২১টি তাজা প্রাণ বলি  - গণতন্ত্রের বেনামীতে গণমেধ যজ্ঞ

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

 জনসাধারণের, শান্তি, স্বস্তি ও অধিকার  রক্ষার  জন্যেই জনসাধারণ একদিন রাজতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রকে  হটিয়ে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করেছিল৷ গণতান্ত্রিক উপায়ে  নির্বাচনের  উদ্দেশ্যে তাই যারা কেন্দ্রীয় স্তর থেকে  পঞ্চায়েত স্তরে  শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করবে  সেইসব আধিকারিকদের শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করা৷ কিন্তু বর্তমানে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের নামে চরম অশান্তি, ‘জোর যার মুলুক তার’ নীতিতে মারপিট সন্ত্রাসের মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে নিরস্ত করে বা খুন জখম ঘটিয়ে ক্ষমতা অধিকার  করা হচ্ছে৷  তাহলে এর সঙ্গে গণতন্ত্রের সম্পর্ক থাকল কী করে?Panchayet election

এবারে পঞ্চায়েত নির্বাচনে যথেচ্ছভাবে  সন্ত্রাস সৃষ্টি করে প্রতিপক্ষকে  মারধর করে, এমনকি  খুন-জখম করে, কোথাও বা ছাপ্পা বোট দিয়ে, কোথাও ব্যালট পেপার  ছিনতাই  করে,  ব্যালট বাক্স জলে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে তথাকথিত ‘শান্তিপূর্ণ-নির্বাচন’ হয়েছে৷ অন্ততঃ শাসকদল তো তা-ই বলছে৷ বলা বাহুল্য, বিরোধীরাও  ধোয়া তুলসী পাতা নয়,  যেখানে  যার শক্তি বেশী, সেখানে তারা শক্তি প্রদর্শন করতে  ভুলেনি৷

এইভাবে গণতন্ত্রের নামে  এই গণমেধ যজ্ঞে ২১টি প্রাণ বলি হয়েছে৷ নির্বাচনের  দিনের সন্ত্রাসের  জের এখনও  গ্রামে গঞ্জে রয়েছে৷

এটাকে গণতন্ত্র বলা যাবে কিনা--- তা নিয়ে  বহু মানুষের মনে যথেষ্ট সন্দেহ আছে৷

উত্তরবঙ্গে আলিপুরদুয়ার  জংশনের নিকটে  একটি পঞ্চায়েত বুথে শাসকদলের সমর্থকদের ছাপা বোট দেওয়ার বহর দেখে  ও বিরোধী প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে মারধর করা দেখে বিরক্ত হয়ে শাসক দলেরই  প্রার্থী অনিতা দেবনাথ  ও একমাত্র বিরোধী প্রার্থী শিখা দে উভয়েই এই ঘটনার প্রতিবাদ  করে নির্বাচন  থেকে সরে  দাঁড়িয়েছেন৷  তারা উভয়েই উপস্থিত  পুলিশ  কর্র্তর মাধ্যমে বি.ডি.ও-র উদ্দেশ্যে চিঠি দিয়ে তাঁদের  সেই  সিদ্ধান্তের  কথা জানিয়েছেন৷ পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার থেকে প্রাপ্ত জানা যায়, জনৈক হাইস্কুলের শিক্ষক  বিকাশ  বিশ্বাস  বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন৷ তাঁকে  তাঁর মনোনয়ন পত্র তুলে নেওয়ার  জন্যে বিরোধীরা চাপ দিয়েছিল৷ কিন্তু তিনি তা মানেন নি৷ তখন বিরোধীরা স্কুলে ঢুকে  ছাত্র-ছাত্রাদের  সামনে ওই  শিক্ষককে মারধর করেছে৷ ওই শিক্ষক মহকুমা শাসকের  কাছে  এর প্রতিবাদ করেছেন৷

গণতন্ত্রের নামে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে  যা চলছে --- তাকে আর যাই হোক গণতন্ত্র বলা  চলে না৷

তবে এটাও ঠিক, এরাজ্যে সিপি-এম  যখন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত  ছিল, তারা এর বহুগুণ বেশী সন্ত্রাসের পরিবেশ  সৃষ্টি করেছিল৷  এতদিন সিপিএম পার্টিতে যারা গ্রামে গ্রামে  সন্ত্রাস সৃষ্টি  করে’ নিজেদের  আখের গোছাত, ওঁরাই  সুকৌশলে নূতন শাসকদলে ঢুকে তাদের  পুরোনো খেলা  খেলতে  শুরু করেছে৷

মমতা যদি না এদের কড়া হাতে  নিয়ন্ত্রণ করেন, তাহলে  কিন্তু নিজের পায়ে কুড়ুল মারবেন৷ এখনও সারা রাজ্যেজুড়ে তাঁর প্রতি জনগণের যে সমর্থন আছে তা কিন্তু ভবিষ্যতে  নাও থাকতে পারে৷ শান্তিপ্রিয় জনসাধারণ এধরণের সন্ত্রাস পছন্দ  করে না৷