অনবদ্য স্বর্গীয় পরিবেশে সমাপ্ত হল ছয়দিন ব্যাপী মহাপ্রয়াণ দিবস কীর্ত্তন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

’’কীর্ত্তনে আর বাউলের গানে আমরা দিয়েছি খুলি মনের গোপনে নিভৃত ভূবনে দ্বার ছিল যতগুলি’’৷

কীর্ত্তনই একমাত্র মাধ্যম যা মনকে সহজেই বিস্তৃত করে  দেয়, উদার করে দেয়, সংকীর্ণতা মুক্ত করে দেয়৷ তাই কীর্ত্তনীয়ার কাছে মানুষে মানুষে কোন ভেদ নেই৷ মানব জীবনের জাগতিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক এই ত্রিবিধ  দুঃখের আত্যন্তিকি নিবৃত্তির একমাত্র উপায় হ’ল সাধনা৷ তাই মানুষের  জীবনে সাধনা অতি প্রয়োজনীয় আর এই সাধনায় সর্বাধিক সাহায্য করে কীর্ত্তন৷ মানুষ যখন স্পষ্টভাষায় উচ্চারণ করে কীর্ত্তন করে তখন তাঁর সমস্ত শরীর প্রাণ আত্মা পবিত্র হয়৷

শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী বলেছেন--- কীর্ত্তনের সময় হয় কী?  না কতকগুলো মানুষ যখন মিলে মিশে কীর্ত্তন করছে তখন সেই মানুষগুলির শারীরিক শক্তিই যে একত্রিত হচ্ছে তাই নয়, তাদের মিলিত মানস শক্তি ও একই ভাবধারায় আর একই পরমপুরুষের কাছ থেকে প্রেরণা পেয়ে, প্রেষণা পেয়ে একই ধারায় একই খাতে বইতে থাকে৷ তাই সেখানে কেবল যে একটা বিপুল জড়শক্তির সমাবেশ ঘটে তা-ই নয়,  মানস শক্তিরও একটা অতি বিরাট সমাবেশ ঘটে৷ আর সেই মিলিত জড়শক্তি ও মিলিত মানস শক্তি এই প্রপাঞ্চিক জগতের পুঞ্জীভূত দুঃখ-ক্লেশ দূর করে দেয়৷

তেমনি এক অনবদ্য স্বর্গীয় পরিবেশে ছয়দিন ব্যাপী অখণ্ড ৰাৰা নাম কেবলম্‌  মহানামমন্ত্র কীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হল মার্গগুরু শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী কলিকাতাস্থিত স্মৃতি সৌধে মহাপ্রয়াণ দিবস উপলক্ষ্যে৷

আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের কেন্দ্রীয় জনসংযোগ সচিব আচার্য দিব্যচেতনানন্দ অবধূত বলেন--- কীর্ত্তন নিশ্চিতভাবে মানুষের মনের বিস্তৃতি ঘটায়৷ বিশেষ করে যখন হাজার হাজার ভক্ত মিলিতভাবে ৰাৰার স্মৃতিসৌধে কীর্ত্তন করেন তখন একটা বিশেষ স্বর্গীয় প্রভাব পড়বেই৷

এবছর আনন্দমার্গের কলিকাতার তিলজলা কেন্দ্রীয় আশ্রমে মার্গগুরু শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী ৩১তম মহাপ্রয়াণ দিবস উপলক্ষ্যে ১২০ ঘন্টা কীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হয়৷ তিন হাজারের বেশী ভক্তমার্গী এই কীর্ত্তনে সমবেত হয়ে ভক্তিরসের আস্বাদনে আপ্লুত হন৷ কীর্ত্তনের অন্তিম দিনে ২৬শে অক্টোবর তিন হাজার মানুষ মিলিতভাবে কীর্ত্তনে অংশ নেয়৷ সেইসময় গভীর আধ্যাত্মভাবের  প্রভাবে সকলেই মার্গগুরুর ভৌতিক শরীরে উপস্থিতি অনুভব করেন৷ কীর্ত্তন শেষে মার্গগুরুদেবকে গার্ড অব অনার দেবার পর মার্গের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও পুরোধা প্রমুখ আচার্য কিংশুক রঞ্জন সরকার মার্গগুরুদেবের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন৷ মিলিত সাধনা, গুরুপূজা, শপথ গ্রহণের পর ভক্তমার্গীরা কীর্ত্তনের অতুলনীয় মহিমা মর্মে বহে গৃহ অভিমুখে ফিরে যান আগামী বছর আবার আসার আশা নিয়ে৷