আনন্দমার্গের একনিষ্ঠ সাধক ও কর্মী সমরেন্দ্রনাথ ভৌমিক পরলোকে

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ৩রা জুলাই ২০২৪,বেলা ১২:৫০ নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন হাওড়া জেলার আমতা উদং নিবাসী বিশিষ্ট আনন্দমার্গী তথা সমাজসেবী ও ‘নোতুন পৃথিবী’ পত্রিকার ধারাবাহিক লেখক শ্রীসমরেন্দ্রনাথ ভৌমিক৷ শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার প্রদত্ত মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বের উপর শ্রী ভৌমিক নোতুন পৃথিবী পত্রিকার নিয়মিত লেখক ছিলেন৷ এছাড়াও গণিত তত্ত্ব ও বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক বিষয়ের উপর সমরেন্দ্রনাথ ভৌমিকের লেখা প্রবন্ধ নোতুন পৃথিবী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে৷মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর৷ দীর্ঘদিন ধরে তিনি ক্যান্সার মারন রোগের সঙ্গে লড়াই করছিলেন৷ উল্লেখ্য ক্যান্সার রোগের সম্মুখীন হয়েও তিনি নোতুন পৃথিবী পত্রিকার জন্য শেষদিন পর্যন্ত লেখালিখি বন্ধ করেননি৷ বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, মৃত্যুর দিন কয়েক পূর্বেও তিনি মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বের উপর নতুন লেখা বইটি প্রকাশের ইচ্ছে অসমাপ্ত অবস্থায় রেখে গেছেন৷ কিন্তু তীব্র শারীরিক অসুস্থতার দরুন তা করতে তিনি সক্ষম হননি৷ ‘নোতুন পৃথিবী’তে ধারাবাহিকভাবে লেখালিখি ছাড়াও আনন্দমার্গের শিক্ষা বিভাগ ‘গুরুকুলে’র জন্যে বিভিন্ন শ্রেণীর অংকের বই রচনা, শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার প্রদত্ত মাইক্রোবাইটাম তত্ত্ব আধারিত এক জটিল বৈজ্ঞানিক বিষয়কে সহজ সরলাকারে পুস্তক রচনা করেন৷ এমন এক গুণী ব্যষ্টিকে হারিয়ে আমরা সবাই শোকস্তব্ধ৷ ‘নোতুন পৃথিবী’ পত্রিকার পক্ষ থেকে পরম পুরুষের নিকট তার বিদেহী আত্মার উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করি৷

গত ১১ই জুলাই, বৃহস্পতিবার হাওড়া জেলার, আমতার উদং গ্রামে পরলোকগত শ্রীসমরেন্দ্রনাথ ভৌমিকের নিজস্ব বাসভবনে তাঁর শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়৷ আনন্দমার্গের চর্যাচর্য নির্দেশিত এই শ্রদ্ধানুষ্ঠানে আনন্দমার্গের সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসিনীবৃন্দ ও গৃহী আনন্দমার্গীদের উপস্থিতিতে প্রভাত সঙ্গীত ‘বাবা নাম কেবলম’ কীর্ত্তন , সাধনা ও স্বাধ্যায় পাঠ করা হয়৷ শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের দায়িত্বের ছিলেন আনন্দমার্গের প্রবীণ সন্ন্যাসী আচার্য অভিব্রতানন্দ অবধূত, এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আনন্দমার্গের হাওড়ার ভক্তি প্রধান সুব্রত সাহা, বিশিষ্ট আনন্দমার্গী তথা প্রাক্তন ভুক্তিপ্রধান বকুল চন্দ্র রায়, অমর চট্টোপাধ্যায়,ভারতী কুন্ডু প্রমুখ৷ পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন- অনুপমা ভৌমিক, সৈকত ভৌমিক, শৈবাল ভৌমিক, তপন কুমার ভৌমিক, রবীন ভৌমিক, সুপ্রিয়া ভৌমিক, শুভ্রা ভৌমিক, রুনুভা ভৌমিক, রিঙ্কু ভৌমিক, উজ্জ্বল ভৌমিক সহ পরিবারবর্গ৷ স্মৃতিচারণা থেকে আমরা জানতে পারি, ৭০এর দশকে তিনি ‘আনন্দমার্গে’র আদর্শের ভাবধারায় প্রভাবিত হয়ে দীক্ষা গ্রহণ করে একনিষ্ঠ ভক্ত ও সংগঠনের কাজে নিজেকে সঁপে দেন৷ প্রথম জীবনে তিনি আমতা আনন্দমার্গ স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন৷ পরবর্তীকালে আমতা মহিষামুড়ি রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠের গণিতের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন৷ তাঁর শিক্ষক জীবনে বহু ছাত্র-ছাত্রা তাঁর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আদর্শের প্রতি অনুরক্ত হয়ে আনন্দমার্গের সংস্পর্শে আসে, তাদের মধ্যে অনেকে বর্তমানে আনন্দমার্গের সর্বক্ষণের কর্মী অর্থাৎ সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসিনী হয়ে দেশে-বিদেশে আদর্শের প্রচারে নিয়োজিত৷ জীবনের শেষক্ষণ পর্যন্ত তিনি পরমপিতা বাবা শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী আদর্শ প্রচার করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন৷ সমরেন্দ্রনাথ ভৌমিকের অকাল প্রয়াণে আনন্দমার্গ প্রচারক সঙ্ঘের অপূরণীয় ক্ষতি হল৷