শিক্ষাব্যবস্থাটা শিক্ষাবিদদের হাতে থাকাটাই কাম্য আর্থিক দায় সরকারের

লেখক
প্রভাত খাঁ

ভারতের শাসন ব্যবস্থা পরিচালিত হবে দেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা৷ কোথাও বলা হয়নি এ কথা যে শাসকগণ এর অধিকার আছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে হাতে নিয়ে যখন যেখানে রাজনৈতিক দলের সরকার আসবে তারা এসেই নিজেদের মতো করে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করবে৷ শিক্ষা বিস্তারে তারা উৎসাহ দেবে৷ শিক্ষা থাকবে শিক্ষাবিদদের হাতে আর শিক্ষা ব্যবস্থা যাতে সুষ্ঠুভাবে চলে তার জন্য আর্থিক সাহায্য দেবে সরকার৷ দেখা যাচ্ছে কি কেন্দ্র আর কি রাজ্য শাসনে এসেই অর্থ সাহায্য করে বলে তারা বা শাসকগণ শিক্ষা ব্যবস্থায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে৷ ইংরেজ শাসনেও দেখা গেছে এই বৃহত্তর বাংলার কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় চলতো বেসরকারীভাবে শিক্ষাবিদদের নিয়ন্ত্রণে৷ ইংরেজ শাসক একে হস্তক্ষেপ করতে চাইলে সেদিন স্যার আশুতোষ মুখপাধ্যায় বাধা দেন শিক্ষায় সরকারী হস্তক্ষেপে৷

কিন্তু দেখা গেল ধীরে ধীরে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কেন্দ্রের ও রাজ্যের সরকারগুলি মাধ্যমিক স্তরে বিনা বেতনে বেতন দেবেন বলে রাজ্য সরকার শিক্ষায় মাধ্যমিক স্তরে সরাসরি  হস্তক্ষেপ করে বসলেন৷ তাতে হলো টা কি  তারা তাদের মনগড়া পাঠ্যতালিকা তৈরী করে তাদের মতো সিলেবাস তৈরী করে মাধ্যমিক শিক্ষাকে কব্জায়৷ করে বসলেন৷ ধীরে উচ্চমাধ্যমিককেও হাতে নিয়ে দলীয় সরকারের দ্বারা সরাসরি চালাতে লাগলেন৷ সরাসরি দলীয়  রাজনৈতিক প্রভাবাধীন হয়ে পড়লো শিক্ষাব্যবস্থা৷ কেন্দ্রের ঠিক সেই ব্যবস্থা তাই শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষাবিদদের নিয়ন্ত্রণে না থাকায় এটি হয়ে গেল শাসকদলের কব্জায় শিক্ষা হবে নিরপেক্ষ কারণ এটি সরস্বতীর পবিত্র মন্দির বিশেষ৷ শিক্ষার্থী ও শিক্ষক হবে প্রকৃত শিক্ষাবিদ তারা কোন দলের ক্যাডার নয়৷ তাই দেখা গেল বাম শাসনে সংস্কৃত কে প্রায় বর্জনই করে বসা হলো৷ যে ত্রিভাষা সূত্র এর কথা বলা হলো তাতে মাতৃভাষা সংস্কৃত ভাষা ইংরেজী পরে দেখা গেল অহিন্দি ও ইংরেজী রাখা হলো৷ এতে ভারতের মূল ভাষা সংস্কৃত হয়ে গেল অ??

যেখানে শিক্ষাবিদদের মন্দির সেখানে কেন প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রের মনোনীত গভর্নররা মাথা গলাবেন? সেখানে প্রয়োজন হলে উন্নত শিক্ষাবিদরা থাকবেন৷ অপ্রিয় সত্যটা হলো সরকার অর্থ সাহায্য করছে বলে কি সরকারের লোক মনোনীত সেখানে যাবেন ও যে সরকার আসবে সেই সরকার শিক্ষায় দলীয় ছড়ি ঘোরাবে? এতে তো দলীয় রাজনীতির আখড়া হয়ে বসবে? এটাতো এক ধরণের ছোঁয়াচে অনুপ্রবেশ শাসনের যারা তাদের খবর দাবী করা৷ তাই মোদ্দা কথা হলো এই সব পদে উচ্চশিক্ষিত অবসর প্রাপ্ত শিক্ষাবিদরা থাকবেন৷ তাতে শিক্ষার মর্য্যাদার ক্ষুণ্ণ হবে না আর কোন প্রশ্ণও উঠবে না৷ গণতন্ত্রে বিশেষ করে  নোংরা দলীয় গণতন্ত্রে যা ঘটে চলেছে সেটাতো একধরনের দলীয় নোংরা রাজনীতি (দলতন্ত্রের) অনুপ্রবেশ মাত্র৷ এতে শিক্ষার পবিত্রতা নিরপেক্ষতাটা ধবংস হয়ে যাচ্ছে৷ চিন্তাবাদী নীতিবাদী নাগরিকগণ এটাকে মানতে পারেন না৷ দল আসবে দল যাবে অর্থাৎ শাসক আসবে শাসক যাবে কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থা চিরকাল বজায় থাকবে প্রকৃত সুশিক্ষা বিস্তারে৷ শাসকদের এটা ভাবা দরকার৷ শাসকদলের মাতববরিতে শিক্ষার হাল একেবারে ধবংস হচ্ছে৷