মাতৃজাতির নিরাপত্তা নেই রাষ্ট্রে এই কি সভ্যদেশের শাসন ব্যবস্থা

লেখক
প্রভাত খাঁ

আমরা কোথায় বাস করছি ৷ এটা  কি সত্যই একটি সার্থক যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক  রাষ্ট্র না একটা  হিংস্র মগের রাজ্য? যে দেশে মাতৃ জাতির সামান্যতম সম্মানটুকু সরকার  রক্ষা করতে ব্যর্থ সেই সরকারের শাসন ক্ষমতায় থাকার কোন যোগ্যতাই নেই৷ দেশে কোন শাসন ব্যবস্থা আছে বলে মনে হয় না৷ এ কোন বর্বরতার শাসন দেশে চলছে? উন্নাওয়ে শুধু কেন, অন্য রাজ্যগুলোতে টিভি খুল্লেই, সংবাদপত্র  পড়লেই দেখা যায় এমন কোনদিন নেই যেদিন হতভাগ্যগিনী মাতৃজাতির প্রতি এই দেশে নির্য্যাতন নিপীড়ণ ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড হচ্ছে না৷ কিছু মানুষতো পশুর চেয়ে অধম৷ তারা শিশু মেয়েদের নির্যাতন  থেকে রেহাই দেয় না৷ স্বরাষ্ট্র দফতরের  কাজটা কী? এ কোন বর্বরতার রাজত্ব এ দেশে চলছে! শুধু গদীতে বসে ওস্তাদি মার্র্ক বত্তৃণতা দিলেই কি দেশ শাসন হয়? ভারতের  এইসব কাণ্ডে সারা পৃথিবীর  কাছে একটাই  প্রশ্ণ তা হলো--- ভগবান বুদ্ধের  শ্রীকৃষ্ণের, সদা শিবের দেশে এসব কাণ্ড ঘটে কি করে? এতে জঙ্গলের হিংস্র পশুরাও  মুচকে হাসছে  এদেশের  কিছু সংখ্যক মানুষের বর্বরোচিত আচরণে৷ দেশে আইন-আদালত আছে, পুলিশ প্রশাসন আছে কিন্তু শাসক দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস কারো নেই৷

একটা দিক দেখে বড়ই দুঃখ হয় তা হলো শাসনে যারাই আসে তারাই অপরাধী হয়ে যায়৷ অপরাধ ঘটিয়ে নির্যাতিতাকে ও তার পরিবারকে উদারতা দেখিয়ে কিছু অর্থ দান করে অপরাধ ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করে৷ এটা অত্যন্ত অপ্রিয় সত্যকথা তা হলো  প্রায় সর্বক্ষেত্রেই দেখা যায় এসব৷ উন্নাও সেটাই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল৷ অপরাধী শাসক দলের হোমরা-চোমরা হলে আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়৷ উন্নাও নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের মূল অপরাধী প্রাক্তন বিধায়ক ও শাসক দলের নেতা ছিলেন৷ তাই অপরাধীরা সহজেই জামিন পেয়ে গেল৷ আর জামিন পেয়েই নির্যাতিতা মেয়েকেই পুড়িয়ে মারে৷ তবু প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই৷

বীভৎস কাজের  পেছনে  অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রয়ে গেছে শাসক দলের অতি উৎসাহী কিছু নরাধমের দল৷ প্রায় প্রতি  ঘটনার পশ্চাতে এই নরাধমরা  থাকে ! প্রকৃত  শাসন বলতে এখানে  মোটেই নেই! রাজনৈতিক দলগুলোর  যে দেশ শাসনে ব্যর্থত সেটা কি  তাদের  মনে হয় না ?  এটাও অতীব সত্য বিশাল দেশে অভিভাবক ও  নাগরিকদের নারী পুরুষ নির্বিশেষে সর্বদা  কিছুটা  সচেতন থাকা দরকার৷ পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে সব সমসা ও অপরাধ এর সমাধান ও  শাস্তি দান করা সম্ভব কি ? অনেক  অপরাধী ছাড়া পায় সাক্ষের অভাবে কারণ বিচারক যদি সঠিক অপরাধীকে চিহ্ণিত করতে না পারেন তা হলে শাস্তি বিধান দেওয়াটা সম্ভব নয়৷ সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে অপরাধীরা ছাড়া পায়! তবে এও ঠিক অপরাধী যদি শাসক দলের মদতপুষ্ট হয় তখন সেই সব অপরাধীর বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবার সাহস সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্তা ব্যষ্টি কারোরই থাকে না৷

গত ১৯৮২ সালে কলকাতার বুকে দিনের বেলায় আনন্দমার্গের ১৭ জন সন্ন্যাসী সন্ন্যাসিনী যে  নির্মমভাবে  পুড়িয়ে মারা হয় তার তো সঠিক বিচারই হয়নি! কারণ সেই একই৷ এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের পেছনে মদত ছিল এ রাজ্যেরই শাসক দলের৷ তাই সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার আজও হয়নি৷ শাসন ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার আগেই অপরাধের সব প্রমাণ লোপাট করে দিয়ে গেছে৷

এ ধরণের শাসনে নাগরিকদের নিরাপত্তা থাকে না৷ শাসক দলের মর্জিমত চলতে হয়৷

তাই আজ সেই অসহায় মানুষ অনেক সময় অতিষ্ট হয়ে নিজেই শাস্তি  দেয় কিছু নরপশুদের৷  যদিও এটাও সুশৃঙ্খল প্রশাসনের লক্ষণ নয়৷ তবু এর দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে৷ তাই আজ শাসক  ও জনগণকে যৌথভাবে  দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় দায় দায়িত্ব অবশ্যই নিতে হবে৷ নাগরিকদের  জাগ্রত প্রহরীর ভূমিকায় থাকতে হবে তবে দেশে শান্তি প্রতিষ্টা হবে৷ আর সরকারকে  অবশ্যই আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় যেমন  নিরপেক্ষ হতে হবে ঠিক তেমনই  সুশিক্ষা, চরিত্র ঘটনে, সুনাগরিক সৃষ্টির  দিকে  সমাজ ও সরকারকে  নৈতিক দায়িত্ব পালন অবশ্যই করতে হবে৷ দলবাজিটা যে  দেশকে ধবংসের পথে  হিড় হিড় করে টেনে নিয়ে যাচ্ছে সেটা জাতীর  জীবনে একটা কলঙ্ক বিশেষ৷ সেটা যেন সকলের স্মরণে থাকে ৷ যাতে গণতন্ত্র বাঁচে তারজন্য দেশের মানুষকে  সৎ, নিরপেক্ষ, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক  হবে৷ তবেই দেশের ও মানুষের মঙ্গল হবে৷ আর দলবাজী যত বাড়বে ততই দেশ  ধবংসের পথে এগুবে এটা যেন সকলের স্মরণে থাকে৷