ঊণসত্তরতম প্রজাতন্ত্র দিবসে কিছু মৌলিক ভাবনা

লেখক
জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

২০১৮ সনের ২৬শে জানুয়ারী ভারতের ৬৯-তম প্রজাতন্ত্র দিবস সমগ্র ভারতবর্ষে মহা সমারোহে পালিত হ’ল৷ ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী থেকেই স্বাধীন ভারতের শাসনকার্য সুচারুভাবে পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে ভারতের সংবিধান কার্য্যকর হয় ও অদ্যাবধি বহুবার সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়েছে৷ প্রজাতান্ত্রিক তথা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য প্রদান করাই দেশের শাসকবর্গের একমাত্র লক্ষ্য৷ তাই বিধানসভা, লোকসভার সদস্যগণ, রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল ও সকল মন্ত্রীগণ ভারতীয় সংবিধানের নামে শপথ নিয়ে জনগণকে নিরপেক্ষ ও নিঃস্বার্থভাবে সেবার অঙ্গীকার করেন কারণ গণতন্ত্রে মূল প্রতিপাদ্য হ’লfor the people, of the people, by the people৷

স্বাধীনতা লাভের পূর্ব থেকে ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠীর নির্যাতন, নিপীড়ন ও বিভাজন-নীতির ফলে ভারতের জনসাধারণ বিভিন্ন জাতি, বর্ণ, গোষ্ঠী সম্প্রদায়ে বিভক্ত থাকার দরুণ তাদের মধ্যে সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল৷ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস ও অসন্তোষ আরও বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় দেশভাগ পরবর্তী উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে৷ এমতাবস্থায় বিশাল দেশ এই ভারতবর্ষের জনসাধারণকে মিলনের সূত্রে বেঁধে উন্নয়নের মূল ধারাপ্রবাহে সামিল করার লক্ষ্যে সংবিধান চালু করে ভারতবর্ষকে একটি ধর্ম নিরপেক্ষ, প্রজাতান্ত্রিক সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হ’ল ও সকল নাগরিকের স্বার্থ, বাক্-স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, নিজ নিজ ধর্ম প্রতিপালনের স্বাধীনতা, ভাষা--সংসৃকতি-ঐতিহ্য রক্ষা ইত্যাদি মৌলিক অধিকার প্রদান করা হয়৷ প্রতিটি দেশবাসী যাতে নূ্যনতম প্রয়োজন যথা খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থান, শিক্ষা পেতে পারে তার জন্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হ’ল৷ সমগ্র ভারতবর্ষের সমস্ত নাগরিক জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সার্বিক উন্নয়নের শরিক হয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে ক্রমাগত উন্নতির পথে এগিয়ে চলতে পারে ও অদূর ভবিষ্যতে ভারতবর্ষ একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত হতে পারে সেই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার রূপরেখা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা হয়৷

আজ প্রজাতন্ত্র দিবসের ৬৯ বছরে পদার্পণ করেও দেশ সেই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি৷ এখনও সমগ্র দেশেই সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য ভয়ঙ্করভাবে প্রকট৷ জনসাধারণ বিভিন্ন জাত-পাত-গোষ্ঠী-সম্প্রদায়, দল-উপদল, ভাষা-উপভাষা ধর্মমতগত ভেদে বিভক্ত৷ রাজনৈতিক দলগুলি এই বিভাজনকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে সদা সচেষ্ট৷ সংবিধানে তৎকালীন আর্থিক ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্যে চাকুরী ও অন্যান্য ক্ষেত্রে স্বল্পকালীন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল যাতে তাদের যথোপযুক্ত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা যায়৷ কিন্তু পরবর্তীকালে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও গোষ্ঠীগত চাপে সেই তালিকা দীর্ঘ হতে হতে ঊণপঞ্চাশ শতাংশে পৌঁছেছে আর এই সংরক্ষণ প্রক্রিয়া বর্তমানেও পূর্ণমাত্রায় বহাল  আছে৷ শুধু তাই নয়, বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলির ওপর প্রভূত চাপ দেওয়া হচ্ছে যেন সংরক্ষণের মাত্রা আরও বাড়ানো হয়৷ এই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময়ে বহুবিধ আন্দোলন সংঘটিত হয়েছে ও সেগুলি অত্যন্ত মারমুখী ও হিংসাত্মক রূপ নিয়েছে৷ সংরক্ষণজনিত আন্দোলন যদি এভাবে চলতে থাকে তবে ভারতবর্ষে হয়ত একদিন গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি দেখা যেতে পারে৷ সুতরাং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের এই বিষয়ে যথেষ্ট বিবেচনাপ্রসূত সতর্ক পদক্ষেপ করা প্রয়োজন৷ তবে একবার বাঘের পিঠে সওয়ার হলে পরে সেই বাঘকে নিয়ন্ত্রণ করা সত্যিই খুব কঠিন কাজ৷

এখনও ভারতের সমস্ত জনসাধারণ দু-বেলা পেট ভরে খেতে পান না৷ জনসাধারণের প্রায় দশ শতাংশ মানুষ পেটে ক্ষিদে নিয়ে ঘুমোতে যায়, অনাহারে, অর্ধাহারে নিশিযাপন করে৷ সকলের মাথার ওপরে নিরাপদ আশ্রয়ও নেই৷ রাজপথের ধারে ধারে পলিথিন বা ঝুপড়িতে, রেললাইনের ধারে, প্লাটফর্মের কোনে বা ব্রীজের নীচে গলি-ঘঁুজিতে লক্ষ লক্ষ মানুষ বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে৷ সরকারীভাবে বাসস্থানের ব্যবস্থা করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নামকরণযুক্ত প্রকল্পে যা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট কম৷ এছাড়াও এইসব প্রকল্প রূপায়নের ক্ষেত্রে দলবাজী ও দুর্নীতির ফলে লাভের গুড় পিঁপড়েতে খেলে ফেলছে৷ শিক্ষার দিক দিয়েও দেশবাসী বিশেষতঃ গ্রামীণ অঞ্চলের মানুষজন অনেক পিছিয়ে৷ তাই অশিক্ষা-কুশিক্ষার ফলে গ্রাম্য এলাকা অধূ্যষিত আমাদের এই বিশাল দেশে কুসংস্কার, অপরিচ্ছন্ন জীবনযাত্রা, অন্ধবিশ্বাস ও ভাবজড়তার মূলোৎপাটন সম্ভব হয়নি৷ আর বর্তমানে শিক্ষায়তনগুলিতে বহুবিধ অনৈতিক, অসামাজিক ও কুৎসিৎ অশালীন ঘটনাক্রমের সংবাদ প্রায়শঃই প্রকাশিত হচ্ছে৷ এই ঘটনাপ্রবাহে মানুষের নৈতিক অবমূল্যায়ন ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ধবংসাত্মক রূপ প্রবলভাবে প্রকট৷ এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও হীন স্বার্থসিদ্ধিজনিত অনুপ্রবেশ যা শিক্ষাঙ্গণের পরিবেশ তথা ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের পবিত্রতা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে৷ স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রেও আমাদের দেশ অনেকটাই পিছিয়ে৷ গ্রামে-গঞ্জে এমনকী শহরাঞ্চলের বহু মানুষ সুষ্ঠু স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত৷ বহু গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রও গড়ে ওঠেনি৷ ফলে স্বাস্থ্য সচেতনতা, পরিচ্ছন্নতা, বিভিন্ন রোগের কারণ ও লক্ষণের সম্বন্ধে প্রাথমিক ধারণা সেইসব অঞ্চলের সাধারণ মানুষজনের নেই৷ তাই তাদের বহুবিধ দূরারোগ্য ব্যাধি ও মহামারীর সংক্রমণের শিকার হতে হয়৷ শহরাঞ্চলের যেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানেও সঠিক পরিকাঠামোর অভাবে নাগরিকগণ সু-চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত৷ শুধু তাই নয়, এক শ্রেণীর অর্থগৃধ্নু বে-সরকারী হাসপাতাল-নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দুর্ব্যবহার ও অনৈতিক কাজকর্মের  দরুণ বহু মানুষ সর্বস্বান্ত ও মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছেন৷ সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলিতেও কতিপয় দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মিগণের কৃতকর্ম ও অভব্য আচরণের ফলে সাধারণ মানুষ সঠিক স্বাস্থ্য পরিষেবা পান না৷ স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত ব্যষ্টিরা যদি প্রকৃত সেবার মানসিকতা সম্পন্ন না হয় তবে অসুস্থ, অশক্ত, অসহায় রোগীদের কষ্টের সীমা থাকে না যা বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় প্রতিনিয়ত পরিলক্ষিত হয়৷ এইসব সেবা প্রতিষ্ঠানগুলিতে অশান্তির বাতাবরণ, বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনা প্রায়ই ঘটতে দেখা যায়৷

দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে ও কোটি কোটি ছাত্র-যুবদের ভবিষ্যত সুরক্ষিত রাখতে তথা দেশের উন্নয়নের বিশাল কর্মযজ্ঞে সামিল করতে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান জরুরী৷ আর এর জন্যে প্রয়োজন সরকারের সদিচ্ছা, সঠিক পরিকল্পনা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সুস্থিতি, সর্বোপরি রাজনৈতিক স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গী ও বিতর্কহীন নিরপেক্ষতা৷ এই বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যস্তরে সুসমন্বয় একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ শর্ত৷ সরকারী ও বেসরকারী উভয় ক্ষেত্রেই কর্মসংস্থানে জোর দেওয়া অবশ্য কর্তব্য৷ বিভিন্ন কারণে সরকারী ক্ষেত্রে বহু শূন্যপদ খালি থাকা সত্ত্বেও বছরের পর বছর শূন্যপদ পূরণ করা হচ্ছে না৷ তাই পরিবহন ( রেল ও সড়ক উভয়ই), স্বাস্থ্য পরিষেবা (ডাক্তার, নার্স, অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব), শিক্ষা (লক্ষ লক্ষ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর পদ শূন্য), বিচার-বিভাগ (বিচারক ও আইন সংক্রান্ত কর্মী) ইত্যাদি পরিকাঠামোগত বিভাগগুলি সঠিক নাগরিক পরিষেবা প্রদান করতে সক্ষম হচ্ছে না৷ ফলে একদিকে লক্ষ লক্ষ বেকার কর্মহীন, দিশাহীন হয়ে হতাশায় ডুবে যাচ্ছে, ছাত্রসমাজ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অনিশ্চয়তায় ভুগছে, অপরপক্ষে দেশের আপামর জনসাধারণ সঠিক নাগরিক সেবা না পেয়ে হয়রান হচ্ছে, দেশের অগ্রগতি থমকে যাচ্ছে৷ বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলিও পুঁজি লগ্ণী করে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে---জনসেবা তাদের মূল লক্ষ্য নয়৷ কম খরচে, কম কর্মী নিয়োগ করে বেশী লাভ করার জন্যেই দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীরা অর্থলগ্ণী করে৷ বাস্তবিক পক্ষে পুঁজিবাদী অর্থনীতির মূল নীতিও তাই৷ সুতরাং খুব বেশী দানছত্র  বা সেবা পরায়ণতা পুঁজিবাদীদের কাছ থেকে আশা করা বাতুলতা মাত্র৷ প্রকৃতপক্ষে বর্তমান ভারতবর্ষের অর্থনীতি স্বাধীনতাপূর্ব ইংরেজ শাসনাধীন পুঁজিবাদী অর্থনীতিরই উত্তরাধিকারী৷ সেই কারণে বিদেশী শাসকের পরিবর্তে দেশীয় শাসকবর্গ দেশ পরিচালনা করলেও অর্থনীতির চেহারাটা একই রয়ে গেছে ও একই দায়ভার বহন করে চলেছে৷ ফলে দেশের মানুষের মধ্যে সম্পদ বণ্টনের বৈষম্য ভীষণভাবে প্রকট৷ কোথাও প্রাচুর্যের বন্যা বইছে, অপচয় অপরিমেয়, চারজনের জন্যে বিলাসবহুল বিশাল অট্টালিকা, হেলিপ্যাড, সারি সারি গাড়ী, হেলিকপ্ঢার, ব্যষ্টিগত উড়োজাহাজ ইত্যাদি৷ আর কোথাও দশজনের জন্যে দশফুট বাই দশফুট ঘরের চালা, বেকারত্বের গ্লানি ও অনাহার, অর্ধাহার নিত্যসঙ্গী৷

কর্মসংস্থানের অপ্রতুলতায় ফুচকা, ফুলুরি, বেগুনি, পকোড়া, চায়ের দোকান, রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ফেরী, হকারি আর ভিক্ষাবৃত্তি দিয়ে দু-বেলা দু-মুঠো অন্ন সংস্থানের আপ্রাণ চেষ্টাই বহু মানুষের একমাত্র সম্বল৷ দেশবাসীর মধ্যে এই অসাম্য ও সম্পদ বণ্টনের বৈষম্য সার্বিক উন্নয়নের পথে বিশাল বাধাস্বরূপ৷ ‘ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম’ একটি সমীক্ষা রিপোর্টে জানিয়েছে, ‘ইনক্লুসিভ গ্রোথ’ বা সার্বজনীন উন্নয়নের মাপকাঠিতে ৭৪টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ৬২তম৷ এই তালিকায় উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে ভারতের পরে রয়েছে শুধু দক্ষিণ আফ্রিকা আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে ভারতের স্থান সবার নীচে৷ এমনকি পাকিস্তানের মত প্রতিবেশী দেশও এই তালিকায় ভারতের উপরে স্থান পেয়েছে৷ অন্য একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘অক্সফ্যাম’-এর সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে---২০১৭ সালে ভারতে উৎপন্ন সম্পদের ৭৩ শতাংশ গিয়েছে এক শতাংশ মানুষের হাতে যার অর্থমূল্য কেন্দ্রীয় সরকারের বাৎসরিক বাজেটের সমান৷ অথচ দেশের অধিকাংশ মানুষের আয় এক বছরে এক শতাংশও বাড়েনি৷

প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রজা অর্থাৎ নাগরিকদের সুরক্ষা, বাক্ স্বাধীনতা, ভাষার অধিকার, নিজস্ব ধর্মাচরণের অধিকার, শিল্প সংসৃকতির স্বাধীনতা, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার রূপে গণ্য৷ এই বিশাল দেশ ভারতবর্ষের যে কোনও নাগরিকের দেশের যে কোনও অংশে বসবাস করবার, কর্ম বা চাকুরী করার, সম্পদ সৃষ্টি করার অধিকার রয়েছে৷ অথচ সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন অন্যায্য কারণে নাগরিকদের এই অধিকারে অনধিকার হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে৷ এক রাজ্যের লোক অন্য রাজ্যে লাভ-জেহাদ বা অন্য কোনও অজুহাতে প্রকাশ্য দিবালোকে খুন হচ্ছে৷ নিজ নিজ ধর্মমত অনুযায়ী ধর্মাচরণও পদে পদে বিঘ্নিত৷ গো রক্ষা ও ধর্মান্ধতার নামে বহু মানুষকে মৃত্যু বরণ করতে হয়েছে৷ এক ধর্মমতের প্রতি অন্ধসমর্থন, তোষণ ও কুসংস্কার জনিত কারণে অপর ধর্মাবলম্বীদের লাঞ্ছিত, নিপীড়িত ও উৎপীড়িত করার চেষ্টা চলছে৷ ধর্মমত জনিত অসহনশীলতা বর্তমানে দেশের কোণে কোণে ভয়ঙ্করভাবে ছড়িয়ে পড়েছে৷ দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে পরে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে দেশসেবার ভাবনা কিছুটা হলেও বর্তমান ছিল কিন্তু যত দিন গড়িয়েছে তত রাজনৈতিক দলগুলি ভেঙ্গে নূতন দল-উপদল সৃষ্টি হয়েছে ও দেশসেবার প্রকৃত মনোভাব থেকে সরে গিয়ে রাজনৈতিক নেতারা স্বার্থসিদ্ধির ফন্দি-ফিকিরে বেশী মনোযোগী হয়েছেন৷ ফলে দেশের সাধারণ মানুষের অবস্থা ক্রমশ অধোগামী হয়েছে৷

বাক্ স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা ব্যষ্টিগত পরিসরে বা সংবাদ মাধ্যমের ক্ষেত্রেও পদে পদে বিঘ্নিত৷ রাজনৈতিক চাপ, অন্যায় হস্তক্ষেপ, গুণ্ডামী, শাসানির দ্বারা মানুষের মত প্রকাশের পরিসর ক্রমশই সংকুচিত৷  শুধু তাই নয়, অপছন্দের সাংবাদিক ও সংবাদ কর্মীদের ক্ষেত্রেও এর অন্যথা হয়নি৷ এমনকি বহু সাংবাদিক নিহতও হয়েছেন৷ শিল্প-সংসৃকতির ক্ষেত্রেও একই অবস্থা পরিদৃশ্যমান৷ শিল্পীর স্বাধীনতা যূথবদ্ধ গুণ্ডামী ও হিংসা, সন্ত্রাসের কবলে পদে পদে ক্ষুণ্ণ্ হয়ে চলেছে৷ স্বাধীনতার আগে থেকে অদ্যাবধি ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের সীমানা পুনর্বিন্যাসের ফলে অন্যায়ভাবে এক ভাষাভাষী মানুষজনকে অন্য ভাষাভাষী রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করার কারণে জনগণের ভাষার অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে৷ এক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাঙলা ও বাঙালী৷ বাঙলাকে খণ্ড-বিখণ্ড করে বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, ত্রিপুরা, অসম প্রভৃতি রাজ্যে জুড়ে দেওয়ার ফলে সেইসব অঞ্চলের বাঙালীরা ভাষার অধিকার হারিয়েছেন ও মাতৃভাষা ছেড়ে অন্য ভাষাভাষীদের দ্বারা নিরন্তর নির্যাতিত ও শোষিত হচ্ছেন৷ তাই অসমীয়া ভাষার জন্যে অসম, তেলেগুর জন্যে তেলেঙ্গানা, কন্নড়ের জন্যে কর্ণাটক, ওড়িয়া ভাষার জন্যে ওড়িশা হলে সমগ্র বাঙালী অধ্যুষিত অঞ্চলের জন্যে বৃহৎ বাঙালীস্তান অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত৷

ভারতবর্ষ একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হলেও পুঁজিবাদী অর্থনীতির চাপে সঠিকভাবে কল্যাণকামী রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারেনি৷ এছাড়া ভারতবর্ষের মাটিতে কমিউনিষ্ট বা জড়বাদী অর্থনীতি ও চিন্তাধারার অকার্যকারিতা ইতোমধ্যে প্রমাণিত৷ পুঁজিবাদী অর্থনীতি মানুষকে করেছে নিঃস্ব আর কমিউনিজম্ মানুষের মনুষ্যত্ব ও মানবিক গুণগুলি কেড়ে নির্জীব জড়ে পর্যবসিত করেছে৷ ভারতবর্ষের ঐতিহ্য ও সংসৃকতির মূলে রয়েছে আধ্যাত্মিকতা আর অধ্যাত্ম চেতনাই মানুষকে নৈতিক পথে চলার প্রেরণা দেয়৷ কঠোর নীতিবাদী নেতৃত্বের পরিচালনায় দেশ চালিত না হলে মানুষের প্রকৃত উন্নতি সম্ভব নয়৷ এই উদ্দেশ্যেই মহান দার্শনিক ঋষি প্রভাতরঞ্জন সরকার মানব সমাজকে দিয়েছেন ‘প্রাউট’ বাprout (Progressive Utilization Theory) অর্থাৎ প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব৷ প্রাউটের বিধান অনুযায়ী সমাজের নেতৃত্বে থাকবেন কঠোর নীতিবাদী, আধ্যাত্মিকতায় সমুন্নত, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রামী ব্যষ্টিগণ যাঁদের এককথায় বলা হয় ‘সদ্বিপ্র’ ও তাঁদের কাছে মানবতার সেবাই একমাত্র লক্ষ্য৷ প্রাউটের নীতি অনুযায়ী---পৃথিবীর কোনও সম্পদই কোন মানুষের সঞ্চয়ের অধিকার নেই, সব মানুষ মিলে একসঙ্গে যৌথ পরিবারের সদস্য হিসেবে ভোগ করতে পারবে৷ অর্থাৎ মূল কথা হ’ল---হরর্মে পিতা, গৌরী মাতা, স্বদেশ ভুবনত্রয়ম্৷ সামবায়িক সংস্থার মাধ্যমে সমগ্র সম্পদের আধুনিক প্রযুক্তির দ্বারা সর্বাধিক উপযোগ গ্রহণ করে যুক্তিসঙ্গত বণ্টন করতে হবে৷ স্থানীয় কৃষিজ, বনজ, খনিজ ও মানব সম্পদের ওপর ভিত্তি করে ব্লক ভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থা, শিল্পস্থাপন করতে হবে, যাতে সকল স্থানীয় মানুষের একশত শতাংশ কর্মসংস্থান সম্ভব হয় ও ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়৷ উত্তরোত্তর বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তির ব্যবহার দ্বারা সমবায়ের মাধ্যমে  সম্পদ বৃদ্ধি করতে হবে যার ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ক্রমাগত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়৷ প্রতিটি মানুষের মাতৃভাষার অধিকার ও মানব ধর্ম অনুশীলনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যাতে কোনও মানুষ কোনভাবেই ভাষা, ধর্ম, শিল্প, সংসৃকতির দিক দিয়ে শোষিত ও বঞ্চিত না হয়৷ প্রতিটি মানুষ বেঁচে থাকার সার্থকতা উপলব্ধি করতে পারে৷ একমাত্র তখনই প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মর্যাদা সুপ্রতিষ্ঠিত হবে ও একটি সুন্দর শোষণহীন মানব সমাজ গড়ে উঠবে৷

 

জনসংখ্যা বহুল পশ্চিমবঙ্গে রেল যোগাযোগ বাড়ানো উচিত, বন্ধ নয়, রেল প্রশাসন যুক্তিসঙ্গত আয়ের উৎস খুঁজুক

কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কি একেবারেই দেউলিয়া? যার দরুণ পশ্চিমবঙ্গের আটটি শাখায় পূর্ব রেলের রেলপথ বন্ধ করার নির্দেশ দিল৷ পূর্ব ভারতের কথা যদি ধরা হয় তাহলে বলতেই হয় এই আটটি শাখায় যে লোকসান হচ্ছে তার কারণগুলি বিবেচনা করে লোকসান বন্ধ করা যায়৷ তার চিন্তাভাবনা তো রেল বিভাগকেই করতে হবে৷ রেল তো শুধু আয়ের উৎস নয়, এটা হ’ল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের সেবার এক বিরাট মাধ্যম৷ কোথাও লোকসান হবে আবার কোথাও আয়ও হবে৷ সেটা রেল বিভাগকে পুষিয়ে নিতে হবে৷ তবে যে আটটি শাখার কথা বলা হয়েছে সেগুলি তো পূর্ব রেলের শাখা প্রশাখা৷ বিনা টিকিটের যাত্রী সংখ্যা বেশী হলে তার জন্যে রেল প্রশাসনকেই ব্যবস্থা নিতে হবে৷ রেল পরিষেবার ত্রুটিগুলিও কেন্দ্রকে দূর করতে হবে৷ কেন্দ্রীয় পাবলিক অ্যাকাউণ্টস্ কমিটির সমীক্ষা অনুযায়ী রিপোর্টের ভিত্তিতে রেলের এই সিদ্ধান্ত৷ পরে আবার বলা হচ্ছে এটা নাকি রুটিন মাফিক নির্দেশ৷ এর আগেও এমন নির্দেশ আসে রাজ্য সরকারের কার্যালয়ে৷

কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কেন্দ্রকে কড়া চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে৷ কেন্দ্র নাকি মন্তব্য করেছে লোকসানের দায় নিক রাজ্য৷ রাজ্যের শাসক দলের বক্তব্য, এই জনবহুল রাজ্য থেকে কেন্দ্র যে বিভিন্ন দিক থেকে কর বাবদ বিশাল পরিমাণে বাৎসরিক আয় করে সেটার কি কোনও দাম নেই? রেল পরিষেবায় তাই কোন মুখে কেন্দ্র রাজ্যের ঘাড়ে রেলের লোকসানের দায় চাপায়?

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই রেলশাখাগুলি চালু করেন বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যখন রেলের দায়িত্বে, অতীতে কেদ্রীয় রেলমন্ত্রী ছিলেন৷ তিনি সন্দেহ করেন এটা কী কেন্দ্রের এক ধরণের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা? যেহেতু পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিরোধী দলের? জনগণের প্রশ্ণ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বিগত সরকারের সব ঋণ কী কারণে কেন্দ্রীয় সরকার এই সমস্যা সংকূল পশ্চিমবঙ্গের ওপর চাপিয়ে প্রতি বছরে প্রায় পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা কেটে নিচ্ছে? ওই ঋণ তো এই সরকার নেননি৷ রাজ্য সরকারের মতে এই সরকার ঋণ শোধ করার জন্যে কিছু সময় চেয়েছিলেন৷ সেই সময় না দিয়ে রাজ্য সরকারকে আর্থিক সংকটে ফেলতে জোর করেই টাকা কেটে নিয়ে দারুণ চাপ সৃষ্টি কেন করা হচ্ছে?

এটা কি এক ধরণের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নয়? এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে চলতে পারে না৷ এই সরকারের প্রশ্ণ কোনও দিকে না তাকিয়ে কেন বিগত সরকারকে অত্যধিক ঋণ কেন্দ্র দিয়েছে? রাজ্যকে ঋণ দেওয়ারও তো একটা সীমা আছে৷ তাই তার দায় কেন্দ্র কেন চাপাচ্ছে এই সরকারের ওপর৷ বিজেপি সরকার সব দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এই কাজ করে চলেছে বলেই রাজ্যের জনগণ মনে করে৷

যে আটটি রেল শাখায় লোকসানের কথা বলা হচ্ছে সেগুলি হ’ল---সোনারপুর-ক্যানিং, শান্তিপুর-নবদ্বীপঘাট, বারাসত-হাসনাবাদ, বারুইপুর -নামখানা, কল্যাণী-কল্যাণী সীমান্ত, বালিগঞ্জ-বজবজ, বর্ধমান- কাটোয়া ও ভীমগড়-পলকাস্থলী৷

কেন্দ্রের বক্তব্য গত ২০০৯ থেকে ২০১৫-তে এই ধরণের সমীক্ষা করে চিঠি পাঠানো হয়৷ সকলকে সচেতন করার জন্যে৷ সংবাদে প্রকাশ কেন্দ্র কর্তৃক তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ডকে এই ধরণের চিঠি পাঠানো হয়েছে৷ তবে একটা প্রশ্ণ জনগণের মনে জেগে ওঠে---তা হ’ল রাজ্যগুলির ওপর দিয়ে যে রেল পরিষেবা চলে তার জন্যে রাজ্যগুলিরও তো আয়ের ভাগ কিছু থেকে যায়৷  তার কি কোনও সুব্যবস্থাআছে? ব্রিটিশ আসলে রেল পরিষেবা পরিচালিত হ’ত কোম্পানীর দ্বারা৷ বর্তমানে কেন্দ্র রেল চালায়, আয় হয় কেন্দ্রের, কিন্তু রাজ্য কী পায় সেটাও পরিষ্কার হওয়া দরকার৷ বর্তমানে রেল জাতীয়করণ হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর মতে মোট ৩৯টি প্রকল্পে কেন্দ্র টাকা বন্ধ করে দিয়েছে৷ বহু প্রকল্পের টাকাও কেন্দ্র কম করে দিয়েছে৷ ফলে এই রাজ্য দারুণ আর্থিক সংকটে পড়েছে৷ আগামী দিনে সংসদে এই ব্যাপারে আলোচনা অবশ্যই হওয়া উচিত৷

এই শাখাগুলিতে রেল পরিষেবা বন্ধ হলে রাজ্যে দারুণ অশান্তি সৃষ্টি হবে৷ তবে আগে রেল বাজেট হ’ত পৃথকভাবে আলোচনার মাধ্যমে লোকসভায়৷ এই সরকার সেটা বন্ধ করে দিয়েছে৷ কোন্ উদ্দেশ্যে সেটা সরকারই জানে কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সরকারী কর্মচারীদের বিভিন্ন বিভাগে বেতন বাড়িয়েই চলেছে প্রচণ্ড ভাবে৷ যেটা গরীব দেশের আর্থিক অবস্থার সঙ্গে খাপ খায় না বলেই জনগণ মনে করে৷ রেল পরিষেবায় কিন্তু বিভিন্ন দিকে দেখা যায় চরম ব্যর্থতা৷ রেল ঠিক সময়ে চলে না, দুর্ঘটনার তো হিসাব নেই৷ রেলে যে খাদ্য সরবরাহ করা হয় তাও নিকৃষ্ট মানের, তবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিক তেমনই শুধু দূরের যাত্রীভাড়া বাড়িয়ে জনগণকে ধোঁকা না দিয়ে রেল-এ নিতান্ত প্রয়োজনে লোকাল যাত্রীভাড়া যদি কিছুটা বাড়ানো যায় সেটার কথা না ভাবাটা এক ধরণের বাতুলতা ছাড়া কিছুই নয়৷ রেল নিত্যযাত্রীদের সেবা দেবে তারও উপযুক্ত কিছু ভাড়া বাড়ানোকে জনগণ অবশ্যই মানবে বলেই মনে হয়৷ কারণ হতদবিদ্র জনগণ তো সবই নীরবে সহ্য করেই চলে৷ লোকাল ট্রেন বাড়ানো দরকার৷ তাতে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য বাড়ে ও তারা কিছু স্বস্তি পায় ও তৃপ্তি লাভ করে৷ তবে একটা ছোট্ট প্রশ্ণ থেকে যায় তা হ’ল যে রেল লাইনে আয় হয় না সেই লাইনে রেল কেন বড় লাইন পেতে রেল পরিষেবা বন্ধ করার কথা বলছে৷ আগে অনেক ছোট ছোট লাইন ছিল সেগুলির সংস্কার করে সেই ধরণের আরও ছোট লাইন পেতে দেশকে উন্নযনের দিকে নিয়ে যাওয়া যেতে পারতো৷ যদি সেগুলির সংস্কার করে কামরা বাড়িয়ে, গাড়ী বাড়িয়ে অন্য অসুবিধাগুলো দূর করে বাড়ী চালানো যেত তাহলে দেশ তো এগোতে পারতো৷ যে রেললাইনে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হ’ল সেই লাইন বন্ধ করার কথা বলাটা তো কেন্দ্রেরই এক ধরণের অদূরদর্শিতার পরিচয়৷ হ্যাঁ, ছোট লাইনের গাড়ী তো বড় লাইনের মত চলে না, তাই তার চালানোর খরচও কম হত---এতে স্থানীয় অর্থনীতি মজবুত হয়৷

কাটোয়া-বর্ধমান লাইন সংস্কার হ’ল, কিন্তু গাড়ী কম৷ যাত্রীদের দারুণ অসুবিধে৷ এ কেমন পরিষেবা কেন্দ্রের? কাটোয়া আমোদপুর প্রায় ৫২ কি.মি. রেলপথ৷ ছোট লাইনকে বড় করা হ’ল কিন্তু অদ্যাবধি গাড়ী চলে না৷ তার জন্যে সমগ্র বীরভূম আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ এ কেমন কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা? এর ফলে চরম বেকার সমস্যা বেড়ে যাবে৷