যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থাকে রক্ষার দায় রাজনৈতিক দলগুলিকে নিতে হবে

লেখক
প্রাউটিষ্ট

মনে রাখা খুবই দরকার তা হলো গণতন্ত্রেই যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থাটা খুবই জরুরী৷ বিশেষ করে ভারতের  মতো বিরাট দেশে  যেখানে বহু রাজ্যের ও বহু ভাষাভাষীর দেশ৷ ভারতীয় সংবিধানও হলো বিশ্বের বৃহত্তম সংবিধান৷ যেখানে বহু পরিশ্রমে রাষ্ট্রনেতাগণ এই সংবিধান ঘটন করেন৷

দেখা যাচ্ছে যাঁরা খুব প্রবীন ও বয়স্ক তাঁরা সেই ব্রিটিশ শাসনকালে জন্মগ্রহণ করেন তাঁরা দেখে আসছেন এই দেশের  শাসকগণ দেশের সংবিধানকে নিজেদের দলীয় স্বার্থে কোন অবস্থায় এনে ফেলেছেন! সংসদীয় গণতন্ত্রে সংবিধান রক্ষা করে চলাটাই হলো প্রকৃত সার্থক রাজনীতিবিদ ও দেশ সেবকদের পবিত্র কর্ত্তব্য৷ কারণ সংবিধানের নামে শপথ নিতে হয় নির্বাচিত  প্রতিনিধিদের৷ কিন্তু দেখা যায় রাজনৈতিক দলগুলির অধিকাংশই শাসনক্ষমতা হাতে পেয়ে যেন ধরাকে সরা মনে করে, সংখ্যাধিক্যের জোরে যা ইচ্ছা তাই করে  বসে৷ এটা প্রবীনগণ দেখেছেন সেইই ইন্দিরার শাসনকাল থেকে৷

মনে রাখা দরকার যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা যদি পদে পদে  লঙ্ঘিত হয়, তাহলে দেশে গণতন্ত্র বর্তমান থাকে না, সৃষ্টি হয় স্বৈরাচারিতা গণতন্ত্রের নামে৷ তবে দেখা যায় রাজনৈতিক নেতা ও নেত্রীগণ কিন্তু প্রায়ই বলে থাকেন যে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থাকে রক্ষা করাটা আবশ্যিক৷ এটা মনে হয় তাঁদের অনেকেই ইচ্ছাকৃতভাবে জনগণকে ভাঁওতা দিতে নিছক বলতে হয় বলেন৷ রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে ও কেন্দ্রের ক্ষেত্রে হরকত দেখা যায় এটাকে নির্বাচন যখন হয় তখনই শাসকগণ নিজেদের দলীয় স্বার্থে এর উপরই আঘাত করেন নিজেদের শাসন ক্ষমতাকে কায়েম রাখতে৷ রাজ্যের অধীনে অনুষ্ঠিত হয় ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্র্বচন৷ সেখানে দীর্ঘ বছর ধরে দেখা যায় রাজ্য সরকারগুলির  অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ প্রশাসন  ও দলীয় কর্মীদের এমন উস্কানী দেওয়া হয় যাতে  বিরোধী দল প্রার্থী দিতে না পারে ৷  মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্টগুলির মহামান্য বিচারকগণও দেখা গেছে নির্বাচনের ফলাফলে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিরোধীরা প্রার্থী দিতেই পারেন না চাপে পড়ে৷ আর সরকারের প্রার্থীগণ বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় হাজার হাজার আসনে জয়ী হয়েছেন৷ যদি সঠিক নির্বাচন হয় তাতে তো দেশেরই কল্যাণ কারণ গণতন্ত্রে তো সবদিকের আলোচনার জন্য বিরোধী পক্ষের বক্তব্যটার গুরুত্ব আছে৷ আলোচনা ব্যতীত কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণটা তো এক পেশে হয়৷ তাছাড়া বিরোধী পক্ষের আলোচনাটা জরুরী গণতন্ত্রে৷ সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়৷ ত্রিপুরায় যেভাবে বোট হলো কিছুদিন আগে সেটাতো প্রশ্ণাতীত নয় মহামান্য কোর্টেরই মতে৷ দীর্ঘ ৭০ বছরে এদেশে যেভাবে রাজনৈতিক দলগুলি গণতান্ত্রিক শাসন চালাচ্ছে তাতে গণতন্ত্রের প্রতিই জনগণের  আস্থা কি হারাচ্ছে না? অধিকাংশ রাজ্যের অধীনে নির্বাচনে একই প্রশ্ণ উঠছে৷ তবু শাসকদের সম্বিত ফিরছে না! কেন্দ্রে দেখা যাচ্ছে পর পর দু’বার একই দল সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে এলেই যেন একটা প্রবণতাই আসে স্বৈরাচারিতার দিকে চলার৷ এটা দেখা যাচ্ছে ইন্দিরার আমলেও বর্ত্তমানে বিজেপির শাসনে৷ গত দু’বছর দেশে করোনার সংক্রমণ তার মধ্যেই লোকসভায় কেন্দ্র সরকার আলাপ আলোচনার তোয়াক্কা না করেই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আইন পাশ করে নেয়৷ ভারত কৃষি প্রধান দেশ সেই অন্নদাতাদের অগ্রাহ্য করে আইন করা হলো৷ তাঁরা জীবন মরণপণ করে পথে নামলেন৷ প্রায় ৭০০ কর্ষক প্রাণ হারালেন৷ তবু এই সরকারের সেই আইন বাতিল করতে রাজি হয়নে৷ শেষে দেশের কয়েকটি রাজ্যে নির্বাচনে ফলাফলের খারাপ ফল হওয়ার আশঙ্কায় কেন্দ্র সরকার আইন রদ করলেন, কিন্তু কর্ষকদের  কোন দাবী দাওয়া মানা হলো না৷ তাই তারা আন্দোলন থেকে বিরত হলেন না৷ সরকার জনগণের জন্য ও জনগণের দ্বারা৷ তাই নির্বাচিত সরকার  আলোচনা না করে সেই গণতন্ত্রের ধারক ও বাহকদেরই অবহেলা ও তাচ্ছ্বিল্য করে চলেন! তাইতো দেখা যাচ্ছে নোংরা দলছুট দলগুলির প্রতিজনগণের আস্থা হারিয়েই যাচ্ছে৷ শুধু তাই নয় দেখা যাচ্ছে নির্দল প্রার্থী ধীরে ধীরে  বোটারদের আস্থাভাজন হচ্ছেন ও তারা জয়লাভ করছেন৷ অভিজ্ঞতায় দেখা যায় সেই অতীতের স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসাবে যাঁরা জাতীয় দলের প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে জিতে দেশ সেবক হিসাবে দেশ শাসন করেছেন তাঁরাই দলহীন গণতন্ত্রের কথা ঘোষণা করে গেছেন৷ যেমন পশ্চিমবঙ্গের  প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী  প্রফুল্লচন্দ্র রায় ও আরো অনেকে ইন্দিরার কাণ্ডকারখানা দেখে! অত্যন্ত লজ্জার কথা ভারতের প্রধানমন্ত্রী প্রধান দায়িত্বে হলো গণতন্ত্র বিরোধী দলের মর্যাদা দেওয়া৷ সেটাই অগ্রাহ্য হয়ে চলেছে প্রতিক্ষেত্রেই৷ এটা ভারতের মতো বড়ো দেশের পক্ষে মোটেই কাম্য নয়৷ প্রবীন নাগরিকগণ অধিকাংশই এর প্রতি বীতশ্রদ্ধ৷ গণতন্ত্র বর্তমানে যেন দাঁড়িয়েছে একদল প্রফেসনাল উচ্চাভিলাসী রাজনৈতিক নেতাদের স্বেচ্ছাচারিতার লক্ষ্য স্থল! তাই দেশের সচেতন দেশ সেবীদের ও নাগরিকদের এ ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের  স্বার্থে এগিয়ে এসে কিছু করা৷ তা না হলে সংকট আসন্ন! গণতন্ত্রই হলো অদ্যাবধি মন্দের ভালো নোংরা রাজনৈতিক দলতন্ত্র সমাজকে ও অর্থনৈতিক প্রগতিকে একেবারেই ধবংস করে দিচ্ছে ও দিয়েছে৷ মুষ্টিমেয় ধনীদের  শোষণের স্বর্গরাজ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশ৷