আমেরিকার বাল্টিমোর শহরের সেতু বিপর্যয়ের ঘটনায় ছ’জন নিখোঁজ৷ এই ছ’জনই রাতে সেতু মেরামতির কাজ করছিলেন৷ সে সময়ই ঘটে বিপত্তি৷ নদীর জলে পড়ে যান তাঁরা৷ মনে করা হচ্ছে, এই ছ’জনের মধ্যে কেউই বেঁচে নেই৷
গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত দেড়টা নাগাদ বাল্টিমোর শহরের বিখ্যাত ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুটি ভেঙে পড়ে প্যাটাপসকো নদীতে৷ একটি মালবাহী জাহাজের ধাক্কাতেই এই বিপর্যয় ঘটেছে বলে জানা যায়৷ ১৯৭৭ সালে তৈরি হয়েছিল, সেই সেতুটি কয়েক মুহূর্তেই ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে৷ এই ঘটনায় ২০ জন মতো নদীর জলে তলিয়ে যান৷ তাঁদের মধ্যে ছ’জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানান আমেরিকার কোস্টগার্ড কমান্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল শ্যানন গিলরেথ৷
তিনি আরও জানান, প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য উদ্ধারকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ তাঁর কথায়, ‘‘যখন সেতু বিপর্যয় ঘটে তখন প্যাটাপসকো নদীতে স্রোত বেশি ছিল৷’’ একই কথা বলেন মেরিল্যান্ড পুলিশের সেক্রেটারি রোল্যান্ড বাটলার৷ জলের স্রোত এবং তাপমাত্রার জন্য নদীতে ডুবুরি নামিয়ে সন্ধান কাজ চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান তিনি৷
গত মঙ্গলবার রাতে বাল্টিমোর বন্দর থেকে একটি মালবাহী জাহাজ ছেড়েছিল৷ আচমকাই সেই জাহাজ এসে ধাক্কা মারে ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুর স্তম্ভে৷ সেই মালবাহী
জাহাজটিতে মোট ২২ জন ক্রু ছিলেন৷ তাঁরা সকলেই ভারতীয়৷ দুর্ঘটনার পর পরই তাঁরা জলে নেমে উদ্ধারকার্যে হাত লাগান৷ তা ছাড়া ধাক্কা লাগার ঠিক আগে তাঁরা সতর্ক করে দেন৷ সেই কারণেই মেরিল্যান্ডের গভর্নর তাঁদেরকে ‘হিরো’ বলেছেন৷ সেতুর স্তম্ভে ধাক্কার আগে জাহাজটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে৷ ‘মে ডে’ কল করা হয়৷
মেরিল্যান্ডের গভর্নর বলেন, ‘‘সেতুটি ত্রুটিপূর্ণ ছিল এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷’’ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই বিপর্যয়কে ‘ভয়াবহ দুর্ঘটনা’ বলে অভিহিত করছেন৷ সেই সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব সেতুটি পুনর্নির্মাণের কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন৷ উল্লেখ্য, বাল্টিমোর শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়েছে প্যাটাপসকো নদীটি৷ সেই নদীর উপরই তৈরি করা হয়েছিল ১.৬ মাইল দীর্ঘ ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুটি৷ আট লেনের এই সেতুর উপর দিয়ে সব সময়ই যান চলাচল করে৷ বাল্টিমোর বন্দরের বাইরের ক্রসিং এবং বাল্টিমোর বেল্টওয়ের মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করেছিল এই সেতু৷