কোভিড ১৯ সংক্রমনের বহু আগে থেকে অর্থনীতিবিদরা ও বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার সমীক্ষা ইজ্ঞিত দিচ্ছিল ভারতে আর্থিক মন্দা ঘনিয়ে আসছে৷ মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ধনকুবেরদের ঋণ মুকুব, নোট বন্দী, জি.এস.টির মতো হঠকারি সিদ্ধান্ত ও অপরিকল্পিত অর্থনীতি আর্থিক মন্দা ডেকে আনছে৷ সরকারের সামনে ঘুরে দাঁড়ানোর কোন পথ ছিল না৷ কারণ সরকারের ইচ্ছায় সরকার চলছে না - এমনটাই মনে করে বিরোধী দলের নেতারা৷ গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো করোনা সংক্রমণ ও লকডাউন আর্থিক মন্দার গতি ত্বরান্বিত করলেও সরকারও ব্যর্থতার দায় করোনার ঘাড়ে চাপিয়ে মুখ লুকোবার জায়গা পায়৷
এই বিপর্যয়ের মাঝে আনলক---২ পর্ব শুরু হওয়ার পূর্বে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন৷ দেশবাসীর আশা ছিল সাম্প্রতিক লাদাখ সীমান্তে চীনা আগ্রাসন ও অন্ধকারে নিমজ্জিত অর্থনীতিকে পথ দেখাতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে কিছু শুনবেন৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রিত্বকালের সংক্ষিপ্ততম ভাষণে গুরুত্বপূর্ণ এই দুটি বিষয় নিয়ে মুখই খুললেন না৷ লাদাখ সীমান্তে চীনা হামলায় ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত চীনের নাম নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কোন কথা বলেন নি৷ বর্তমান আর্থিক বিপর্যয় সরকারেরই আত্মঘাতী পরিকল্পনার ফল৷ তাই এ বিষয়ে নীরব থাকাই শ্রেয় মনে করেন প্রধানমন্ত্রী৷
‘আমরা বাঙালী’ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রী জয়ন্ত দাশ বলেন--- অর্থনীতি নিয়ে বলার মুখ নেই, প্রধানমন্ত্রীর মুখ খুলবেন কি করে তাই অর্থনীতির বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন৷ ওনার মুখের কথার সঙ্গে কাজের কোন মিল নেই, মুখে উনি আত্মনির্ভর ভারতের কথা বলেন আর কয়লার মত লাভজনক রাষ্ট্রীয় সংস্থাকে বেসরকারী হাতে তুলে দিচ্ছেন, এমনকি বিদেশী বণিকদের জন্যেও দ্বার খুলে দিচ্ছেন এটাই ওনার আত্মনির্ভরতা।
প্রাউটিষ্ট ইউনিবার্সালের কেন্দ্রীয় সাংঘটনিক সচিব আচার্য প্রসুনানন্দ অবধূত বলেন--- পুঁজিবাদ নির্ভর অর্থনীতির বিপর্যয় ঘনিয়ে আসছে৷ আজ শিল্প, সাহিত্য, সংসৃকতি, অর্থনীতি, রাজনীতি,ধর্মনীতি সমাজের সর্বস্তরে যে চরম নৈরাজ্য ও অবক্ষয় দেখা দিয়েছে তার মূলেই পুঁজিবাদী শোষণ৷ সেই পুঁজিবাদের পক্ষে অর্থনীতিকে নতুন দিশা দেখানো সম্ভব নয়৷ বর্তমান পুঁজিপতিদের আশ্রিত শাসক শ্রেণীর মুখেও বস্তাপচা তত্ত্ব কথার কচকচানি ছাড়া কিছুই শোণা যায় না৷
আচার্য প্রসূনানন্দ বলেন বর্তমান দিশাহীন অন্ধকারে নিমজ্জিত অর্থনীতিকে আলোর পথ দেখাতে পারে প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব--- প্রাউট৷ তিনি বলেন আত্মনির্ভর ভারত গড়তে হলে প্রয়োজন একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ, প্রয়োগ ভৌমিক বিজ্ঞানসম্মত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা, যার সুস্পষ্ট পথ নির্দেশনা প্রাউটেই আছে৷ যাঁরা যথার্থই সমাজের সার্বিক কল্যাণের স্বার্থে কাজ করতে চান, সেই সব অর্থনীতিবিদ ও শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের অবিলম্বে প্রাউটের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও নীতি সমূহ সম্পর্কে অবগত হওয়া উচিত৷ বর্তমান অন্ধকারে নিমজ্জিত অর্থনীতিকে আলোর পথে নিয়ে যাওয়া একমাত্র প্রাউটের পক্ষেই সম্ভব৷ শুধু আত্মনির্ভর ভারত নয় বিশ্বের ২৫০টির বেশী জনগোষ্ঠীকে নিয়ে প্রাউটের পরিকল্পনায় গঠিত হবে শোষণমুক্ত বিশ্ব৷