শিবপুরের বাসিন্দা মনোজিতের লড়াইটা শুরু হয়েছিল অনেক ছোট থেকেই৷ বাবা রিকশা চালাতেন, মা বাড়ি-বাড়ি রান্না করতেন৷ বছর খানেক আগে
রিকশা চালাতে চালাতেই মারা যান৷ মনোজিতের বাবা বিনা চিকিৎসায়৷
মায়ের আর শরীরের সামর্থ্য নেই বাড়িবাড়ি ঘুরে রান্না করার৷ কিন্তু দারিদ্রের
এই ‘পাঞ্চ’ ও নক আউট করতে পারের্ি মনোজিতকে৷ গত বছর জাতীয় বক্সিংয়ে
ব্রোঞ্জ পাওয়া সেটাই প্রমাণ করে৷ এরপরে জাতীয় শিবিবেও জায়গা করে নিয়েছেন তিনি৷ যে শিবিরে প্রথম পর্বে ৫২ জন বক্সার ছিলেন৷ পরে কাটছাঁট হয়ে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৪০৷ দুইপর্বে অমিতের ‘স্পারিং পার্টনার ’ হিসেবে ছিলেন বাংলার মনোজিৎ৷ অর্থাৎ রিংয়ে অমিতের প্র্যাক্টিস-সঙ্গী৷ আগামী ১লা মার্চ থেকে শুরু শিবিরেও সেই দায়িত্ব পালন করবেন তিনি৷
মনোজিৎ কীভাবে বক্সিংয়ে এলেন, মনোজিৎ ‘‘ছোটোবেলা থেকে আমি দেখতাম, পাশের শিবপুর পুলিশ লাইনে বক্সিং হচ্ছে৷ ওই সময় বিজেন্দ্র সিংহকে দেখতাম৷ দারুণ বক্সার৷ কোথা থেকে কোথায় উঠে এসেছে৷ ওকে দেখে দারুণভাবে অণুপ্রাণিত হয়েছিলাম৷ তখনই ঠিক করে নিই,আমাকেও কিছু করতে হবে বক্সিংয়ে৷’’ আর এখন অণুপ্রেরণাখোঁজেন অমিত পাঙ্ঘালের মধ্যে৷ অমিত আর তিনি দু’জনেই ৫২ কেজি বিভাগের বক্সার৷ বিশ্বের এক নম্বর অমিতকে নিয়ে মনোজিৎ বলছেন৷ ‘‘অমিতও খুব ভাল বক্সার ও অলিম্পিক্সের যাবেই৷ এমনকী পদক পেলেও অবাক হব না৷ ক্যাম্পে আমি ওর স্পারিং পার্টনার৷ তাই খুব ভাল করে জানি, ও কতটা দক্ষ বক্সার৷ পরের শিবিরেও ওর সঙ্গে কাজ করব৷’’
রিংয়ে নেমে তাঁকে যতটা লড়াই করতে হয়েছে, রিংয়ের বাইরে লড়তে হয়েছে তার থেকে অনেক বেশি৷ কিন্তু রিং এবং রিংয়ের বাইরের দুটো লড়াই জিতেই জাতীয় বক্সিংয়ে ব্রোঞ্জ পেয়েছেন৷ বাংলা থেকে ভারতের সিনিয়র জাতীয় শিবিরে সুযোগ পেয়েছেন তিনি৷ দারিদ্র্যের নিদারুণ আক্রমণ যাঁকে টলিয়ে দিতে পারে দিতে পারে নি, তাঁকে নিয়ে অবশ্যই স্বপ্ণ দেখা যায়৷