গত ২৮শে নবেম্বর, আনন্দমার্গের শ্রদ্ধেয় পুরোধা প্রমুখ আচার্য কিংশুকরঞ্জন সরকার বিহারে আনন্দমার্গের বিভিন্ন কর্মসূচির পরিদর্শন করতে ও ওখানকার আনন্দমার্গীদের প্রেরণা দেওয়ার জন্যে ৫ দিনের বিহার সফরে রবানা হন ৷ সঙ্গে আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের ও মার্গের মহিলা কল্যাণ বিভাগের আধিকারিকগণও ছিলেন ৷ এদিন তিনি পটনা বিমানবন্দরে পৌঁছলে পটনার আনন্দমার্গীরা তাঁকে বিপুল সংবর্ধনা জানান৷ এখান থেকে গাড়িতে করে তিনি হাজিপুরে পৌছান৷ আনন্দমার্গের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ যারা গাড়িতে করে কলকাতা থেকে রবানা হয়েছিলেন তাঁরা আগে থেকেই সম্মেলন স্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন৷
হাজিপুর আনন্দমার্গ স্কুলে জাঁকজমক সহকারে আনন্দমার্গের ধর্মসভা অনুষ্ঠিত হয়৷ এখানে হাজিপুর ও পার্শ্ববর্তী জেলার আনন্দমার্গীরা বিপুল সংখ্যায় উপস্থিত হয়েছিলেন৷ তাঁদের সামনে শ্রদ্ধেয় পুরোধা প্রমুখ দাদা ধর্মসাধনায় জ্ঞান,কর্ম ও ভক্তির ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন৷
তিনি বলেন, ‘‘আধ্যাত্মিক মার্গে ভক্তির স্থান সর্বোচ্চ৷ কিন্তু সাধককে ভক্তিভাব নিয়ে জ্ঞান ও কর্মসাধনাও করতে হবে৷ ভক্তি ব্যতিরেকে জ্ঞান ও কর্মসাধনা মানুষের মধ্যে অহংকার বাড়ায় ও সাধকের অধোগতির কারণ হয়৷ ভক্তি মানুষকে যথার্থ পথে নির্দেশনা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যায়৷’’
দ্বিতীয় দিনে শ্রদ্ধেয় পুরোধা প্রমুখ দাদা ও আনন্দমার্গের অন্যান্য কর্মকর্তারা পথিমধ্যে আনন্দমার্গের বিভিন্ন ইয়ূনিট পরিদর্শন করতে করতে ফুলপারশে এসে পৌঁছান ৷ এখানে তিন ঘন্টা ব্যাপী অখণ্ড ‘বাবা নাম কেবলম্’’ কীর্ত্তনের পর পুরোধা প্রমুখ দাদা সাধনা ও ভক্তিতত্ত্বের ওপর প্রবচন দিয়ে সবাইকে আরও ভালভাবে সাধনা করতে ও আরও নিষ্ঠার সাথে সেবা করতে প্রেরণা দেন৷ এখানে ভি.ডি.ও-র মাধ্যমে বাবার’ (মার্গগুরুদেব) প্রবচন শোণানো হয় ও বরাভয় মুদ্রায় বাবার আশীর্বাদও দেখানো হয়৷ এইসময় সমস্ত আনন্দমার্গীরা ভক্তিভাবে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন৷
এখানে মার্গের সাংস্কৃতিক প্রকোষ্ঠ রাওয়ার পক্ষ থেকেও প্রভাত সঙ্গীত ও প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷
স্বাভাবিকভাবে আনন্দমার্গীরা পুরোধা প্রমুখ দাদার বক্তব্য শুণে বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ হন৷ তাঁরা পূর্ণ উদ্যমে আনন্দমার্গের বিভিন্ন সেবামূলক কর্মসূচীর রূপায়ণের জন্যে সংকল্প গ্রহণ করেন৷
বিহার সফরের তৃতীয় দিনে পুরোধা প্রমুখ দাদা সুফল জেলার জোদিয়াতে এসে পৌঁছান ও এখানে আনন্দমার্গের এক ধর্ম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়৷ এই ধর্মসম্মেলনে সাহারসা ও মধেপুরা থেকে আনন্দমার্গীরা বিপুল সংখ্যায় উপস্থিত হন৷ এখানে প্রথমে ৩ ঘন্টা ব্যাপী বাবা নাম কেবলম্’ সংকীর্ত্তন হয় এরপর মিলিত সাধনার পরে শ্রদ্ধেয় পুরোধা প্রমুখ দাদা সুন্দর আধ্যাত্মিক প্রবচন দিয়ে আনন্দমার্গীদের সাধনা ও সেবাকার্যে বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করেন৷
এখান থেকে পুরোধা প্রমুখ আচার্য কিংশুক রঞ্জন জী ও আনন্দমার্গের অন্যান্য কর্মকর্তাগণআরারিয়াতে এসে পৌঁছান৷ এখানে সন্ধ্যায় ধর্মচক্রের পর সমবেত আনন্দমার্গীদের ভি.ডি.ও-র মাধ্যমে বাবার’ প্রবচন ও বরাভয় দেখানো হয়৷ পরদিন পুরোধা প্রমুখ দাদা আনন্দমার্গীদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় বসেন৷ এই আলোচনা সভায় আনন্দমার্গীরা তাদের মনের বিভিন্ন প্রশ্ণ খোলা মনে পুরোধা প্রমুখ দাদার কাছে রাখেন ও পুরোধা প্রমুখ দাদাও সহজ সরলভাবে সেইসব প্রশ্ণের উত্তর দিয়ে সকলকে সন্তুষ্ট করেন৷ এই প্রশ্ণোত্তর পর্বের অনুষ্ঠান প্রায় আড়াই ঘন্টা ব্যাপী চলে এতে সমস্ত আনন্দমার্গীরা দারুণভাবে উদ্বুদ্ধ হন ও পূর্ণোদ্যমে আনন্দমার্গের সাধনা ও জনসেবার আদর্শ রূপায়ণে সংকল্পবদ্ধ হন৷
আরারিয়ার পর পূর্ণিয়ায় ও কাটিহার হয়ে পুরোধা প্রমুখ দাদা মার্গের অন্যান্য কেন্দ্রীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে কলকাতা রবানা দেন৷
এখানে উল্লেখযোগ্য, শ্রদ্ধেয় পুরোধা প্রমূখ আচার্য কিংশুকরঞ্জন জী ও তাঁর টীম উল্লেখিত ধর্মসম্মেলনগুলিতে যোগদান করা ছাড়াও পথিমধ্যে আনন্দমার্গের বহু ইয়ূনিট পরিদর্শন করেন ও সেখানকার আনন্দমার্গীদের উদ্বুদ্ধ করেন৷ বিভিন্ন স্থানে আনন্দমার্গের স্কুল ও হোম খোলার কর্মসূচীও গ্রহণ করা হয়৷