নুপূর শর্মাদের কুর্কীত্তিটা স্পর্দ্ধার সীমা অতিক্রম করেছে

লেখক
নিরপেক্ষ

ভারতের সুপ্রাচীনকালে মহান ঋষিগণ মানুষকে ‘অমৃতের সন্তান’’ হিসাবে ঘোষনা করেন৷ সেই মহান ভারতে  তাই সারা পৃথিবীর বিভিন্ন সম্প্রদায় ও ধর্মমতের মানুষরা এসেছে ও স্থায়ীভাবে বসবাস করে ভারতের সন্তান হয়ে গেছে৷ এখানে তাই নানা সম্প্রদায়ের মানুষরা ভারতীয় হিসাবেই যুগ যুগ  ধরে বাস করেছেন ও বাহিরের বিদেশী শক্তি যেমন পাঠান, মোগল ও ইংরেজরা এদেশের মানুষদের রাজশক্তির অধিকারী হয়ে শাসন করেছে আর তারা মিলে মিশে এক হয়ে গেছে৷ সাম্প্রদায়িকতাটা কিন্তু এদেশের মাটিতে তেমন গুরুত্ব পায়নি৷ আর যারা বাহির থেকে এদেশে এসেছে তাদের অনেকেই এদেশের মেয়েদের  বিবাহ করে তারা এদেশেরই স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে ভারতীয় হয়ে গেছে৷ বাহিরের শাসকদের অধীনে দশম শতাব্দী থেকে আর বিংশ শতাব্দীর পঞ্চম দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত এই পরাধীনতা শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়েছিল ভারতবর্ষের মূল ভূখণ্ডের জনগণ৷ শেষে  ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগষ্ট হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে ইংরেজ শাসক দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশকে ভাগ করে স্বাধীনতা দেয়৷ পরের প্রায় ৭৫ বছর রাজনৈতিক দলতন্ত্রের মাধ্যমে শাসিত হয়ে চলেছে স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে৷ এই স্বাধীনতা লাভের আগে দেশের জনগণ এর পক্ষ থেকে একাধিক রাজনৈতিক দল বিশেষ করে হিন্দু ও মুসলমান চিন্তাভাবনাকে কেন্দ্র করে বিরোধ করতে থাকে৷ তখন তারা দেশ নেতারা সবাই ভাবতেই পারেন নি৷ যে তাঁরা সেই এক দেশ মায়ের সন্তান ভারতীয়৷ তাঁদের কিছু কিছু  নেতা ও নেত্রী কিন্তু মানতে পারেননি সেই সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে দেশ বিভাজন৷ তাঁদের মধ্যে নেতাজীরই ছিলেন অন্যতম৷ আর এই নেতাজীর অত্যন্ত বিশ্বস্ত ছিলেন মহান বিপ্লবী কাজী নজরুল ইসলাম৷ মনে পড়ে সেই গানটির মূল অংশ ছিল হিন্দু না ওরা মুসলিম ঐ জিঙ্গাসে কোনজন? কাণ্ডারী বলো ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মার৷

এই কাণ্ডারী হুঁশিয়ার কবিতার এটি ছিল মূল অংশ৷ এই গানটি কাজী সাহেব গেয়ে ছিলেন নদীয়ার কৃষ্ণনগরের পৌরসভার অধীনে একটি গৃহে৷ দেশ ভাগ হলো৷ বহু রক্তক্ষয় হলো৷ আজ ৭৫ বছর হয়ে গেল গেল আমরা স্বাধীন হয়েছি৷ ভারতের সংবিধান সাম্প্রদায়িকতাকে অগ্রাহ্য করে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রকে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবেই ঘোষনা করেন৷ কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের কথা ভারতের বুকে আজ যারা শাসনে এসেছে তাদের  নেতা-নেত্রীরা সংবিধানকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এমন সব কাণ্ড করছে হিন্দুত্ববাদের ধবজা ধরে যেটা মুসলীম সম্প্রদায়কে মানসিক আঘাত হেনেছে৷ তারই প্রতিবাদে বর্তমানে পৃথিবীর ১৫টি মুসলীম রাষ্ট্র ভারত বিরোধী হয়ে ভারত এর হিন্দুত্ববাদী কেন্দ্রের শাসকদের  সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁমকী দিয়েছে৷ আর ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ করার কথা ঘোষণা করেছে৷ জঙ্গী সংঘটন আলকায়দা ভারতের কয়েকটি রাজ্যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটাবার হুমকী দিয়েছে! এটাতে সারাদেশ আজ আতঙ্কিত ও চিন্তিত বর্তমান হিন্দুত্ববাদী কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নাকি বিজেপি বরখাস্ত করেছে৷ এটা যে ভারতের সংবিধান মানে না সেটা কি কেন্দ্র সরকার জানেন না? এটাতে বহিঃভারতে আর দেশের অভ্যন্তরে বেশ শোরগোল পড়েছে৷ ভারতের সংবিধানই কোন ধর্মমতকে ও ধর্মগুরুকে নিয়ে কিছু বলাটাই নৈতিক অপরাধ বলেই লজ্জিত ও মর্মাহত! যাঁরা ক্ষুদ্ধ হয়েছেন তাঁদের কাছে সমগ্র ভারতও মর্মাহত৷