বিশ্বের ১৮২টি দেশে পালিত হ’লশ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তি জন্মতিথি উৎসব

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ২৯শে এপ্রিল, ২০১৮ আনন্দপূর্ণিমার (বৈশাখী পূর্ণিমা) Baba birthda-18পুণ্য তিথিতে আনন্দমার্গের প্রবক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী ৯৮ তম শুভ জন্মতিথি তথা ৯৭ তম জন্মবার্ষিকী উৎসব উদযাপিত হ’ল৷ বিশ্বের ১৮২ টি দেশে আনন্দমার্গীরা মহাসমারোহে এই দিনটিকে পরম ভক্তি ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করেন৷

কলকাতা ভি. আই. পি নগরে আনন্দমার্গের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই উপলক্ষ্যে ২৮শে এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা থেকে ‘বাবা নাম কেবলম্’ অখন্ড কীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হয়৷ এই কীর্ত্তনে কলকাতা ও আশপাশের জেলার কয়েক হাজার আনন্দমার্গী যোগদান করেন৷ শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী পবিত্র জন্মক্ষণ ৬.০৭ মিনিট পর্যন্ত এই অখন্ড কীর্ত্তন চলে৷ এর পর মার্গগুরুদেবের জয়ধ্বনি ও শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি প্রভৃতি দিয়ে সবাই মিলিত সাধনা ও মিলিত গুরুপূজা করেন৷ তারপর মার্গগুরুদেবের বাণীপাঠ হয়৷ বাণীটি হল ঃ

‘‘মানুষ জাতিকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে রেখে নিজেদের স্বার্থ-সিদ্ধির প্রয়াস সুবিধাবাদীর দল অতীতেও করেছে, বর্তমানেও করছে ও ভবিষ্যতেও করবে৷ তোমরা তোমাদের সৎকর্মের মাধ্যমে এই সুবিধাবাদী কূটনীতিকে তীব্র ভর্ৎসনা জানিয়ে দূরের অচেনা অজ্ঞাত মানুষকে কাছে টেনে এনে একটি সুস্থ বিশ্বভিত্তিক মানব-পরিবার গড়ে তোল৷ পশুশক্তির ভ্রূকুটি, মদগর্বীর অভ্রংলেহী স্পর্দ্ধা, মিথ্যাচার, দুর্নীতি ও বহ্বাস্ফোটককে উপেক্ষা করে’ অভীষ্টের দিকে এগিয়ে’ চল৷ পরমপুরুষের আশীর্বাদ তোমাদের সঙ্গে থাকবে৷’’

বাংলা, সংস্কৃত, ইংরেজী, ও হিন্দী, ওড়িয়া, তেলেগু, তামিল, অঙ্গিকা, ভোজপুরী, ছত্তিশগড়ি, ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় এই বাণীপাঠ হয়৷ বাণীপাঠের পর এই বাণীর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন বাংলায় আচার্য মন্ত্রেশ্বরানন্দ অবধূত, হিন্দীতে আচার্য বীতমোহানন্দ অবধূত ও ইংরেজীতে আচার্য কল্যাণেশ্বরানন্দ অবধূত৷

ভি.আই.পি. নগর এলাকাতে কীর্ত্তনBaba birthday 1 - 18 পরিক্রমা ও সঙ্গে সঙ্গে জনসাধারণের মধ্যে প্রসাদ বিতরণও করা হয়৷ আনন্দমার্গের মহিলা কল্যাণ বিভাগের পক্ষ থেকে বারুইপুর সরকারী হাসপাতালে রোগীদের মধ্যে ফল ও মিষ্টান্নও বিতরণ করা হয়৷

সকাল ১০টা থেকে কলকাতার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে আনন্দমার্গের এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাও বের হয়৷ সঙ্গে ছিল শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী প্রতিকৃতি ও তাঁর বাণী সহ সুসজ্জিত ট্যাবলো৷ সঙ্গে প্রভাত সঙ্গীত ও কীর্ত্তন৷ এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ধর্মতলা রাণী রাসমণি এ্যাভেনিউতে গিয়ে সমাপ্ত হয়৷

আশ্রমে সকাল ১০টায় ভি. আই. পি. নগর এলাকার দুঃস্থ মানুষদের মধ্যে আনন্দমার্গ ইয়ূনিবার্স্যাল রিলিফ টীমের পক্ষ থেকে দরিদ্র মানুষদের মধ্যে বস্ত্র (ধুতি ও শাড়ী) বিতরণ করা হয়৷ এরপর আশ্রমে প্রভাতসঙ্গীত পরিবেশন করেন অরুণিমা ভট্টাচার্য, সুস্মিতা দে, অবধূতিকা আনন্দ অভীষা আচার্যা ও আরও অনেকে৷ তারপরে বাবাকথা (বাবার শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী সান্নিধ্যের অভিজ্ঞতা) নিয়ে আলোচনা করেন আচার্য সর্বেশ্বরানন্দ অবধূত, আচার্য হরাত্মানন্দ অবধূত, অবধূতিকা আনন্দ করুণা আচার্যা প্রমুখ৷

এরপর সমস্ত ভক্তরা মিলিতভাবে প্রসাদ গ্রহণ করেন৷ প্রসাদ গ্রহণের পর আনন্দমার্গের বুদ্ধিজীবী প্রকোষ্ঠ রেণেশাঁ ইয়ূনিবার্সাল (আর. ইয়ূ)–র উদ্যোগে মানব সমাজে শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী অবদান বিষয়ে  এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়৷