গত ২২শে ফেব্রুয়ারী রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে ২নং হলে বাহান্নের বাংলা ভাষা শহীদদের স্মরণে স্পান্দনিক শিল্পীগোষ্ঠী ত্রিপুরা শাখার উদ্যোগে এক মনোরম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়৷
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত সে দেশের দ্বিতীয় স্তরের সর্র্বেচ্চ সম্মান একুশে পদকজয়ী সাহিত্যিক ও প্রবন্ধকার ও বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থাগারের পরিচালক জনাব মিনার মনসুর, মঙ্গলদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন আই সি এ আর ত্রিপুরা সেন্টারের মৎস্য বিজ্ঞানী ডঃ কৌবেরী নাথ, সভাপতিত্ব করেন ত্রিপুরা হাইকোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী শ্রীরাখাল রাজ দত্ত৷ স্বাগতিক বক্তব্য পেশ করেন স্পান্দনিকের উপদেষ্টা নাট্টভূষন শ্রীমনোরঞ্জন গোপ৷
অনুষ্ঠানে যে দুই জনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় তারা হলেন বাংলা একাডেমি ত্রিপুরার সাধারণ সচিব কবি ও সাহিত্যিক শ্রী কৃষ্ণকুসুমপাল ও সংগীত---নৃত্য সোসাইটি৷
ত্রিপুরার সম্পাদিকা শ্রীমতি কমলিকা ভট্টাচার্য, প্রধান অতিথির ভাষণে জনাব মিনার মনসুর বলেন বাহান্নের ভাষা আন্দোলনে শুধু বাংলা ভাষারই মর্যাদা রক্ষা করেননি ,পরিনামে বাংলাদেশ নামে এক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে, নতুন চেতনার সৃষ্টি করেছে এই ভাষা চেতনায় পরবর্তীকালে ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষের ভাষা চেতনায় দোলা দিয়েছে৷ ইউনেস্কোর মাধ্যমে ২১ শে ফেব্রুয়ারী দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিশ্ব স্বীকৃতি লাভ করেছে৷তাই তাঁর অভিমত হল মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য যেমন আমাদের সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে তেমনি বিশ্বের সব ভাষাভাষী মানুষের মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায়ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে৷ স্বাগতিক বক্তা, উদ্বোধক, সম্মাননা প্রাপক ও সভাপতি মহোদয়ের বক্তব্যের নির্যাস---মাতৃভাষা বিপন্ন হলে সংশ্লিষ্ট জাতি যেমন শিক্ষা সংস্কৃতিতে পিছিয়ে পড়ে তেমনি মানস আর্থিক শোষণের যাঁতাকলে পরে জাতিসত্তা ধবংস হয়ে যায়৷ এ অবস্থা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হল শিক্ষার মাধ্যম, সংস্কৃতি চর্চা,সরকারি বেসরকারি সব কাজে মাতৃভাষার প্রতিষ্ঠা৷ এই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ৬১ সালের ১৯ মে শিলচরে হয়েছিল বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন যাতে ১১ জন বাঙালী নিহত হয়৷ এভাবে বাহান্নোর ভাষা আন্দোলন ত্রিপুরা, অসম তথা ভারতের বিভিন্ন ভাষা প্রেমী মানুষকে নিজ ভাষার মর্যাদা রক্ষার সংগ্রামে বারবার উদ্বুদ্ধ করেছে৷ এখন আবার সময় এসেছে ভারতের নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিতে ও শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্তর পর্যন্ত বাংলা ভাষাকে স্থান করে দেবার জন্য এই লক্ষ্য পূরণে যেকোনো আত্মত্যাগের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য তারা আহ্বান জানান৷ একমাত্র এভাবেই ভাষা শহীদদের প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা জানানো সার্থক বলে তারা মনে করেন৷ সংগীত, নৃত্য পরিবেশন করেন উল্লেখিত স্পান্দনিক শিল্পী গোষ্ঠীর ত্রিপুরা রাজ্য সচিব শ্রীমতি ঝুমুর রায় সহ অন্যান্য শিল্পী বৃন্দ৷