আর একটা নবজাগরণের ঢেউ আসছে - প্রাউটের পথেই আসবে প্রকৃত পরিবর্তন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

বিশিষ্ট প্রাউট তাত্ত্বিক শ্রী প্রভাত খাঁ বলেন বর্তমান সমাজ সার্বিক সংকটে দিশাহীন হয়ে পড়েছে৷ নেতৃত্বের সংকট,অর্থনীতির দেউলিয়া অবস্থা, শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য সংসৃকতির ক্ষেত্রে অশ্লীলতার স্রোত মানুষকে বিপথে ঠেলে দিচ্ছে৷ অপরাধের পথে যেতে বাধ্য করছে৷ পুঁজিবাদী শোষণের চরম অবস্থায় পৌঁচেছে দেশ৷ ভয়ঙ্কর করোনা সংক্রমণের মধ্যেও নির্বাচনী প্রচার চলছে অবাধে৷ আকন্ঠ দুর্নীতিতে ডুবে থাকা প্রতিটি দলের নেতারা পরস্পরের প্রতি অশালীন ভাষায় সমালোচনা ছাড়া যুব সমাজকে সৎপথে চলার প্রেরণা দেওয়ার কোন বার্র্ত নেই৷ বরং নেতা মন্ত্রীদের কথায় বিপরীত পথে চলার উস্কানি আছে৷ এই পরিস্থিতিতে আসল নকল কোন পরিবর্তনই মানুষের কল্যাণ করতে পারবে না৷

শ্রী খাঁ বলেন সততা ও নৈতিকতায় দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্ব ব্যতিরেক মানুষের কাঙ্খিত পরিবর্তন সম্ভব নয়৷ প্রাউট প্রবক্তা পরম শ্রদ্ধেয় শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার আধ্যাত্মিক নৈতিকতার আদর্শে সুপ্রতিষ্ঠিত নেতৃত্বের কথা বলেছেন৷ প্রাউটের ভাষায় এঁদের বলা হয় সদ্‌বিপ্র নেতৃত্ব৷ মানুষের সার্বিক কল্যাণের জন্যে পরিবর্তন আনতে হলে সদ্‌বিপ্র নেতৃত্বের হাতে সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব তুলে দিতে হবে৷

প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্র্সলের কেন্দ্রীয় কমিটির সংঘটন সচিব আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত বলেন শুধুমাত্র ক্ষমতার হাত বদল হলেই যে পরিবর্তন হবে তা নয়৷ পুঁজিবাদী সামাজিক অর্থনৈতিক কাঠামোয় রাজনৈতিক দলগুলো ধনকুবেরদের হাতের পুতুল মাত্র৷ তাই ক্ষমতার হাত বদল হলেও সামাজিক অর্থনৈতিক  কাঠামোর কোন পরিবর্তন হয় না৷ আর তা যদি না হয় তবে মানুষের কল্যাণ সম্ভব নয়৷ পরিবর্তন চাই পুঁজিবাদ নির্ভর সামাজিক অর্থনৈতিক কাঠামোর৷ পরিবর্তন চাই রাজনৈতিক দলগুলির দৃষ্টিভঙ্গির৷ শুধুমাত্র ক্ষমতার হাত বদলে যা কিছুতেই সম্ভব নয়৷

আচার্য প্রসূনানন্দ বলেন বর্তমান সামাজিক অর্থনৈতিক সংরচনার আমূল পরিবর্তন আনতে হবে৷ কেন্দ্রীত অর্থনৈতিক পরিকাঠামো ভেঙে চুরমার করে প্রাউটের আদর্শে বিকেন্দ্রীত অর্থনৈতিক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে৷ অর্থনৈতিক পরিকল্পনার সূচনা হবে ব্লক থেকে৷ স্থানীয় মানুষের হাতে থাকবে আর্থিক শক্তি৷ প্রতিটি ব্লকের ভৌগোলিক অবস্থান ও কৃষি অকৃষি সম্পদের ওপর নির্ভর করে ব্লকভিত্তিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গড়ে তুলতে হবে৷ যেখানে কৃষিভিত্তিক, কৃষিসহায়ক ও অকৃষি শিল্প গড়ে মানুষের  কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করে প্রতিটি মানুষের হাতে ক্রয় ক্ষমতা তুলে দিতে হবে৷ অর্থাৎ প্রতিটি মানুষের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের নিশ্চিততা দিতে হবে৷ তবে প্রাউটের উন্নয়ন এখানেই থেমে থাকবে না৷ সামাজিক-অর্থনৈতিক মানের ক্রমবৃদ্ধি ঘটিয়ে মানুষের জীবন ধারণের মানের উন্নয়ন করে যেতে হবে৷ মানুষ যাতে জীবনে পরমলক্ষ্যের পানে চলার সুযোগ পায়৷

আচার্য প্রসুনানন্দ অবধূতের কথায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে পুঁজিবাদ ও মার্কসবাদের পক্ষে মানুষের সার্বিক কল্যাণ করা সম্ভ নয়৷ একমাত্র প্রাউটের পথে সদবিপ্রের নেতৃত্ব ও বিকেন্দ্রীত অর্থনৈতিক  পরিকল্পনাই প্রকৃত পরিবর্তনই আনবে৷ প্রাউটিষ্টরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করে চলেছে৷ অচিরেই মানুষের সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক চেতনার আমূল পরিবর্তন আসবে৷ সমাজের বুকে আর একটা নবজাগরণের ঢেউ আছড়ে পড়বে৷ আর সেটা ঘটবে প্রাউটের আদর্শকে ভিত্তি করে সদবিপ্রের নেতৃত্বে৷