রাস্তাটা দিয়ে প্রায়ই যাই, কখনো চোখে পড়েনি আজ পড়লো৷ মূর্ত্তিটার চারপাশে বাঁশের ভারা বাঁধা৷ হঠাৎ কেন! ভালোই তো ছিল কাক- শালিখের আশ্রয়স্থল হয়ে৷
সামনে ২৩শে জানুয়ারি, নেতাজী তোমায় স্মরণ করতে হবে না! সারা বছর তো কাক-শালিখের....ভরা থাকে৷ এই একটা দিনের জন্যে একটু ঘষে মেজে ঝকঝকে করে নিতে হবে৷ তারপর তো যেই কে সেই৷ কে আর তোমায় মনে রাখে ! কতই তো খোঁজা হ’ল, কোথায় গেলে! আজকাল আবার স্যোশাল মিডিয়া নাকি বলে! ফেক নামে ভেক নামে কতই না লেখালেখি! তবু তুমি কোথায়---কেউ জানে না৷
নেতাজি, যারা তোমায় দেশ ছাড়া করেছে, যারা চক্রান্ত করে শুধু তোমার সঙ্গে নয়, সমগ্র দেশবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে৷ তারা বেশ বহাল তবিয়তেই আছে৷ বড় বড় সুউচ্চ মূর্ত্তিও বসেছে৷
শুধু তুমি! নেতাজি তোমাকে নিয়ে এই একটা দিনে বুলির ফোয়ারা ছুটবে৷ কত দাবী উঠবে তোমায় নিয়ে৷ তারপর ২৩শের রাত ফুরোলেই তুমিও ফুরিয়ে যাবে৷ না, ভুল বললাম৷ ভারতের রাজনীতির ব্যবসায় এখনও তুমি সেরা মূলধন, তাই তুমি থাকবে কপোট নেতাদের কন্ঠ-ওষ্ঠ জুড়ে, তুমি থাকবে রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে দেশপ্রেমের সংলাপ হয়ে৷
তোমার সুমহান আদর্শ, তোমার দেশপ্রেম, স্বাধীনতার জন্যে তোমার আত্মত্যাগ---দুর! দুর! ওসব বোকাদের জন্যে তাই তো তোমায় দেশ থেকে সরিয়ে দিয়েছে এক কপোট দেশপ্রেমিক অহিংসার পূজারী ! আজ আবার তারই এক জাত-ভাই প্রথম প্রধানমন্ত্রীর টুপি পরিয়ে বাহবা নিতে চাইছে৷ তুমি কিন্তু অজ্ঞাতেই থেকে গেলে৷ তোমার গোপন ফাইল প্রকাশের গাল ভরা প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রীর টুপির অন্তরালেই থেকে গেল৷
মাঝে মাঝে মনে হয়, এই লোক ঠকানো রাজনীতি কতদিন,আর কতদিন! পাঁকেই তো পদ্ম ফোটে৷ এই পঙ্কময় স্বার্থ-লোভ আর হিংস্ররাজনীতির বিষাক্ত বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসবে না সেইসব দামাল ছেলে, জীবন মৃত্যু যাদের কাছে পায়ের ভৃত্য! নেতাজির স্বপ্ণের ভারত সার্থক রূপ পাবে তাঁদের ত্যাগ তিতিক্ষায়৷
আসছে, সেই দিন আসছেই৷ বৃথাই নেতাজি তোমায় খোঁজা সাংহাই, তাইহুকো, মসকোয়,সানওয়াজ, খোসলা, আর মুখার্জী কমিশনের পাতায় পাতায়৷ নেতাজি তুমি আছ তোমার স্বপ্ণে, তোমার ত্যাগে তোমার আদর্শে৷ সেই আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাঙলার দামাল ছেলেরা আবার জাগছে সাধনায়, সেবায় , ত্যাগে মহান হয়ে৷ রাজনীতির সব পাশার দান উল্টে যাবে একদিন৷ উল্টে দেবে বাঙলার দামাল ছেলেরা---এটাই হোক ২৩শে জানুয়ারীর অঙ্গীকার৷
জয়তু নেতাজি, জয় বাঙালীস্তান৷