বিশ্বভ্রাতৃত্বের মহান বাণীকে বাস্তবায়িত করতে হবে

লেখক
প্রভাত খাঁ

বর্ত্তমানে বিরাট দেশ ভারত যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে পৃথিবীতে অদ্যাবধি গৌরবোজ্জ্বল রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করতে পারলো না৷ তার মূল কারণটিকে কেউই খুঁজে বের করতে পারলো না৷ সেটার একমাত্র কারণ যে দলগুলো শাসনে আসছে তারা সেবামূলক মানবতাবাদী শাসক না হয়ে নিজেদের দলতন্ত্রকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়ুল মারছে পদে পদে পর পর৷

তাই কংগ্রেস অন্তিম দশায়, বামপন্থীরা প্রায় শেষ আর সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী বিজেপি কেন্দ্রে শাসনে এসে ‘‘মন কি বাত’’ ‘‘আর’’ ‘‘মেক ইন ইন্ডিয়ার’’ গল্প ফেঁদে ন্যাজে গোরবে হয় পড়েছে৷ ৭ বছরে যা কাণ্ড ঘটালো তাতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো আকারে ছোট হয়েও ভারতকে পশ্চাতে ফেলে দিয়েছে আর্থিক ও সামাজিক দিক থেকে৷ এদেশে চলছে সেই দলবাজি আর দাদাগিরি!

মূলত ঃ সেই দলবাজি শাসন ব্যবস্থায় কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির সঙ্গে  সাংবিধানিক যে সম্পর্ক রাখাটা অতি প্রয়োজন সেটাকে কেন্দ্রের  সরকার পদে পদে দলীয় স্বৈরাচারিতার আচরণ করে চলেছে৷ এটা অগণতান্ত্রিক ও অসংবিধানিক নিদর্শন৷ অদ্যাবধি দেখা যায় কেন্দ্রের  সরকার রাজ্যের বিরোধী রাজ্যগুলিকে পদে পদে হেনস্থা ও আর্থিক সাহায্য এর ব্যাপারে বঞ্চনা করাটাই যেন তাঁদের একটা নোংরা দলনীতিতেই পরিণত হয়েছে৷

কংগ্রেসী সরকার ইন্দিরার আমলে ছলবল কৌশলে বিরোধী দলের রাজ্যগুলোকে ফেলে দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতো৷ পরে বর্ত্তমানের বিজেপি সরকারকে দেখা যাচ্ছে সেই একই নীতিকে অনুসরণ করার মত তাঁদের মনোনীত গভর্নরগুলিকে বিরোধী দলের রাজ্যগুলিতে বসিয়ে যেন সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে কাজ করছে৷ এতে দেশবাসী বিশেষ করে সচেতন নাগরিকগণ অতি বিরক্ত ও অসন্তুষ্ট৷

ভারতে এক বিশেষ নির্বাচন পদ্ধতির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন৷ কিন্তু রাজ্যের গভর্নর ছোটলাটকে কেন্দ্র রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করেই একজন কেন্দ্র সরকারের ইয়েস ম্যানকে বসানো হয়৷ পূর্বে কিন্তু দেখা গেছে কেন্দ্র সরকার রাজ্য সরকারের ইয়েসম্যানকে বসানো হয়৷ পূর্বে কিন্তু দেখা গেছে কেন্দ্র সরকার নিয়োগের পূর্বে অন্ততঃ রাজ্যকে জ্ঞাত করতেন৷ কেন্দ্রের বর্তমান সরকার সেটাকেও মানেন না৷  পশ্চিম বাঙলার মুখ্যমন্ত্রীতো সে কথা বার বার বলেন৷

বরং সম্মানের খাতিরে আগ বাড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বর্ত্তমান রাজ্যপাল এ রাজ্যের শাসন এর দায়িত্ব নেবার আগেই তাঁকে সম্মান  দেখিতে আহ্বান  করেন৷ কিন্তু দেখা গেল রাজ্যপালের দুটো দায়িত্ব যে রাজ্যের রাজ্যপাল সেই রাজ্যের শাসক প্রধান হয়ে রাজ্যের উন্নয়নে যা যা দরকার তার সংবাদ ও দাবীটাও জানানো কেন্দ্র সরকারকে জ্ঞাত করা৷ ইনি প্রথম থেকেই রাজ্য সরকারের দোষ ত্রুটিগুলিকে রুটিন মাফিক  অভিযোগের ফিরিস্তি তৈরী করে কেন্দ্রকে তুষ্ট করতে সদাব্যস্ত৷ তাঁর নামে রাজ্যশাসিত হচ্ছে৷ কিন্তু রাজ্যের যা যা দরকার শাসক প্রধান হয়ে একটা কথা ও অদ্যাবধি শোণা গেল তাঁর মুখে৷ শুধু আইন শৃঙ্খলার অবনতির রিপোর্ট দিল্লিতে যাচ্ছে! কিন্তু  সারা ভারতের মধ্যে পশ্চিমবাংলা কিন্তু সর্বক্ষেত্রে বিশেষভাবে শত আর্থিক কষ্টের মধ্যে এগিয়ে চলেছে৷ তার নজির সারা দেশ ও পৃথিবী লক্ষ্য করছে৷ ছোটলাটের মিথ্যা এক তরফা রিপোর্ট কিন্তু পশ্চিমবঙ্গবাসী প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচনে মত দান করে কেন্দ্রকে একেবারে নোংরা মিথ্যাচারিতার  জবাব  দিয়ে বুঝিয়েছে ---যে বাঙলা বড়ই কঠিন ঠাঁই৷

দিল্লির শাসকগণ ৭ বছরে যা কাণ্ড করছে সেটা এক অতি নিকৃষ্ট অগণতান্ত্রিক কুশাসন যা গণতন্ত্রের নামে স্বৈরাচারিতা৷ এখনো সময় আছে কেন্দ্র সরকার সংযত হয়ে কাজ করেন৷ জনগণকে একটু সেবা দেবার ও বেঁচে থাকার জন্য সুযোগ করে দিক৷ বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করুক৷ কলকারখানা সুষ্ঠুভাবে চলার ব্যবস্থা করুক৷ শিক্ষা ব্যবস্থাটাতো একেবারে গোল্লায় চলে গেছে৷ রোগে প্রাণদায়ী ঔষধ-এর দাম সাধারণের বাইরে৷ যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বিজ্ঞানসম্মত করুন৷ সেবা দিয়ে মানবিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করে বিশ্বৈকতাবোধকে সর্বাগ্রে স্থান দিয়ে জাত পাতকে প্রশ্রয় না দিয়ে মানব সভ্যতাকে মূল্য দেওয়াটা সারা ভারতের প্রধান কাজ চাই৷ সুশিক্ষার বিস্তার ঘটানো৷ হয় --- নররূপী নারায়ণের সেবা দিতে হবে ও সকল জীবজন্তু, গাছপালাকে রক্ষার গ্যারান্টি দিতে হবে সরকারকে ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের৷

তাঁরা যেন দণ্ডমুণ্ডের কর্ত্তা হয়ে স্বৈরাচারী শাসক হওয়ার মিথ্যা স্বপ্ণ না দেখেন! নির্বাচনকে পবিত্র মতদান হিসাবে যেন রক্ষা করা হয়৷ তা না হলে আগামী দিনে এক অভাবনীয় প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটবে যা ধান্দবাজরা বুঝতেও পারবেন না৷ কারণ মহান সৃষ্টি কর্ত্তা অপেক্ষা করেন আর সবই দেখেন ৷ তাঁর আঘাত বড়ই ভয়ঙ্কর৷ তিনি চান তাঁর সৃষ্টিতে যেন কোন শোষন ও দুর্নীতি বৈষম্য মাথাচাড়া না দেয়৷ সবাই তার সন্তান তাঁরা যেন সকলে বেঁচে থাকার সুযোগ পায় ও কেউ যেন শোষিত ও বঞ্চিত না হয়৷  কিন্তু অদ্যাবধি এ দেশে সেই দুর্নীতি,শোষণ ও বঞ্চনাই যেন আকাশ ছোঁয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে! এর আশু প্রতিকার দাবী করেন মহাকাল! ভারতের জনগণকে স্মরণে রাখতে হবে একটি মহানবাণী তা হলো বিশ্বের সকল মানুষ অমৃতের সন্তান৷ তাঁদের একমাত্র পরিচয় এক মানব সমাজের তাঁরা পরমআত্মীয় স্বরূপ ভাই ও বোন৷  ভারতের সেই বিশ্বৈকতাবোধে জাগ্রত করে এক শোষণমুক্ত  মানব সমাজ গড়ে তোলা৷ তাই জাত-পাত, নানা ধর্ম মতের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হয়ে এগুতে হবে---সেই মহান বেদের ---সংগচ্ছধবং মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে৷