আনন্দনগরে আনন্দমার্গের ধর্মমহাসম্মেলন ‘‘সাধককে নব্যমানবতাবাদী হতে হবে

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ২৪,২৫,২৬ শে জুন আনন্দনগরে আনন্দমার্গের ধর্মমহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হল৷ আনন্দমার্গের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর  ৯৮তম জন্মবার্ষিকী উৎসব পালন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এই ধর্মসম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গ ঝাড়খণ্ড, বিহার, অসম, ত্রিপুরা ও ওড়িশা রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে, তাছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ও বহির্ভারতেরও বিভিন্ন দেশ থেকে আনন্দমার্গীরা যোগদান করেছিলেন৷

এই ধর্মমহাসম্মেলনে মার্গগুরু প্রতিনিধিরূপে আনন্দমার্গের  পুরোধা  প্রমুখ আচার্য কিংশুকরঞ্জন সরকার এই ৩ দিনব্যাপী ধর্মমহাসম্মেলনে আধ্যাত্মিক প্রবচন দেন৷ বর্তমান যুগের দিশাহারা মানব সমাজের  জন্যে মহাসম্ভূতি শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী আনন্দমার্গের দর্শন, সাধনা ও জীবনচর্র্যর  মাধ্যমে  মানবজীবনের  সার্থকতা অর্জনের  যে পথ দেখিয়ে গেছেন, তা-ই সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায়  তিনি ভক্ত মন্ডলীর কাছে পরিবেশন করেন৷ বহুক্ষেত্রে মার্গগুরুদেব  প্রদত্ত আধ্যাত্মিক দর্শনকে আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকেও তিনি ব্যাখ্যা করে তার সত্যতা প্রতিপন্ন করেন৷

তিনি প্রথমেই সহজ সরলভাবে মার্গের আদর্শকে তুলে ধরে বলেন, পরমপুরুষ অর্র্থৎ  পরমব্রহ্ম থেকেই সবাই এসেছে, সবাইকে  তাঁতেই ফিরে যেতে হবে৷ আর এই ফিরে  যাওয়ার নামই সাধনা৷ সাধনাতে প্রথমে মনকে বাইরের জগৎ থেকে প্রত্যাহার করে অন্তর্মুখী করতে হয়৷ এটাই ভূতশুদ্ধি৷ এইভাবে বর্হিজগৎ থেকে মনকে প্রত্যাহার করলে বস্তুজগতের বন্ধন থেকে সাধক মুক্ত হয়ে ওঠে৷ তখনই তার মনে যথার্থ সেবার ভাবনা আসে৷ সাধনার পথে আরও  এগুলে মনের মধ্যে ভেদভাবনা থাকে না৷ এটাই নব্যমানবতাবাদের পথ৷ তাই সাধককে নব্যমানবতবাদী হতে হবে৷ নব্যমানবতাবাদ মানে  হ’ল সমস্ত মানুষ, পশুপক্ষী, তরুলতা সবাইকে  ভালোবাসবে৷ প্রকৃত সাধক সমস্ত  ভেদ-বিভেদের ঊধের্ব উঠবে, বিশ্বপ্রেমী হবে৷

এইভাবে  সহজ সরলভাবে শ্রদ্ধেয় পুরোধা প্রমুখ দাদা আধ্যাত্মিক সাধকের  কর্তব্য ও জীবনধারণের ওপর আলোকপাত  করেন৷ (আধুনিক বিজ্ঞানের  সঙ্গে আধ্যাত্মিক দর্শনের  তুলনামূলক আলোচনা করতে গিয়ে তিনি  যা বলেন তার সংক্ষিপ্তসার আগামী সংখ্যায় প্রকাশ করার ইচ্ছা রইল৷  ধর্মমহাসম্মেলনে মার্গের বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা মিলিত হয়ে আগামী ৬মাসের  জন্যে কী কী  কর্মসূচী নেওয়া হবে--- সেসব সম্পর্কেও  বিস্তারিত আলোচনা হয়৷

ধর্মমহাসম্মেলনে আধ্যাত্মিক প্রবচন ও বিভাগীয় মিটিং ছাড়া তিন দিন মার্গের সাংস্কৃতিক প্রকোষ্ঠ ‘রাওয়া’ কর্তৃক মনোজ্ঞ সাংসৃকতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়৷ এছাড়া হরিপরিমণ্ডল গোষ্ঠীর উদ্যোগে ২৩শে মে বিকেল ৩টে থেকে ২৬শে মে বিকেল ৩টে পর্যন্ত অখণ্ড কীর্ত্তনও অনুষ্ঠিত হয়৷

 (আগামী সংখ্যায় বিস্তারিত খবর)