স্বচ্ছ ভারত গড়ার ডাক দিয়েছিলেন মোদির ভারত৷ নিজে ঝাড়ু হাতে পথে নেমেছিলেন৷ এতো পরিবেশের কথা৷ নরেন মোদি ক্ষমতায় এসে জোর গলায় বলেছিলেন--- না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা৷ কিন্তু আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার আই এম এফ-এ প্রকাশিত একটি আর্থিক প্রতিবেদনে মোদির ভারত ইউপিএ জামানার তুলনায় ২০২৩ অর্থবর্ষে ৪০ ধাপ নীচে নেমে গেছে৷ আই এম এফ আর্থিক স্বচ্ছতার নিরিখে বিশ্বের ১২৫ দেশকে নিয়ে যে তালিকা প্রকাশ করা হয় তাতে ভারতের স্থান ৫৪ নম্বরে৷ ২০১২ সালে ভারতের স্থান ছিল ১৪ নম্বরে৷
নাগরিকদের করের টাকায় কেন্দ্রের আর্থিক ভাণ্ডার অর্থাৎ রাজকোষ ভরে৷ এই টাকার আয়ব্যয়ের হিসাব জানার অধিকারও আছে নাগরিকদের৷ কিন্তু এই হিসাবে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ণ উঠছে৷
রাজ্যগুলিতে করের টাকা কিভাবে বন্টন হবে তা নিয়ে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অর্থ কমিশন ঘটন করে কেন্দ্র৷ ১৬তম অর্থ কমিশন ইতিমধ্যে ঘটন করা হয়েছে৷ কমিশন কাজও শুরু করেছে৷ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের অধীনে থাকা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্স অ্যাণ্ড পলিসি একটি প্রতিবেদন পেশ করেছে৷ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আর্থিক নীতি নির্ধারণের বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যে তথ্য প্রকাশ করা হয় তাই-ই আর্থিক স্বচ্ছতা৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্কেরও অভিমত দেশের অগ্রগতিতে আর্থিক স্বচ্ছতা গুরুত্বপূর্ণ৷
কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ অর্থমন্ত্রকের সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সরকারের নিজেদের ভেতর যে আর্থিক আদান প্রদান হয়, স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে তা খুবই উদ্বেগের৷ যে কৌশলে বা সূত্রের নিরিখে বিভিন্ন মন্ত্রক ও রাজ্যগুলিকে কর বা রাজস্ব প্রদান করা হয় সেখানেও স্বচ্ছতা নেই, অস্বচ্ছতায় ভরা৷ এছাড়া সরকারের কিছু গোপন ঋণ থাকে যা প্রকাশ্যে আসে না৷ এই পরিস্থিতিতে ১৬তম অর্থ কমিশনের প্রস্তাব একটি পোর্র্টল তৈরী করে সব তথ্য আপলোড করা হোক৷
এই সব তথ্যের ভিত্তিতেই আই.এম.এফ প্রতি দু’বছর অন্তর তালিকা প্রস্তুত করে প্রকাশ করে৷ ২০২১ সালে অবশ্য ভারতের স্থান ছিল ৭৮ নম্বরে৷ আই এম এফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আর্থিক অসঙ্গতিতে শুধু ক্যাগের ওপর নির্ভর করলে চলবে না, প্রয়োজন একটি স্বশাসিত সংস্থা যা স্বাধীনভাবে আর্থিক অবস্থার পর্যালোচনা করতে পারবে৷