আর্থিক শোষণ প্রতিহত করতে সর্বক্ষেত্রে চাই আর্থিক বিকেন্দ্রীকরণ

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

সর্বক্ষেত্রে আর্থিক বিকেন্দ্রীকরণের নীতি রূপায়িত করতে হবে৷ প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের কেন্দ্রীয় সংঘটন সচিব আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত বর্তমান আর্থিক দুরাবস্থা প্রসঙ্গে এক আলোচনায় বলেন--- করোনার মত রোগ, প্রাকৃতিক দুর্র্যেগ, যুদ্ধ এসব থাকবেই৷ কিন্তু এইসবকে অজুহাত করে সাধারণ মানুষের জীবন ধারণের  নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি পুঁজিবাদী শোষকদের কৌশলমাত্র৷ দেশের সর্বস্তরে আর্থিক নীতি প্রণয়নে পুঁজিবাদীরাই মুখ্য ভূমিকা নিয়ে থাকে৷ রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রীরা নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রতিশ্রুতির ঝড় বইয়ে দেন, পরে সব প্রতিশ্রুতিই নিষ্ঠুর ভাঁওতাবাজীতে পরিণত হয়৷ নেতাদের প্রতি বিশ্বাস হারানো জনগণকে দলে রাখতে সামান্য কিছু দিয়ে দেয়৷ অপর দিকে মারণ বাইরাসের হামলাই হোক, আর যুদ্ধবাজ রাষ্ট্রের হামলাই হোক পুঁজিপতিদের সম্পদ বাড়তেই থাকে৷ আচার্য প্রসূনানন্দ বলেন কেন্দ্রীত অর্থনীতি আসলে পুঁজিপতিদের অধিকতর মুনাফা লোটার কৌশল মাত্র৷ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও দেশের  জনগণ আর্থিক শোষণ থেকে মুক্তি পেল না৷ কারণ দেশের সমস্ত আর্থিক নীতি প্রণয়ন করে থাকে মুষ্টিমেয় পুঁজিপতিগোষ্ঠী৷ আচার্য প্রসূনানন্দের ভাষায়--- সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক বিষয়টি হওয়া উচিত জনসাধারণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করা, সাধারণ মানুষের ক্রমবর্ধমান ক্রয় ক্ষমতার  নিশ্চিততা দেওয়া৷ কিন্তু সরকারের নজর সেদিকে নেই৷  বর্তমান কেন্দ্রীত অর্থনৈতিক পরিকাঠামোয় আর্থিক শোষণ থেকে মুক্তির কোন সম্ভাবনাই নেই৷ আর্থিক শোষণ প্রতিহত করার একমাত্র উপায় হ’ল প্রাউটের  পথে আর্থিক ব্যবস্থার সর্বক্ষেত্রে বিকেন্দ্রি ত নীতি রূপায়িত করা৷ বিকেন্দ্রিত অর্থব্যবস্থায় জনসাধারণের যেমন আর্থিক বিকাশ হবে, আবার মানস-আধ্যাত্মিক প্রগতির পথ ও প্রশস্ত হবে৷ আজকের মানুষের শ্লোগান হোক---‘‘শোষণের অবসানে কেন্দ্রিত অর্থনীতি নিপাত যাক,প্রাউটের পথে বিকেন্দ্রিত অর্থব্যবস্থা চালু করতে হবে৷

প্রাউটের বিকেন্দ্রিত আর্থিক ব্যবস্থার প্রথম লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক সমস্যা, সম্ভাবনা দেখে ভৌগোলিক অবস্থান ও ভাষা-কৃষ্টি, সংসৃকতি ও নৃতাত্ত্বিক পরিচয় অনুযায়ী এক একটি জনগোষ্ঠীর জন্যে এক একটি সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে ওই অঞ্চলের প্রতিটি মানুষের ন্যূনতম প্রয়োজন পূর্তির ব্যবস্থা করা৷ এক্ষেত্রে সমস্ত সম্পদের নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক নীতিনির্ধারণের দায়িত্ব থাকবে স্থানীয় মানুষের হাতে৷ স্থানীয়  মানুষ তাদেরই বলা হবে যারা নিজেদের  সামাজিক আর্থিক স্বার্থকে সেই অঞ্চলের সামাজিক আর্থিক স্বার্থকে, সেই অঞ্চলের  সামাজিক অর্থনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে একাত্ম করে নিয়েছে৷ এছাড়া বিকেন্দ্রিত অর্থনীতির দ্বিতীয় নীতি হবে-উৎপাদনের ভিত্তি হবে উপভোগ, মুনাফা নয়৷ উৎপাদন ও বন্টনের কাজ সমবায়ের  মাধ্যমে করতে হবে৷ সমস্ত প্রকার  অর্থনৈতিক  কার্যকলাপে স্থানীয় মানুষ নিযুক্ত করতে হবে ও অর্থনৈতিক অঞ্চলের  বাইরে উৎপাদিত ভোগ্যদ্রব্য বিক্রয় করা চলবে না৷ পরিশেষে আচার্য প্রসূনানন্দ বলেন---বিশ্বের নীতিবাদী মানুষ যত দ্রুত প্রাউটকে জানবেন ও বুঝবেন ততই মানুষের কল্যাণ ত্বরান্বিত হবে৷