবে বাঙালী বিদ্বেষী অসমীয়ারা অসমকে গৃহযুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছে৷ এর আগে উগ্রপন্থী অসমীয়াদের জন্যেই আগেকার অসম টুকরো টুকরো হয়ে মেঘালয়, মিজোরাম, মণিপুর, অরুণাচল প্রভৃতি সব আলাদা রাজ্য সৃষ্টি হয়েছে৷ এখনও কি আবার অসম ভাঙ্গতে চলেছে? এই সমস্ত এলাকায় ভাল করে কান পাতলে এই আশংকার কথা শোনা যায়৷