অসার দাবী অমানবিক আন্দোলন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

অসার দাবীর ভিত্তিতে অমানবিক  আন্দোলনের বলি হলো এক অসহায় অবুঝ বালক৷ মালদহের মোথাপাড়ার জোত অনন্তপুর গ্রামের বাড়ীর ছাদ থেকে পড়ে জখম হয় ৭ বছরের বালক সাকিবুল৷ তার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল৷ তাকে এ্যাম্বুলেন্সে করে চিকিৎসার জন্যে কলিকাতায় আনা হচ্ছিল৷ সেই সময় কৃষ্ণনগরে পথ  অবরোধ করেছিল কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষ৷ তাদের প্রথা ছিল জগদ্বাত্রীর বিসর্জন সাঙে (বাঁশের মাচায়) করে বেহারাদের কাঁধে নিয়ে যেতে হবে৷ করোনাকালে উচ্চ আদালত তা নিষিদ্ধ করে দেয়৷ কিন্তু মাতাল ভক্তরা তা মানবে কেন? মা-কে যে প্রথা মেনেই বিসর্জন দিতে হবে৷ সেই অসার দাবীতে পথ অবরোধ করে ওই ভক্তরা৷ ওই অবরোধেই আটকে পড়ে সাকিবুলের এ্যাম্বুলেন্স৷ দীর্ঘ দুইঘন্টা আটকে থেকে বিনা চিকিৎসায় এ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায় অবোধ বালক৷ মৃত্তিকা মায়ের বিসর্জনের আগেই রক্ত-মাংসের মা-কে কাঁদিয়ে অকালে বিসর্জন হয়ে গেল যে অবোধ বালকের তার দায় কে নেবে? অবশ্যই অবরোধকারীরা৷ কিন্তু প্রশাসন, কি জবাব দেবে! কিভাবে একটি অসার দাবী  নিয়ে উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে এইভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা অবরোধ চলতে পারে জাতীয় সড়কের ওপর৷ পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসন কি এতটাই পঙ্গু হয়ে পড়েছে! খবরে প্রকাশ পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে৷ তাদের একজন আবার এক পুলিস কর্তার ছেলে৷  শুধু পাঁচজন  গ্রেপ্তারই নয় এই অমানবিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকেরই কঠোর সাজা হওয়া দরকার৷ ঘটনার সময় ওই এলাকায় দায়িত্বে থাকা পুলিশের কর্তা ব্যক্তিরাও নিজেদের দায়িত্ব  পালন করেননি৷ তাদের কাছে উচ্চ আদালতের রায় ছিল৷ তা সত্ত্বেও একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়কে একদল দায়িত্ব জ্ঞানহীন পথ অবরোধ করে বসে থাকল, আর একটি অসহায় মায়ের চোখের সামনে তার শিশু মারা গেল বিনা চিকিৎসায়৷ সমাজ এই মানবিকতা আর কতদিন সহ্য করবে?