পরিবেশ

লেখক
কণিকা দেবনাথ

পরম শ্রদ্ধেয় দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার তাঁর রচিত একটি গানের মধ্যে বলেছেন--- ‘মানুষ যেন  মানুষের তরে সব কিছু করে যায়, একথাও যেন মনে  রাখে৷ পশু পাখী তার পর নয়, তরুও বাঁচিতে চায়৷’

মানুষ পশু পাখী তরুলতা,জলবায়ু মাটি সব নিয়েই আমাদের পরিবেশ৷ এই পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হলে পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে৷ এই সহজ সত্যটা জানা সত্ত্বেও মানুষের সীমাহীন লোভ দিন দিন পরিবেশকে বিষময় করে তুলছে৷ বিশেষ করে যন্ত্র শিল্পের  বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ দূষণও পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে৷

আজ বলব শুধু বায়ু দূষণের কথা---

বেঁচে থাকার জন্য জলের পাশাপাশি বায়ুও অবশ্য প্রয়োজনীয় উপাদান৷ আমরা শ্বাসকার্যের সময়ে যে অক্সিজেন গ্রহণ করি, সে তো আমরা বায়ু থেকেই পাই৷ এখন এই বায়ু যদি বিষাক্ত হয়ে যায়, বায়ুতে যদি অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়, তবে তা আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক তো বটেই আস্তে আস্তে আমাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়৷

বর্তমানে মানুষ অবিবেচকের মতো এই দুটো কাজই করে চলেছে৷ একদিকে যেমন কলকারখানার ধোঁয়া ও অন্যান্য বর্জ্যপদার্থ বায়ু ও পরিবেশকে দূষিত করছে, অন্যদিকে অরণ্য ধবংস করে বেহিসেবির মতো গাছপালা কেটে পরিবেশে অক্সিজেন উৎপাদনের উৎস ধবংস করছে৷ যার ফলে মানুষ-পশু-পাখি সমস্ত প্রাণী জগতের শ্বাসকার্যকে বিপন্ন করে তুলছে৷ এমনকি উদ্ভিদও দিনে খাদ্য উৎপাদন করতে সূর্র্যলোকের সাহায্যে যেমন অক্সিজেন উৎপাদন করে তেমনি  রাতে খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় সেও শ্বাসকার্যে অক্সিজেন গ্রহণ করে৷ অর্র্থৎ সকল প্রাণীজগৎ ও উদ্ভিদ জগত বায়ুতে উপস্থিত অক্সিজেনের উপর জীবনধারণে সক্ষম৷

কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় মানুষ এটা বুঝেও বোঝে না৷ তাই অবিবেচকের মতো অরণ্য ধবংস করে নিজের জীবনকে বিপন্ন করে তুলছে৷ দূষিত বায়ু শুধু আমাদের শ্বাসকার্যেই বিঘ্নিত করে না---মাথা ব্যথা, হাঁপানি, ক্যান্সার, ও ফুসফুসের বিভিন্ন রোগের মানুষ আক্রান্ত হয়ে এই দূষিত বায়ুর কারণে৷ অবিলম্বে ভারসাম্য বজায় রাখতে বায়ু দূষণ বন্ধ করা প্রয়োজন৷